শুষ্ক মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদ ও এর শাখা নদীর পানি একেবারে শুকিয়ে যাওয়ায় বিলাইছড়ি, বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, লংগদু ও বরকলের নৌচলাচল মারাত্মকভাবে বিঘিœত হচ্ছে। উপজেলা সদর থেকে লঞ্চঘাট দূরে সরে যাওয়ায় প্রচণ্ড রোদ মাথায় নিয়ে দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে মানুষকে গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে। হ্রদের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় অসংখ্য চর জেগে উঠেছে। উপজেলাগুলোতে নৌযানে পণ্য পরিবহনও কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জ্যৈষ্ঠের খরতাপে কাপ্তাই হ্রদের পানি শুকিয়ে গেলে প্রতি বছরই রাঙ্গামাটির ছয় উপজেলার মানুষের যাতায়াত চরম কষ্টকর হয়ে ওঠে। এ বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় খরার কারণে হ্রদের পানি ক্রমশ শুকিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে লঞ্চ কিংবা ইঞ্জিন বোট উপজেলা সদরে পৌঁছাতে পারছে না। জুরাছড়ি, বাঘাইছড়ি, বিলাইছড়ি ও ফারুয়া অঞ্চলের লোকজনকে অনেক কষ্টে মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে। যে কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যেরও চড়া দাম গুনতে হচ্ছে। এলাকার উৎপাদিত পণ্যের ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালামাল আনা-নেয়ার মজুরিও অনেক বেড়ে গেছে। এছাড়া গ্রামাঞ্চলে চাকমা, মারমা, তংচঙ্গা ও পাংখোয়া জনগোষ্ঠীর বসবাস। শুষ্ক মৌসুমে এসব পাহাড়ি এলাকায় দেখা দিয়েছে খাবার পানির সঙ্কট। সুপেয় পানির জন্য কয়েক মাইল হেঁটে তাদের খাবার পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে।
বিলাইছড়ির ফারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিদ্যালাল তংচঙ্গ্যা জানান, পানি শুকিয়ে যাওয়ায় বিলাইছড়ির নৌঘাট অনেক দূরে সরে গেছে। রাঙ্গামাটি ও কাপ্তাই থেকে লঞ্চ কিংবা ইঞ্জিন বোট আসতে পারে সদর উপজেলার সীমানা হাজাছড়ি এসব্যান্ড পর্যন্ত। সেখান থেকে ছোট ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে আসতে হয় বিলাইছড়ি পর্যন্ত। সেখানেও নৌকা থেকে নেমে ২-১ জায়গায় হাঁটতে হয়।
চেয়ারম্যান জানান, তারও রাঙ্গামাটি থেকে বিলাইছড়ি পৌঁছাতে সময় লেগেছে সাড়ে চার ঘণ্টার বেশি। ভাড়াও প্রায় দ্বিগুণের বেশি। এছাড়া বিলাইছড়িতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রেও ভাড়া দিতে হচ্ছে প্রায় তিনগুণ।
ইউপি চেয়ারম্যান বিদ্যালাল তংচঙ্গ্যা আরো জানান, ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে বিলাইছড়ি উপজেলা থেকে মোটরসাইকেলে কোনো কোনো সময় পাহাড় ডিঙ্গিয়ে ফারুয়া পর্যন্ত যাওয়া যায়। তবে একজনকে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা ভাড়া গুনতে হয়। অনেকেই টাকার কারণে মোটরসাইকেলে চড়ে না। আগামী কয়েকদিন গরম অব্যাহত থাকলে আর যদি বৃষ্টি না হয় বিলাইছড়ি ও ফারুয়ার পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা