০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


সীমান্ত নদীতে ঘুরছে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো কুমিরটি

সীমান্ত নদীতে ঘুরছে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো কুমিরটি - নয়া দিগন্ত

পিরোজপুর ও বাগেরহাট সীমান্তবর্তী মধুমতি নদীতে ঘুরছে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো সুন্দরবনের সেই কুমিরটি। স্থানীয়দের মধ্যে কুমিরের আক্রমণের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও বনবিভাগ ও কুমিরের গতিবিধি নিয়ে গবেষণার কাজে দায়িত্বপ্রাপ্তরা এ নিয়ে আতঙ্কিত না হতে পরামর্শ দিয়েছেন। কুমিরের আতঙ্কে স্থানীয়রা ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যেগাযোগ মাধ্যমে সতর্কীকরণ পোস্ট দিয়েছেন।

শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সুন্দরবনের স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো কুমিরটিকে স্থানীয়রা পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাঙ্গার সীমান্তবর্তী বাগেরহাটের চিতলমারি উপজেলার শৈলদাহের বাংলাবাজার এলাকার মধুমতি নদীতে ভাসতে দেখেন।

শৈলদাহ ও পাটগাতি এলাকায় ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল চালক মো. জিয়া উল হাসান বলেন, ওই গত বৃহস্পতিবার রাতে তিনি যাত্রী নিয়ে শৈলদাহর দিকে যাওয়ার সময় শৈলদাহ ভাঙা রাস্তার মোড় এলাকা থেকে কুমিরটিকে রাস্তা অতিক্রম করতে দেখেন। কুমিরটি দেখে তিনি প্রথমে আতঙ্কিত হলেও পরে পিঠে ট্রান্সমিটার বসানো দেখেছেন।

এমডি রাফসানুল ইসলাম নামে একজন তার ব্যবহৃত ফেসবুকে এ-সংক্রান্ত একটি সতর্কীকরণ পোস্ট দিয়ে স্থানীয় নদী বা খালের পানিতে না নামার অনুরোধ করেছেন। এমন সতর্কীকরণ পোস্ট দিয়েছেন আরো অনেকে।

এ বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ ন্যাচার (আইইউসিএন)-এর কর্মকর্তা মো. সরোয়ার হোসেন জানান, কুমিরটি নিয়ে আতঙ্কিত হবার কিছুই নেই। এটি মাত্র আড়াই থেকে পৌনে ৩ ফুট দৈর্ঘের একটি বাচ্চা কুমির। এর বয়স আড়াই বছর। কুমিরটির গতিবিধি লক্ষ্য করতে এর পিঠে স্যালেটাইট বসানো হয়েছে। এটি নিয়ে গবেষণা চলছে।

জানা গেছে, লোনা পানির কুমিরের আচরণ ও গতিবিধি গবেষণার জন্য সম্প্রতি সুন্দরবনের চারটি কুমিরের শরীরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে অবমুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি কুমির সুন্দরবন ও লবণাক্ত পানিতে ঘোরঘুরি করলেও একটি চলে যায় পিরোজপুরের দিকে। ওই সব এলাকায় সাধারণত সাধু পানির এলাকা হিসেবে ধরা হয়।

সুন্দরবনের করমজল বন্য প্রাণি প্রজনন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধাক মো. আজাদ কবির বলেন, প্রায় এক মাস আগে সুন্দর বনের লবণাক্ত পানির চারটি কুমিরের শরীরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি কুমির সুন্দরবন এলাকায় অবস্থান করলেও একটি কুমির অন্যত্র চলে গেছে। আমাদের কাছে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী গত কিছু দিন ধরে সেটি পিরোজপুরের নদ-নদীতে ঘুরছে। সব শেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী (শুক্রবার, ১২ মার্চ দুপুর ৪টা নাগাদ) সেটি পিরোজপুর-বাগেরহাট ও গোপালগঞ্জ সীমান্তবর্তী চিতলমারি উপজেলার কলাতলা এরকার একটি পুকুরে অবস্থান করছে। নিজের জন্য কোনো নিরাপদ স্থান পেতে তার এমন পথ চলা বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, গত ১৩ মার্চ প্রথমে দুটি ও এর তিন দিন পরে আরো দুটি কুমির অবমুক্ত করা হয়। ওই দুটির একটি কুমির এটি। অবমুক্ত করা চারটি কুমিরের মধ্যে দুটি পুরুষ ও দুটি নারী কুমির।

এর আগে সুন্দরবনের করমজল বন্য প্রাণি প্রজনন কেন্দ্র থেকে ২০০টি কুমির অবমুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু তাদের গতিবিধি এমনভাবে নজর দেয়া হয়নি। তবে এর আগে একইভাবে শরীরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে কচ্ছপ ছেড়ে দেয়া হয়েছিল।


আরো সংবাদ



premium cement