২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সাত বছর ধরে খাঁচায় বন্দী প্রতিবন্ধী শিখা

সাত বছর ধরে খাঁচায় বন্দী প্রতিবন্ধী শিখা -

দশ বছর বয়সী শিখার সাত বছর কাটছে খাঁচায় বন্দী অবস্থায়। সে শারীরিক প্রতিবন্ধী। কথা বলতে পারে না, চলে হামাগুড়ি দিয়ে। শিখা রাজবাড়ী কালুখালীর পূর্বফুল কাউন্নার গ্রামের মদমকুমার দাস ও চন্দনা রানীর মেয়ে।
এক বছর বয়সে তার শারীরিক সমস্যার বিষয়টি পরিবারের সদস্যরা বুঝতে পারে। তখন শিখা মানুষ দেখলেই কামড়ে ও খামছে দিত। তখন থেকেই তাকে পরিবারের লোকজন রশি দিয়ে বেঁধে রাখত। কিন্তু শিখা ওই রশি কামড়ে ছিঁড়ে হামাগুড়ি দিয়ে তার মা-বাবাসহ আশপাশের লোকজনকে কামড় ও খামছি দিয়ে আহত করত। তার কামড়ে জলাতঙ্ক রোগ হতে পারে এ জন্য তিন বছর বয়স থেকে পরিবারের সদস্যরা শিখাকে নেটের খাঁচাবন্দী করে রাখে।
শিখার মা চন্দনা শিল বলেন, তিন ভাইবোন। তার মধ্যে শিখা মেজ। ওর বাবা একটি সেলুনে কাজ করেন। সেই টাকা দিয়েই মেয়েকে চিকিৎসার জন্য একাধিকবার ভারতে নিয়ে গেছেন। কিন্তু অবস্থার উন্নতি হয়নি। অনেক কবিরাজ, ডাক্তার দেখিয়েছি। কোনো কাজ হয়নি। প্রতিদিন ১৫০ টাকার ওষুধ লাগে। মাসে সাড়ে চার হাজার টাকা লাগে। এখন ওর চিকিৎসা নিয়ে আমরা খুব চিন্তিত।
এলাকাবাসী জানায়, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এই শিশুটিকে নিয়ে তার মা-বাবার দুঃখের শেষ নেই। দরিদ্র মা-বাবার সংসার চালানোই কষ্টসাধ্য। তার ওপর মেয়েটির চিকিৎসা করতে বেগ পেতে হচ্ছে। সরকারসহ বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা।
ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান কাজী শরীফুল ইসলাম বলেন, শিশুটিকে একটি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দিয়েছিলাম। যেখানে ছয় মাস পর পর সে ২১০০ টাকা করে পায়। কিন্তু সামান্য টাকা দিয়ে তার চিকিৎসার ব্যয় মেটানো সম্ভব হচ্ছে না।
রাজবাড়ী জেলার সিভিল সার্জন ডা: মোহাম্মদ ইব্রাহিম টিটন জানান, খাঁচার মধ্যে আটকে রাখায় তার মস্তিষ্কে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। সমাজসেবার অধীনে এ ধরনের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। তাকে সেখানে রাখা যেতে পারে। শিশুটির যেহেতু মস্তিষ্কে সমস্যা সেহেতু তাকে একটি নিউরোসার্জনের অধীনে চিকিৎসা নেয়া উচিত।
ভারপ্রাপ্ত ইউএনও ইসমাইল হোসেন বলেন, সরকারিভাবে বা সমাজসেবায় এ রকম প্রতিবন্ধী শিশুদের রাখার ব্যবস্থা নেই কালুখালীতে। শিশুটি বাবা-মা ছাড়া থাকতে পারে না। এজন্য এই শিশুটিকে দূরে কোথাও রাখা যাচ্ছে না। ওই শিশুটিকে সব ধরনের সহায়তা দেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement