৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


হতাশায় শেয়ার বিক্রি করছেন বিনিয়োগকারীরা

-

- বিনিয়োগ প্রত্যাহারের ঘোষণা ব্র্যাক ব্যাংকের এমডির
- ১৯টি খাতের মধ্যে দর হারিয়ে লোকসানে ১৩টি খাত
- ৫ কোম্পানির কারণে ডিএসইতে সূচক বেড়েছে ৮ পয়েন্ট

হতাশা এবং পতনের কবল থেকে বের হতে পারছে না দেশের পুঁজিবাজার। ফলে বিনিয়োগকারীদের একটি বৃহৎ অংশ মানসিক চাপে ভুগছেন। আতঙ্ক ও হতাশায় শেয়ার বিক্রি বা ছেড়ে দিয়ে মার্কেট থেকে বের হয়ে আসতে চাইছেন তারা। যার কারণে বিক্রেতা ও বিক্রির চাপ গত দুই দিন ধরে আধিপত্য বিস্তার করছে। এ বি এবং জেড তিন শ্রেণীর শেয়ার ছিল বিক্রির চাপে। ক্রেতার আগ্রহে ছিল এন শ্রেণীর শেয়ার। বাজার মূলধন কমলেও টাকায় এবং শেয়ার বিক্রি বেড়েছে আগের দিনের তুলনায়। এ দিকে ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম রেজা ফরহাদ হুসাইন ব্যাংকটি থেকে তার বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন।
দুটো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, বিক্রেতা ও ক্রেতার আধিপত্য চলছে বাজারে। ১৯টি খাতের মধ্যে দর হারিয়ে লোকসানে রয়েছে ১৩টি খাত। আর তিনটি খাত দর বৃদ্ধিতে গতকাল লাভবান হয়েছে। আর সূচককে টেনে তুলতে চেষ্টা করেছে পাঁচ কোম্পানির শেয়ার। পূবালী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, বেক্সিমকো ফার্মা, অলিম্পিক এক্সেসরিজ এবং প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের শেয়ার দর বৃদ্ধির কারণে গতকাল ডিএসইর সূচক বেড়েছে ৮ পয়েন্টের বেশি। অর্থাৎ কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর বাড়াতে ডিএসইর সূচকে যোগ হয়েছে ৮ পয়েন্টের বেশি।
দিনের লেনদেনের তথ্য থেকে পর্যালোচনায় দেখা যায়, ঢাকা স্টকে প্রথম এক ঘণ্টায় চার কোটি ৮৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬১০টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে ১৫০ কোটি ৪৮ লাখ টাকার বেশি দরে। লেনদেনের সূচনাটা ভালোই ছিল। কিন্তু ৩২ মিনিটের মাথায় সকাল ১০টা ৩২ মিনিটে সবগুলো সূচকই দিনের সর্বনিম্নে নেমে আসে। পরে অবশ্য কিছুটা পয়েন্ট সূচকে ফিরে আসে। দিনশেষে ডিএসইর ডিএসইএক্স সূচক আরো ৪.১৮ পয়েন্ট হারিয়ে এখন পাঁচ হাজার ৭৭৪ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ১.৯৫ পয়েন্ট হারিয়ে এক হাজার ২৬৪ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২.১৮ পয়েন্ট হারিয়ে এখন দুই হাজার ১২ পয়েন্টে রয়েছে।

এ দিন লেনদেন হওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে বেড়েছে ১৭৩টির, কমেছে ১৬৯ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৫ টির। তবে এখানে এ শ্রেণীর ৯৭টি কোম্পানির দর বৃদ্ধিতে এবং ১০৭টি দর পতনে ছিল। ডিএসইতে গতকাল ১৬ কোটি ৩৬ লাখ ৪৫ হাজার ৭০৫টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড মোট ৫৪০ কোটি ২৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকায় হাতবদল হয়েছে, যা রোববার থেকে ১৭২ কোটি ৭০ লাখ টাকা বেশি। রোববার লেনদেন হয়েছিল ৩৬৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট।
আর ডিএসইর ব্লক মার্কেটে ৩৩টি কোম্পানি গতকাল লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির মোট এক কোটি আট লাখ ৭২ হাজার ৩৫টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড মোট ৩৪ কোটি ৪৪ লাখ ১৭ হাজার টাকায় হাতবদল হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ইস্টার্ন ব্যাংকের ৮৬ লাখ ৬৭ হাজার ১৬০টি শেয়ার ২৩ কোটি ৪০ লাখ ১৩ হাজার টাকা বাজারমূল্যে। এ ছাড়া আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ১ কোটি ৪৮ লাখ ৯৩ হাজার টাকার, লাভেলো আইসক্রিমের ১ কোটি ১৬ লাখ ৭ হাজার টাকার এবং কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৮৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। পাশাপাশি সী পার্ল রিসোর্টের ৮৫ লাখ ১৪ হাজার টাকার, ওরিয়ন ইনফিউশনের ৮১ লাখ ৬৪ হাজার টাকার, ইস্টার্ন হাউজিংয়ের ৬৬ লাখ ৩৫ হাজার টাকার, বেস্ট হোল্ডিংসের ৬৬ লাখ ১১ হাজার টাকার, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের ৫১ লাখ ৯৯ হাজার টাকার এবং কাশেম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৪৬ লাখ ৫৩ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
অন্য দিকে গতকাল চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫.৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৫৩৮ পয়েন্টে। আর সিএসসিএক্স সূচক ০.০১ পয়েন্ট কমেছে। তবে সিএসই-৩০ সূচকে গতকাল নতুন করে ৯.৫৯ পয়েন্ট যোগ হয়েছে। সিএসইতে ২০১টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এদের মধ্যে ৮৪টির দর বেড়েছে, কমেছে ৯০টির এবং ২৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৩৩ লাখ ৩২ হাজার ৪০টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে ৯ কোটি ৮৮ লাখ ৯৬ হাজার ২৯৪ টাকায়।
৪.৮৫ লাখ শেয়ার বিক্রি : ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি সেলিম রেজা ফরহাদ হুসাইন জানিয়েছেন, ব্যাংকটিতে তার শেয়ার ছিল চার লাখ ৯৫ হাজার ২৩টি। সেখান থেকে তিনি চার লাখ ৮৫ হাজার ২৩ শেয়ার বিক্রি করে দেবেন। যার ফলে ব্যাংকটিতে তার শেয়ার থাকবে মাত্র ৯ হাজার। তবে মন্দা বাজারে কেন তিনি ব্যাংকটি থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন তা উল্লেখ করেননি। ২০০৭ সালে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত হওয়া ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসির মোট শেয়ারের ৪৬ দশমিক ২৪ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে রয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকটি শেয়ারবাজারে ‘এ’ ক্যাটাগরি থেকে লেনদেন করছে।


আরো সংবাদ



premium cement