০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`


গৌরনদীতে সড়ক নয় যেন জলাশয়

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বাটাজোর বাসস্ট্যান্ড সংযোগ সড়ক থেকে নলগোড়া পর্যন্ত সড়কের অবস্থা : নয়া দিগন্ত -

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর বাসস্ট্যান্ড সংযোগসড়ক থেকে নলগোড়া সড়ক পর্যন্ত খানাখন্দ হয়ে জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। এতে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় যানবাহন চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। জরুরি ভিত্তিতে সড়কটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী যাত্রীরা।
জানা গেছে, বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগ ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গৌরনদীর বাটাজোর বাসস্ট্যান্ড থেকে বাবুগঞ্জের আগরপুর হয়ে শরিকলের নলগোড়া পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার সড়কটি পাকাসহ কার্পেটিং করে। এ অঞ্চলের মানুষের যাতায়াত সুবিধার জন্য ২০০১ সালে বরিশাল থেকে নলগোড়া পর্যন্ত লোকাল বাস চলাচল শুরু হয়। ২০০৪-০৫ অর্থবছরে বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগ সড়কটি বরিশাল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের কাছে হস্তান্তর করে। সেই থেকে সড়কটিতে বড় ধরনের কোনো সংস্কারকাজ করা হয়নি। তবে গৌরনদী উপজেলা প্রকৌশল অধিদফতরের একাধিক সূত্র জানায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এক কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কটি সংস্কার হয়। প্রভাবশালী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নামমাত্র কাজ করায় সড়কের মধ্যে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে যানবাহন চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, সড়কের ১৭ কিলোমিটরই খানাখন্দ ও বড় বড় গর্তে ভরে গেছে। চন্দ্রহার, সাকোকাঠী, পালপাড়া, শাহজিরা, বটতলাসহ ১৫টি স্থানের অবস্থা খুবই খারাপ। চন্দ্রহার বাজারের পশ্চিম পাশে সেতুর গোড়া থেকে প্রায় পৌনে এক কিলোমিটার অংশ বহু আগেই পিচ, পাথর ও ইটের খোয়া উঠে গিয়ে কাঁচা সড়কে পরিণত হয়েছে। সাকোকাঠী বাসস্ট্যান্ডের দুই পাশে রয়েছে শতাধিক গর্ত। পালপাড়া ও ঋৃষিপাড়া এলাকার দুই পাশ ভেঙে গিয়ে কার্পেটিং হারিয়ে গেছে। সড়কের মাঝখান উঁচু হয়ে দুই পাশ গভীর গর্তের কারণে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।
এলাকাবাসী জানান, বছরের পর বছর সড়কটির এ বেহাল দশা হলেও সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেই। সড়কটির খানাখন্দ ও গর্তের কারণে মাঝে মাঝে মনে হয় জলাশয়। এ সড়কে চলাচলকারী বেশির ভাগ যানবাহন দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে। বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে বরিশাল থেকে মিয়ারচর নলগোড়া লোকাল বাস চলাচল।
শরিকল গ্রামের তৈয়ব আলী, হোসনাবাদ গ্রামের আবুল হোসেন, হরহর গ্রামের সহকারী শিক্ষিকা মায়া রানী শিকদার, শরিকল বাজারের মাসুম হোসেন জানান, প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর, শরিকল ও নলচিড়া ইউনিয়ন এবং বাবুগঞ্জ উপজেলার আগরপুর ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ গৌরনদী উপজেলা ও বরিশাল জেলা সদরে যাতায়াত করে থাকে। এ ছাড়া সহ¯্রাধিক মানুষ প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে আসা-যাওয়া করে থাকে।
শরিকল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাকির হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ২-৩ বছর আগে বরিশাল এলজিইডি সড়কটি সংস্কারে প্রায় ২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করেন। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রভাবশালী ঠিকাদার নামেমাত্র কাজ করে বাকি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
বাটাজোর-শরিকল সড়কের বেহাল দশার কথা স্বীকার করে গৌরনদী উপজেলা প্রকৌশলী অহিদুর রহমান বলেন, সড়কটি সংস্কারের জন্য প্রকল্প তৈরি করে অনুমোদনে সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদনসাপেক্ষে সংস্কারকাজ শুরু করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement