২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আম ব্যবসায় চাঙ্গা পোরশার গ্রামীণ অর্থনীতি

-

মহামারী করোনায় জনজীবন কিছুটা স্থবির হয়ে পড়লেও নওগাঁর পোরশায় জমে উঠেছে আমের ব্যবসা। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সমাগমে সরগরম আমের আড়তগুলো। এ মৌসুমে পোরশা উপজেলায় প্রায় ৮০০ কোটি টাকার আম বেচাকেনা হবে বলে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা আশা করছেন। ফলে চাঙ্গা হচ্ছে পোরশার অর্থনীতি।
পোরশা উপজেলার আড়তগুলো থেকে প্রতিদিন অর্ধশতাধিক ট্রাক আম ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন জেলার বড় বাজারগুলোতে যাচ্ছে। বাজারগুলোতে আমের চাহিদা থাকায় আম ব্যবসায়ীরা ভালো মুনাফা পাচ্ছেন। করোনার সময় আমের দাম কিছুটা ভালো পাওয়ায় চাষিরাও খুশি। তবে চলতি মৌসুমে আম ব্যবসার ক্ষেত্রে তারা প্রশাসনের সর্বাত্মক সহযোগিতা চান। আম ব্যবসাকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ী, বাগান মালিক, গাছ থেকে আম নামানো, ঝুড়িতে আম সাজানোসহ ট্রাকে লোড করার কাজে এলাকার কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলার নোচনাহার বাজার, সরাইগাছী মোড়, পোরশা মিনাবাজার আড়তের মোড়, তেঁতুলিয়া বাজার আমের আড়ৎ ঘুরে দেখা গেছে, আড়ৎগুলো ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়ে মুখরিত। গোপালভোগ, খিরসাপাত ও ল্যাংড়া জাতের আম বেচাকেনা হচ্ছে। ভালোমানের আম প্রতি মণ গোপালভোগ ও ল্যাংড়া বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা ও ভালো মানের খিরসাপাত (হিমসাগর) বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়।
নোচনাহার বাজার আম আড়তদার একতা সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রইচ উদ্দিন জানান, এখন পর্যন্ত তাদের আমের ব্যবসা ভালোই চলছে। এই বাজারসহ উপজেলা বিভিন্ন বাজার থেকে প্রতিদিন প্রায় ৪০ ট্রাক আম দেশের বিভিন্ন স্থনের বড় বাজারগুলোতে যাচ্ছে। প্রতিটি ট্রাকে ১২০ থেকে ৩০০ ক্যারেট আম পাঠানো হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁর সবচেয়ে বেশি আম উৎপাদন হয় পোরশা উপজেলায়। এ বছর উপজেলায় ১০ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এতে প্রতি হেক্টর জমিতে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫ মেট্রিক টন। এই হিসেবে উপজেলায় আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে এক লাখ ৫৭ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। যদি বাজারে দাম প্রতি মণ ২ হাজার টাকা হয় তাহলে চলতি মৌসুমে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার আম কেনাবেচা হবে।
পোরশা উপজেলা কৃষি কর্মককর্তা কৃষিবিদ মাহফুজ আলম জানান, গত তিন বছর ধরে এ উপজেলায় প্রতি বছর ৫৫০ হেক্টর করে জমিতে আম চাষ বাড়ছে। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে বাজারদর হিসাবে ধান ও আমের দামের পার্থক্যটা একটু বেশি হওয়ায় অনেকে ধান বাদ দিয়ে আম চাষ করছেন। এ কারণে কৃষি বিভাগ থেকেও আম চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে। তবে পোরশা উপজেলাসহ সমগ্র নওগাঁ জেলায় প্রতি বছর যে হারে আম চাষ বাড়ছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে নওগাঁ জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে তিনি মনে করছেন।


আরো সংবাদ



premium cement