৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা

পণ্যের দামে প্রভাব পড়বে না : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

-

মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরাইলের মধ্যকার চলমান উত্তেজনায় দেশের অভ্যন্তরীণ পণ্যের দামে প্রভাব পড়বে না- বলে মনে করেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। তিনি বলেছেন, দেশে আমদানিনির্ভর পণ্যের দাম যাতে না বাড়ে, সে জন্য বিকল্প দেশ থেকে পণ্য আমদানি ও সরবরাহব্যবস্থা ঠিক রাখার চেষ্টা চলছে।
গতকাল (মঙ্গলবার) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) কার্যালয়ে আয়োজিত মিট দ্য প্রেসে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন, হামাস-ইসরাইল বা ইরান ও ইসরাইল হামলা, এসব আন্তর্জাতিক। তবুও মধ্যপ্রাচ্য গুরুত্বপূর্ণ, সেখান থেকে জ্বালানি তেলসহ অন্যান্য পণ্য আসে। যুদ্ধ বা হামলার কারণে জ্বালানির দাম বেড়ে যায়। এতে পরিবহন খরচ বাড়ে, যার প্রভাব পড়ে নানা পণ্যে। আমদানি-রফতানিতে সঙ্কট তৈরি হয়। তবে ইসরাইলে ইরানের হামলা হঠাৎ করে, ইসরাইল আবার ইরানে পাল্টা হামলা চালাবে কি না জানি না। তবুও সব বিষয় মাথায় রাখা হচ্ছে। এসব কারণে যাতে পণ্যের দাম না বাড়ে, সে জন্য আমরা বিকল্পভাবে পণ্য আনার চেষ্টা করছি।
টিসিবির (ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ) পণ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এক কোটি মানুষকে টিসিবির মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে পণ্য দেয়া হচ্ছে। আরো কী কী পণ্য ন্যায্যমূল্যে দেয়া যায়- সেটি নিয়ে কাজ চলছে। টিসিবির পণ্যকে স্থায়ী দোকানের মধ্যে নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে। টিসিবি কার্ড পাওয়া ব্যক্তিদের অনেকেই মারা গেছেন, আবার নতুন করে অনেকেই যুক্ত হবেন। এ জন্য টিসিবির তালিকা হালনাগাদ করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, টিসিবি সাধারণত একত্রে চার থেকে পাঁচটি পণ্য সরবরাহ করে। কিন্তু অনেকসময় এমন হয়, একটি পণ্য পৌঁছাতে দেরি হলে ডিসিরা বাকি পণ্যগুলো আটকে রাখেন, সবগুলো পণ্য একত্রে দেবেন বলে। কিন্তু যখন ফিক্সড দোকান হবে, তখন যে মাল যখনই দোকানে চলে যাবে, তখনই সেই মাল বিক্রি শুরু হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, তিন কারণে মাঝে মাঝে টিসিবির পণ্য সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে। প্রথমত, বাফার স্টক না থাকায় আমাদের পণ্য কিনেই বিক্রি করতে হচ্ছে। বিভাগীয় পর্যায়েও আমাদের বাফার স্টক নেই। দ্বিতীয়ত, আমাদের সংরক্ষণের জন্য স্টোরেজ নেই এবং ডিলারদেরও ১৫ দিন বা এক মাস পণ্য রাখার মতো নিজস্ব কোনো ব্যবস্থা নেই। এ তিন কারণে টিসিবির পণ্য সরবরাহে সাত বা ১০ দিন আগপিছ হচ্ছে।
ভোজ্যতেলের দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তেলে ৫ শতাংশ ডিউটি কমিয়েছিলাম, এতে ভোক্তাপর্যায়ে ১০ টাকা কমেছিল তেলের দাম। বর্তমানে ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়ে আগের দামে ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমাদের ট্যারিফ কমিশন এটা নিয়ে কাজ করছে। দেখা হচ্ছে মিলাররা কী দামে তেলের কাঁচামাল আনছেন, তার দাম কেমন পড়ছে ইত্যাদি বিষয়ে।
প্রসঙ্গত, রমজানে নিত্যপণ্যের দাম কমাতে গত ৮ ফেব্রুয়ারি ভোজ্যতেলের আমদানি ও স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট হার ৫ শতাংশ কমায় এনবিআর। ভ্যাট ছাড়ের মেয়াদ গত সোমবার (১৫ এপ্রিল) শেষ হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ভ্যাট ছাড়ের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ইতোমধ্যে তেলের দাম আগের অবস্থায় নেয়ার প্রস্তাব করেছেন মিলমালিকরা। তেলের দাম বাড়াতে গত সোমবার বাণিজ্য সচিবকে চিঠি দিয়েছেন তারা।
জানা যায়, মিলমালিকদের চিঠিতে বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেল ১৭৩ টাকা, পাঁচ লিটার ৮৪৫ টাকা এবং খোলা এক লিটার পাম তেলের দাম ১৩২ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। মিলমালিকদের চিঠির বিষয়ে বিষয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমি এখনো পাইনি, যদি পাঠিয়ে থাকেন অফিসে গিয়ে দেখতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement