০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


বরগুনায় অধিকাংশ বিদেশফেরত কোয়ারেন্টাইন মানছেন না

- নয়া দিগন্ত

বরগুনা আমতলী ও তালতলী উপজেলায় শুক্রবার পর্যন্ত বিদেশফেরত ১৮৮ জনের মধ্যে মাত্র ৩৩ জন প্রবাসী নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন। তবে তারা হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার বাধ্যবাধকতা মানছেন না। প্রকাশ্যে শহর ও গ্রাম-গঞ্জে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বিভিন্ন এলাকায় আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে দাওয়াত খেতে পর্যন্ত যাচ্ছেন। তাদের হোম কোয়ারেন্টাইন মেনে চলার বিষয়টি নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের নেই কোনো জোরালো উদ্যোগ।

আমতলী ও তালতলী থানা সূত্রে জানা গেছে, দুই উপজেলায় ১৬ মার্চ পর্যন্ত মোট ১৮৮ জন প্রবাসী দেশে ফিরে এসেছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি- শুক্রবার পর্যন্ত আমতলী ও তালতলী উপজেলায় ৩৩ জন প্রবাসীকে শনাক্ত করে তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে আমতলী উপজেলায় ২২ জন ও তালতলী উপজেলায় ১১ জন। বাকিদের অবস্থান জানে না উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ। তাদের খুজে রেব করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপও নিতে দেখা যায়নি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কার্যালয় কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তির সংখ্যা নিশ্চিত করে বলেছেন, এখন পর্যন্ত তাদের মধ্যে কারো করোনাভাইরাসের লক্ষণ মেলেনি। তারা সকলেই সুস্থ্ আছেন।

এলাকাবাসীদের অভিযোগ, প্রবাসীদের অনেকেই হোম কোয়ারেন্টাইন মানছেন না। হোম কোয়ারেন্টাইন সম্পর্কে তাদের নেই কোনো সঠিক ধারণা। হোম কোয়ারেন্টাইন কাকে বলে সেটাই অনেকে জানেন না। অনেক প্রবাসী হাট-বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছেন। আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে দাওয়াত খেতে যাচ্ছেন। অনেকে আবার ঝামেলা এড়াতে বাড়িতে বসে স্ত্রী-সন্তানসহ স্বজনদের নিয়ে সময় কাটাচ্ছেন। তাদের হোম কোয়ারেন্টাইন মানার বিষয়টি নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ তেমন কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না।

সম্প্রতি সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে আসেন রিয়াদ হাওলাদার। তিনি বলেন, দেশে এসে ঢাকায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গ্রামের বাড়িতে এসেছি। আমার শরীরে করোনাভাইরাসের কোনো লক্ষণ নেই। তারপরেও আমি এসেই বাড়িতেই অবস্থান করছি, বাহিরে বের হইনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বিদেশফেরত কাতার প্রবাসী বলেন, আমি গত সপ্তাহে দেশে এসেছি। করোনাভাইরাসের যে লক্ষণগুলো আছে তার কোনো কিছুই আমার শরীরের নেই। বাড়িতেই অবস্থান করছি, একদিন আমতলী স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ফোন দিয়েছিল। তবে এখন পর্যন্ত আমাকে স্বাস্থ্য বিভাগের কেউ দেখতে আসেনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন প্রবাসীর প্রতিবেশীরা জানান, বিদেশ ফেরতরা কেউ হোম কোয়ারেন্টাইন মানছেন না। তারা বাড়িতেও অবস্থান করছেন না। এলাকার হাট-বাজারসহ বিভিন্নস্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছেন। আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে দাওয়াত খেতে যাচ্ছেন।

তবে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, সতর্কতা হিসেবে ৩৩ জন প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তাদেরকে বাড়ির বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। আমরা যে সকল বিদেশ ফেরত মানুষের আসার তথ্য পেয়েছি সে সকল প্রবাসীর বাড়িতে গিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকজন তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও নিয়মিত দেখভাল করছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন বলেন, এই ৩৩ জন ছাড়া বাকী বিদেশ ফেরতদের খুজে বের করার চেষ্টা অব্যাহত আছে। আমিও শুনেছি বিদেশ ফেরত প্রবাসীরা হোম কোয়ারেন্টাইন মানছেন না। যারা মানছেন না তাদেরকে চিহ্নিত করে জরিমানার আওতায় আনা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement