মিরসরাইয়ে খাল ভরাট : ১০ হাজার একর জমিতে জলাবদ্ধতা
- এম মাঈন উদ্দিন মিরসরাই (চট্টগ্রাম)
- ২৮ নভেম্বর ২০২১, ০০:১১
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে খালের মুখ ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করে সর্বনাশ করা হয়েছে কৃষকের। এতে পানি চলাচলের পথ সঙ্কুচিত হয়ে বর্ষায় সামান্য বৃষ্টিতে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতার। গত মৌসুমেও আমন রোপার ঠিক আগে জলাবদ্ধতায় নষ্ট হয়ে যায় বীজতলা। আবার ফসল ঘরে তোলার ঠিক আগে বৃষ্টি হলে নষ্ট হয়ে যায় শত শত একর পাকা আমন ধান।
জানা গেছে, খইয়াছড়া ইউনিয়নের বুর্জরনগর, চৌধুরীপাড়া, পদ্দাবাজ, ছরারকুল, মসজিদিয়া, মুহুরীপাড়া এলাকায় প্রায় ১০ হাজার একর ফসলি জমি রয়েছে। ওই জমিগুলোতে আউশ ও আমন আবাদ করেন স্থানীয় কৃষকরা। জমিগুলো থেকে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে পানি যাওয়ার একমাত্র পথ কামারীয়া খাল। কিন্তু খালের মুখ ভরাট করে গাছ লাগিয়েছেন চৌধুরীপাড়ার প্রভাবশালী এক ব্যক্তি। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই এখানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
আবুল কালাম নামে এক কৃষক বলেন, গত আমন মৌসুমে পাকা ধান ঘরে তোলার ঠিক আগে বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় তাকে অনেক লোকসান গুনতে হয়েছে। বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানি খালে যাওয়ার জায়গা থাকলে এমন লোকসান গুনতে হতো না। বুর্জরনগর এলাকার কৃষক সামছুল অভিযোগ করেন, কামারীয়া খালের মুখ ভরাট করে ফেলায় গত দুই বছর ধরে একটু বেশি বৃষ্টি হলেই বাড়িঘরে পানি উঠে যাচ্ছে। কৃষকরা চাষাবাদ করতে পারছেন না। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদকে অভিযোগ করে কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
মায়ানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির আহম্মদ নিজামী অভিযোগ করেন, বড়তাকিয়া-আবুতোরাব সড়ক হয়ে আবুতোবার বাজারের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সাহেরখালী-মঘাদিয়া খালটির বাজার অংশ প্রায় দখল হয়ে আছে। খালের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে কাঁচা-পাকা বিভিন্ন স্থাপনা। কয়েক বছর আগে বিএডিসি থেকে খালটি খননের প্রক্রিয়া শুরু করা হলেও দখলের কারণে বাজার অংশে খনন করা সম্ভব হয়নি। খালের সামনে ও পেছনে খনন করে মাঝখানের জায়গাটি রেখে দেয়ায় বাজারে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এছাড়া আবুতোরাব থেকে সাহেরখালী স্লুইস গেট পর্যন্ত গাছগাছালিতে জঙ্গল হয়ে যাওয়ায়ও পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সাহেরখালী-মঘাদিয়া খাল দিয়ে সৈদালী, পূর্ব মায়ানী, মধ্যম মায়ানী এলাকার বন্যার পানি নিষ্কাশন হয়।
মিরসরাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রঘুনাথ নাহা বলেন, এ উপজেলার ৬২ শতাংশ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। আর এদের অন্যতম প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা। খালগুলো দখলমুক্ত ও যথাযথ সংস্কার করা গেলে জলাবদ্ধতা আর থাকবে না। কৃষকও লোকসানের হাত থেকে অনেকটা রক্ষা পাবে।
মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমান বলেন, যে সব খালের ওপর স্থাপনা রয়েছে এবং খালের মুখ ভরাট করা হয়েছে সেসব জায়গায় শিগগিরই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা