২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আমফানে লণ্ডভণ্ড কুয়াকাটার নিজামপুর বেড়িবাঁধ

আমফানের পর কুয়াকাটার নিজামপুর বেড়িবাঁধ : নয়া দিগন্ত -

প্রতিবছরের মতো ভাঙন শুরু হয়েছে কুয়াকাটর অদূরে নিজামপুর রক্ষাবাঁধ। ঘূর্ণিঝড় আমফানের তাণ্ডবে উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর গ্রামের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধটি ভেঙে লণ্ডভণ্ড হয়ে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অমাবস্যা-পূর্ণিমার জোয়ারে আন্ধারমানিক নদীর উত্তাল ঢেউ আছড়ে পড়ছে বাঁধের ওপর। এতে প্রতিনিয়ত ভাঙছে এই বাঁধটি। প্রায় দুই কিলোমিটার জুড়ে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে পাঁচটি গ্রামের হাজার হাজার কৃষক পুনরায় পানিবন্দী হয়ে পড়ার পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতির মধ্যে রয়েছে বলে স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডরে নিজামপুর গ্রামের পাউবোর ৪৭/১ পোল্ডারের বেড়িবাঁধের বিভিন্ন অংশে ভাঙন দেখা দেয়। এরপর ২০০৮ ঘূর্ণিঝড় নার্গিস, ২০০৯ আইলা, ২০১৩ মহাসেন, ২০১৫ কোমেন, ২০১৬ রোয়ানু, ২০১৭ মোরা, ২০১৯ ফণী ও বুলবুলের ভয়াবহ তাণ্ডবে নিজামপুর বাঁধটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকবার সংস্কারসহ তিনবার পুনর্নির্মাণ হলেও সাগর মোহনা আন্ধারমানিক নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের উচ্চতায় বেড়িবাঁধের ভাঙনকবলিত অংশ দিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে। পর্যায়ক্রমে প্লাবিত হয় ওই ইউনিয়নের পুরান মহিপুর, ইউসুফপুর, নিজামপুর, কোমরপুর ও সুধীরপুর গ্রামের অন্তত তিন হাজার একর জমি। দীর্ঘ ১২ বছরে কাক্সিক্ষত ফসল পায়নি কৃষকরা। এ ছাড়া বন্ধ হয়ে যায় বাঁধ সংশ্লিষ্ট একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে নদী ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্মাণ করে দেয় রিং বেড়িবাঁধ। সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় আমফানের তাণ্ডবে এ বাঁধটি ফের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কৃষক আলতাফ শরীফ বলেন, আন্ধারমানিক নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের তাণ্ডবে ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীর পানির চাপ বাড়লে এ বাঁধটি যেকোনো মুহূর্তে ছুটে যেতে পারে। তখন যাওয়ার আর কোনো জায়গা থাকবে না।
নিজামপুর গ্রামের প্রভাষক জয়নুল আবেদীন বলেন, সিডরের পর থেকে পাঁচ গ্রামের মানুষ ১০ বছর যাবত জমিতে কোনো চাষ করতে পারেনি। এরপর পানি উন্নয়ন বোর্ড জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে এখানে রিং বেড়িবাঁধ করে দেয়। কিন্তু সুপারসাইক্লোন আমফানের তাণ্ডবে এ বাঁধটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুই বছর ধরে চাষ শুরু করছি। এখন আবার নতুন করে আতঙ্কে ভুগছি।
মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম আকন জানান, এ এলাকার বেশির ভাগ মানুষই মৎস্যজীবী। আবার কেউ কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। এই ইউনিয়নের নিজামপুর ও সুধীরপুর গ্রাম সাগরের মোহনা সংলগ্ন। শুধু অমাবস্যা পূর্ণিমাই নয়, জোয়ার ভাটার সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হয়। আগের বেড়িবাঁধ নেই। এখানে সাড়ে ৮০০ মিটার রিং বেড়িবাঁধ হয়েছে। তাও আবার আমফানে ক্ষত-বিক্ষত করে ফেলছে। এর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দ্বারে দ্বারে আমি অনেকবার ঘুরেছি। তিনি অবহেলিত এ জনপদের নিজামপুর গ্রামের তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নতুনভাবে করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়া জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় আমফানে রিং বেড়িবাঁধটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটি সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। যে বরাদ্দ দেয়া হয় তা দিয়ে কোনো রকমে কাজ করা সম্ভব। এ সাগর মোহনায় পূর্ণাঙ্গ বেড়িবাঁধ করা দরকার। এ জন্য প্রকল্প তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।


আরো সংবাদ



premium cement
মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ সখীপুরে বৃষ্টির জন্য অঝোরে কাঁদলেন মুসল্লিরা দক্ষিণ ভারতে কেন কাজ করেনি বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নতুন আংশিক কমিটি বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসায় বিনিয়োগ সম্ভাবনা অন্বেষণে থাইল্যান্ডের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান ট্রাম্পের বিচার নিয়ে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট চুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত, ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত আমদানি ব্যয় কমাতে দক্ষিণাঞ্চলের সূর্যমুখী তেলের আবাদ পাকুন্দিয়ায় গানের আসরে মারামারি, কলেজছাত্র নিহত আবারো হার পাকিস্তানের, শেষ সিরিজ জয়ের স্বপ্ন পাটকেলঘাটায় অগ্নিকাণ্ডে ৩ দোকান পুড়ে ছাই

সকল