নাগরপুরে জমে উঠেছে নৌকার হাট
- হুমায়ূন কবীর নাগরপুর (টাঙ্গাইল)
- ১৩ জুলাই ২০২০, ০০:০০
টাঙ্গাইলের নাগরপুরে জমে উঠেছে নৌকার হাট। করোনায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সরগরম এখন উপজেলার গয়হাটা বাজার। সারি সারি নৌকার পসরা দেখলে মন জুড়িয়ে যায়। সপ্তাহের প্রতি শনিবার উদয়তারা উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে কেনা-বেচা হয় বিভিন্ন আকারের নৌকা।
আশির দশকের প্রথম দিকে এ বাজারে নৌকা বিক্রি শুরু হয়। সহস্রাধিক পরিবার দীর্ঘদিন ধরে নৌকা-বৈঠা তৈরি ও বিক্রি করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। বর্ষায় নদীমাতৃক এ অঞ্চলের কৃষিজীবী মানুষের জীবন-জীবিকার অন্যতম বাহনই হচ্ছে নৌকা। আষাঢ় মাস থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত বসে এ নৌকার হাট। গয়হাটা বাজারে ও খালের পাড়ে রাস্তার ওপরে দু’পাশ জুড়ে বিভিন্ন সাইজের নৌকার বেচাকেনা চলে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
নৌকার হাটে গয়হাটা এলাকার নৌকা তৈরির কারিগর বিনয় সূত্রধর বলেন, বাপ-দাদার এ পেশায় আমি ১০ বছর যাবৎ হাল ধরেছি। রেইনট্রি, মেহগনি, কড়–ই, আমড়া, চাম্বুল প্রভৃতি গাছের কাঠ দিয়ে নৌকা তৈরি করে থাকি। একটি নৌকা তৈরি করতে দুজন শ্রমিকের সময় লাগে দুই থেকে তিন দিন। আর প্রকারভেদে খরচ হয় তিন হাজার থেকে সাত হাজার টাকা। এগুলো বিক্রি হয় ছয় হাজার থেকে ১২ হাজার টাকায়।
উপজেলার তিরছা এলাকার নৌকা বিক্রেতা অনিল সরকার জানান, এক শ্রেণীর দূরাগত পাইকার এখান থেকে নৌকা কিনে অন্য জেলায় নিয়ে বিক্রি করে। বিশেষ করে মানিকগঞ্জের ঘিওর এলাকার পাইকার বেশি আসে এখানে। শ্রমিকদের মজুরি ও কাঠের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আগের চেয়ে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। ফলে লাভ কম হয়। কিন্তু বর্ষায় এবার নৌকার চাহিদা বেশি বলে বেশি নৌকা বিক্রি হচ্ছে। এতে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, সকালে ৩০টি নৌকা বাজারে এনেছি। ইতোমধ্যে ১৫টি বিক্রিও হয়েছে। মহান করুণাময় চাইলে, বাকিগুলোও বিক্রি হবে। প্রতিবছর তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার নৌকা পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করে থাকি।
স্থানীয়রা জানায়, এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা বর্ষা ঋতুতে ধান, বিলের শাপলা, শাকসবজি, নার্সারি ব্যবসা, পেয়ারা, আমড়া, পানিকচু, লেবু, কলা প্রভৃতি কাঁচামাল ও ফসলের বেচাকেনা হয় নৌকায় করেই। আর এ কারণেই এ সময় নৌকার কদর বেড়ে যায়। প্রতি হাটে ১৫০ থেকে ২০০ নৌকা বিক্রি হয়।
ইজারাদার জয়নাল আবেদীন জানান, বিগত বছরগুলোর মতোই স্বাভাবিকভাবে নৌকাপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা করে খাজনা তোলা হচ্ছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তাসহ সকল প্রকার অনিয়ম ও চাঁদাবাজি ঠেকাতে ইজারাদারের সাত-আটজন সদস্য সচেতন ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। যদি কেউ বাজারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে অনিয়ম করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা