৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


দরপতনে বিক্রির হিড়িক ক্রেতা নেই পুঁজিবাজারে

-

- ১৯টি খাতের সবগুলোই লোকসানের মুখে
- দর হারিয়েছে ৮৫.০৬ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার

ঈদ উৎসবের ছুটির পর প্রথম দিনেই বিনিয়োগকারীদের চরমভাবে হতাশ করলো দেশের পুঁজিবাজার। লেনদেনের সূচনা থেকেই সূচক পতনে থাকার বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড দর হারিয়েছে। দর পতন দেখে সবাই তাদের হাতে থাকা শেয়ার ছেড়ে দেয়ার দিকে ঝুঁকেছে। বিক্রির চাপ ৯৪ শতাংশ থাকলেও ক্রেতা ছিল মাত্র ৬ শতাংশ। ১৯টি খাতের মধ্যে সবগুলোই লোকসানের মুখে রয়েছে। তারল্য চলে গেছে ০.৭৬ শতাংশ। সূচকের এমন বড় পতনের নেপথ্যে ছিল ১০ কোম্পানির শেয়ার বলে লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স অ্যানালাইসিস পোর্টাল তথ্য সূত্রে জানা গেছে।
লেনদেনের তথ্য থেকে বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, লেনদেন শুরুর বেলা ১১টা পর্যন্ত প্রথম ঘন্টায় ডিএসইতে ১০৪ কোটি ১৩ লাখ টাকায় তিন কোটি ২৫ লাখ ৮১ হাজার ৫৭৯টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে। এরপরই পতনে ধাবিত হয়। পতনের নেপথ্যের কোম্পানিগুলো হলো- বিকন ফার্মা, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, স্কয়ার ফার্মা, ব্র্যাক ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ওরিয়ন ফার্মা, পূবালী ব্যাংক, বেক্সিমকো ফার্মা, আইএফআইসি ব্যাংক এবং লাফার্জাহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড। ডিএসইর সূচকের বড় পতনে শীর্ষ ভূমিকায় ছিল বিকন ফার্মা। এ দিন কোম্পানিটির শেয়ার দর ১০ টাকা ১০ পয়সা। যে কারণে ডিএসইর সূচকের পতন হয়েছে ৬.৫৪ পয়েন্ট। দ্বিতীয় স্থানে ছিল ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো। কোম্পানিটির শেয়ার দর কমেছে ৮ টাকা ৮০ পয়সা। যে কারণে ডিএসইর সূচকের পতন হয়েছে ৫.৮৬ পয়েন্ট।

এমন পরিস্থিতিতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৩৯৫টি কোম্পানির মধ্যে দাম বৃদ্ধিতে ছিল ৩২টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দর পতনে ৩৩৬টি কোম্পানির বা ৮৫.০৬ শতাংশ। আর ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৮৫.৩১ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৭৭৮.৭৬ পয়েন্টে, ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৭.৪৮ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ১৪.৮৯ পয়েন্টে এবং শরিয়াহ সূচক ১৬.২৭ পয়েন্ট কমে এক হাজার ২৬৬.০১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সব ক’টি মূল্যসূচকের বড় পতনের পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণ কমে ৩০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে গেছে। ডিএসইতে ১২ কোটি ৬৭ লাখ পাঁচ হাজার ৬৫০টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড লেনদেন হয়েছে ৩৬৭ কোটি ৫৩ লাখ ২৭ হাজার টাকায়। ঈদের ছুটির আগে লেনদেন হয় ৪৪৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকায়। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৭৬ কোটি ৩১ লাখ টাকা। আর এটি ১৭.১৯ শতাংশ এবং শেয়ার বিক্রি ২.৭৬ শতাংশ।
এ দিকে ডিএসইর ব্লক মার্কেটে ৩৬টি কোম্পানির মোট দুই কোটি ১৯ লাখ ১০ হাজার ৭৮৫টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে মোট ২৫ কোটি ৪৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা বাজারমূল্যে। সবচেয়ে বেশি লেনদেন ন্যাশনাল ব্যাংকের ১৩ কোটি তিন লাখ ৪৭ হাজার টাকা মূল্যের শেয়ার। এ ছাড়া আইসিবি এএমসিএল সোনালী ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের দুই কোটি ৪৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং ই-জেনারেশন লিমিটেডের এক কোটি ৯০ লাখ ৯৩ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে বেস্ট হোল্ডিংসের ৮৯ লাখ ৮১ হাজার টাকার, বিকন ফার্মার ৭৫ লাখ ৬৯ হাজার টাকার, ফাইন ফুডসের ৬৯ লাখ ৮৩ হাজার টাকার, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ৬৫ লাখ ৪৯ হাজার টাকার, ন্যাশনাল পলিমারের ৪৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার, ন্যাশনাল হাউজিংয়ের ৪৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকার এবং কাশেম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৪২ লাখ ৪০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
আর চট্টগ্রাম স্টকে গতকালও সবগুলো সূচকের বড় পতন হয়েছে। সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৮৯.৩৭ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স কমেছে ১১৪.৩০২ পয়েন্ট এবং সিএসই-৩০ কমেছে ১৯২.৮১ পয়েন্ট। লেনদেনে অংশ নেয়া ১৭৯টি কোম্পানির মধ্যে ৩০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ১৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ২২ লাখ ৮৭ হাজার ৯১১টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড লেনদেন হয়েছে ৮ কোটি ৭৮ লাখ ৫৫ হাজার টাকায়।

 


আরো সংবাদ



premium cement