পান চাষ করা খাসিয়াদের অন্যতম আদি পেশা। বর্তমানে এখানকার পান চাষিরা নানা সমস্যার সম্মুখীন। পান চাষের ঐতিহ্য ধরে রেখে এর সম্প্রসারণে প্রয়োজন সরকারি, বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা।
বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকার পান উৎপন্ন হয়ে থাকলেও খাসিয়া পান উৎপাদিত হয় কেবল মৌলভীবাজারের পাহাড়ী এলাকায় খাসিয়া পুঞ্জিতে। আর এ পান বিদেশে রফতানিযোগ্য। কারণ এ পান সহজে পচন ধরে না। স্বাদ ও গুণে এ পানের তুলনা হয় না। খাসিয়া পান বিদেশে রফতানি করে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়। কিন্তু যে পান চাষি খাসিয়া সম্প্রদায়ের আজো তেমন কোনো উন্নতি হয়নি।
গভীর বনে বড় বড় গাছে এরা পান চাষ করে থাকেন। পতিত বনভূমি সরকারের কাছ থেকে লিজ নিয়ে পান চাষের উপযোগী করতে বড় বড় গাছ নির্বাচন ও ছাঁটাই করা হয়। আর পরিষ্কার ও ছাঁটাই করা গাছের নিচে পানের চারা রোপণ করা হয়। অল্প দিনেই চারা বড় বড় গাছকে আঁকড়ে ধরে বেড়ে ওঠে। এসব লতানো গাছে প্রতি মৌসুমে প্রচুর পান উৎপন্ন হয়। তবে, বছরের ১২ মাসই কমবেশি খাসিয়া পান পাওয়া যায়। টিলার ওপর ঘর বেঁধে সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করে খাসিয়ারা। তাদের সমাজের কর্তাকে মন্ত্রী বলা হয়। এ ধরনের পাহাড়ি ভূমিতে খাসিয়া পান ও বসবাসের স্থানকে পুঞ্জি বলা হয়। এক এক পুঞ্জিতে কমপক্ষে ৩০ থেকে ২০০ পরিবার বসবাস করে। এভাবে মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী, কুলাউড়া, বড়লেখা, কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ৬০টির অধিক খাসিয়া পুঞ্জি রয়েছে।
এই পান দেশের বিভিন্ন এলাকায় এবং বিদেশে রফতানির জন্য ঢাকায় সরবরাহ করা হয়। পান চাষে কঠোর পরিশ্রম করে তারা। বিপুল রাজস্ব ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হলেও ওই সম্প্রদায়ের ভাগ্যে তেমন কোনো উন্নয়ন ঘটেনি।
পুঞ্জিগুলো হাজারো সমস্যায় জর্জরিত। পৃষ্ঠপোষকতার অভাব, ভূমি লিজ নিয়ে নানা জটিলতাসহ বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন খাসিয়ারা। এ ধরনের সমস্যার নিরসনসহ প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তাদের উৎপাদিত খাসিয়া পান বিদেশে রফতানির মাধ্যমে আরো অধিক পরিমাণ রাজস্ব ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। পান চাষের ঐতিহ্য ধরে রেখে এর সম্প্রসারণে প্রয়োজন সরকারি, বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা