২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যমুনেশ্বরীর বুকে ধু-ধু বালুচর কোথাও ফসলের আবাদ

শীর্ণ ধারায় বইছে যমুনেশ্বরী নদী। পাশে বিস্তীর্ণ বালুচর : নয়া দিগন্ত -

এককালের খরস্রোতা যমুনেশ্বরী নদী এখন মৃতপ্রায়। শুধু বর্ষা মৌসুমে কিছুটা পানি থাকলেও বাকি সময়টা এর বুকে ধু-ধু বালুচর। কালের বিবর্তনে নদী এলাকা শুকিয়ে গেছে। বেশির ভাগ জায়গা ফসলের মাঠে পরিণত হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও পতিত মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। অথচ একসময়ে বর্ষাকালে নদীর পানি ফুলে ফেঁপে দুই পাড় ভাসিয়ে দিত। সেই সাথে দুই কূলে দেখা দিতো ভাঙন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দিনাজপুর সীমানায় যমুনেশ্বরী নদীর উৎপত্তি হলেও বিশাল অংশের অবস্থান রংপুরের মিঠাপুকুর, বদরগঞ্জ, পীরগঞ্জ ও গঙ্গাচড়া উপজেলায়। স্রোতস্বিনী নদীটি একসময় ছিল পূর্ব বোদা, লালমনিরহাট সদর, কুুড়িগ্রাম, আদিতমারী, চিলমারী উপজেলার সাথে নদীপথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। বড় বড় নৌকায় মহাজনরা মালামাল নিয়ে যাতায়াত করত যমুনেশ্বরী নদীপথে। এ ছাড়াও মিঠাপুকুর, বদরগঞ্জ, গঙ্গাচড়া, কুড়িগ্রাম সদর, আদিতমারী উপজেলার মানুষ নৌকায় শহরে যাতায়াত করত। সারা বছর মাঝি-মাল্লার হাঁকডাকে সরগরম থাকত নদী এলাকা। যমুনেশ্বরী নদীর বড় বড় রুই, কাতলা, মৃগেল, বোয়াল, কাতলা, কালবাউশ, আইড়, পাবদা, বাইম মাছের সাদের আলাদা কদর ছিল সর্বমহলে। দলবেঁধে ছেলেমেয়েরা দুরন্তপনা করত এ নদীতে। প্রতি বছর আয়োজন করা হতো আকর্ষণীয় নৌকাবাইচ।
করতোয়া নদীর কাছাকাছি হওয়ায় যমুনেশ্বরী বর্ষাকালে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করত। কিন্তু এখন বর্ষা ছাড়া আর বাকি সব ঋতুতেই নদীটি শুকিয়ে থাকে। এমনকি বর্ষায়ও নেই কোনো ঢেউ, নেই মহাজনী পালতোলা নৌকার চলাচল। অধিকাংশ স্থানে নদীটি মরা খালে পরিণত হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও পানি দেখা গেলেও কচুরিপানা ও শ্যাওলায় নদীর তলদেশ ভরা। পানি না থাকায় যমুনেশ্বরীর বিস্তীর্ণ প্রান্তরজুড়ে জেগে ওঠা চরে চলছে চাষাবাদ। বেশির ভাগ অংশে নালার মতো সামান্য পানিপ্রবাহ থাকলেও হেঁটে যাওয়া যায় এপার ওপার।
নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে এখন অস্তিত্ব হারাতে বসেছে যমুনেশ্বরী। নদী তীরবর্তী চৌধুরী গোপালপুর থেকে গঙ্গাচড়া শেষ সীমানা পর্যন্ত চোখে পড়ে সবুজের সমারোহ। সর্বত্রই চলছে ফসলের চাষ। দু-একটি জায়গায় পানি দেখা গেলেও সেখানে জমে থাকে কচুরিপানা। শুষ্ক মৌসুমে নদীর বেশির ভাগ অংশে চর জেগে ওঠায় চার দিকে ধু-ধু বালুচর। ধান, ভুট্টা, গমসহ বিভিন্ন ফসলের জমিতে পরিণত হয়েছে নদী এলাকা। নদীপাড়ের মানুষেরা ময়লা-আবর্জনা ফেলে নদীর শীর্ণ ধারাকেও করেছে বাধাগ্রস্ত। কোথাও কোথাও পানির শীর্ণ ধারা বইলেও তা হয়ে গেছে দূষিত।
কেশবপুরের কুটিরপাড়া গ্রামের কৃষক শাহেদ জামান বলেন, এ নদীতে একসময় বড় বড় নৌকা চলত। সারা বছর পানি থাকত। আর এখন গ্রীষ্মকালে পানি শুকিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে এর তলদেশে ধান চাষ হয়। একসময় যমুনেশ্বরীর ভাঙনে ঘরবাড়ি হারাতে হতো। তিনি খননের মাধ্যমে যমুনেশ্বরীর মতো খরস্রোতা সব নদীর প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে সরকারকে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, নদীর তলদেশ খনন করা গেলে শুষ্ক মৌসুমেও পানি পাওয়া যাবে। কৃষিকাজের জন্য এই নদী দীর্ঘকাল ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তাই যমুনেশ্বরী নদী খননে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে তাগাদা দেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
নোয়াখালীতে প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায় দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না : কাদের আশুলিয়ায় বাঁশবাগান থেকে নারী পোশাক শ্রমিকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার মিয়ানমারের কর্মকর্তারা ফেরত গেলেন, কিন্তু রোহিঙ্গা সঙ্কট কি আরো জটিল হচ্ছে দিনাজপুরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষ, চালক-হেলপার নিহত মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ সখীপুরে বৃষ্টির জন্য অঝোরে কাঁদলেন মুসল্লিরা দক্ষিণ ভারতে কেন কাজ করেনি বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নতুন আংশিক কমিটি বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসায় বিনিয়োগ সম্ভাবনা অন্বেষণে থাইল্যান্ডের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান ট্রাম্পের বিচার নিয়ে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট

সকল