০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ভারী বর্ষণে লালমোহনে ২৪ হাজার হেক্টর ফসলি জমি প্লাবিত

ভারী বর্ষণে লালমোহনে ২৪ হাজার হেক্টর ফসলি জমি প্লাবিত - ছবি : নয়া দিগন্ত

ভারী বর্ষণে ভোলার লালমোহন উপজেলায় প্রায় ২৩ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমির আমন ধানের চারা পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

কৃষকদের অভিযোগ, ভারী বৃষ্টি ও মাঠ-সংলগ্ন সংযোগ খালে মাছ ধরার জন্য অবৈধ বেড়া জাল ও খরছি জাল বসিয়ে পানি চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় এমন ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

এছাড়া স্লুইস গেট বন্ধ থাকায় উপজেলার বেতুয়ার খাল ও মেঘনা নদী-সংলগ্ন এলাকার আমন ধানের চারা পানির নিচে তলিয়ে গেছে বলে। এমনকি কিছু কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠেও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে রমাগঞ্জ, ধলীগৌরনগর ও লর্ড হার্ডিঞ্জ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রোপা আমনের মাঠ পানিতে থৈ থৈ করছে। পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে রোপণ করা আমন ধানের চারা। আবার পানির কারণে অনেক জমিতে কৃষকরা ধান রোপন করতে পারছেন না।

কৃষকরা জানান, গত এক সপ্তাহের টানা বৃষ্টি এবং বেতুয়া ও কামারখালের স্লুইস গেট বন্ধ থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

রমাগঞ্জ এলাকার কৃষক মোহাম্মদ নুরে আলম, মোহাম্মদ ছায়েদুল হক ও ইব্রাহিম খলিল জানান, সাতদরুণ বিলের মাঠে আমন ধানের চারা পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি জমে থাকায় আরো কিছু জমিতে ধান রোপণ পারছেন না। পানি না কমলে বা আবার বৃষ্টি হলে এ বছর ধানের আবাদ একেবারেই বিফলে যাবে বলে শঙ্কা তাদের।

তারা আরো জানান, ওই এলাকার বেশিরভাগ কৃষকের একই অবস্থা। ধলীগৌরনগরের রোপা আমনের বেশিরভাগ মাঠ পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি না কমলে নতুন করে আর চারা দেয়া যাবে না।

লর্ড হার্ডিঞ্জের কৃষক মোহাম্মদ বশির মিয়া জানান, বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার পাশাপাশি বেতুয়া খালের পানি বেড়ে তাদের গোটা মাঠ ভেসে গেছে। বেতুয়ার খালে অবৈধ বেড়া জাল বসিয়ে পানি চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও স্লুইচ গেট বন্ধ থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

চরভূতার কৃষক আবদুর রসিদ বলেন, ৮০ শতক জমির বোরো ক্ষেত অতি বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা তার।

জানা গেছে, ফসল উৎপাদনের সবচেয়ে বড় উৎস উপজেলার রমাগঞ্জ ইউনিয়নের সাতদরুণ, চরমোল্লাজীর বিল ও বাউরিয়ার বিল। কিন্তু বর্তমানে অতি বৃষ্টির কারণে এ সকল মাঠে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ফসলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ কারণে চলতি মৌসুমে উপজেলায় খাদ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। যা জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলতে পারে।

এলাকাবাসীর দাবি, অবিলম্বে স্লুইস গেট খুলে দিয়ে জলাবদ্ধতা নিরসন করতে হবে।

লালমোহন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মোহাম্মদ আব্দুর রব মোল্লা বলেন, উপজেলায় আবাদি জমি রয়েছে মোট ২৪ হাজার ২২ হেক্টর। তার মধ্যে ২৩ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চারা আবাদ করা হয়েছে। বাকি জমিগুলোতে অন্য ফসল আবাদ করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement