০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


বাগাতিপাড়ায় পাখাপল্লীতে হাতপাখা তৈরির ধুম

-


তীব্র গরম আর লোডশেডিং মুহূর্তে গ্রামের মানুষদের সাময়িক শান্তি দেয় হাতপাখা। তাই দেশজুড়ে চলমান তাপদাহে বেড়েছে এই হাতপাখার চাহিদা। আর এ চাহিদা মেটাতে নাটোরের বাগাতিপাড়ায় পাখাপল্লিতে পড়েছে পাখা তৈরির ধুম।
জানা গেছে, উপজেলার জামনগর ইউনিয়নের হাঁপানিয়া গ্রাম অনেকের কাছে তালপাখাপল্লি নামেও পরিচিত। সেখানে অর্ধশত পরিবার তাদের পৈতৃক ব্যবসাকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। তালগাছের পাতা থেকে তৈরি এই হাতপাখার শীতল বাতাস, অনেকের ক্লান্ত মনকে শান্ত করে। এখান থেকে প্রতি গ্রীষ্ম মৌসুমে চার লাখের অধিক পাখা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে ব্যবসায়ী ও কারিগরদের সংসার চলে স্বাচ্ছন্দ্যে।

কারিগরদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পাখা তৈরির উপকরণ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলা থেকে সংগ্রহ করতে হয়। ছোট তালগাছের পাতা সংগ্রহ করে সেগুলোকে রোদে শুকিয়ে পানিতে কিছুদিন ডুবিয়ে রাখতে হয়। এরপর ভেজা পাতা গোলাকার করে কেটে দুই খণ্ড করে দুটি পাখা তৈরি হয়। আর পাতা সংগ্রহ থেকে তৈরি পর্যন্ত প্রতিটিতে খরচ হয় ১৮-২০ টাকা। পাখা পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হয় ২৮-৩০ টাকায়।
কারিগর ও ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন বলেন, এই পল্লির পুরুষরা উপকরণ সংগ্রহ ও কাঠামো তৈরি করেন। আর নারীরা নিপুণ হাতে করেন পাখার কারুকার্য। আর এই পাখা বিক্রি করেই চলে তাদের সংসার।

কারিগর মিনারা বেগম বলেন, প্রতিদিন ৫০-১০০ হাতপাখায় কারুকার্য করতে পারেন তিনি। আর প্রতিটি পাখায় কারুকাজ করে পান এক টাকা, যা পরিশ্রমের তুলনায় অনেক কম। তার পরও বাপ দাদার পেশাকে ধরে রেখেছেন।
জামনগর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম রাব্বানী বলেন, জামনগরের হাঁপানিয়া এলাকায় গড়ে উঠা পাখাপল্লির নারী-পুরুষরা ৬০ বছরের বেশি সময় তাদের পৈতৃক পেশাকে টিকিয়ে রেখেছেন। চলমান তাপদাহে হাতপাখার চাহিদা বেশি হওয়ায় সারা দিন কঠোর পরিশ্রম করে চলেছেন কারিগররা। আর এখানের হাতপাখার দেশব্যাপী ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে। তাই জামনগর ইউনিয়ন পরিষদ সব সময়ই তাদের পাশে রয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement