কাজিপুরে মৃত ব্যক্তিরা পাচ্ছেন বয়স্কভাতা!

সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার খাসরাজবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আফসার আলী এক বছর আগে মারা গেছেন। তার নামে একটি বয়স্কভাতার কার্ড রয়েছে। সেই কার্ডের টাকা এখনো নিয়মিত উত্তোলন করে আসছেন মৃত ব্যক্তির ছেলে দুলাল মিয়া। গত ৭ মে তিনি তার মৃত বাবার টাকা উত্তোলন করেছেন। একই কায়দায় তিনি তার ওয়ার্ডের মৃত আবুল কাশেম (বই নং-৪০১ হিসাব নং-৪৩১, দেহারন বই নং- ৪৫ হিসাব নং-১১)সহ কয়েকজন মৃত ব্যক্তির নামে বরাদ্দকৃত বয়স্ক, বিধবা, অসচ্ছল প্রতিবন্ধীর নামের টাকা যথারীতি উত্তোলন করে আত্মসাৎ করছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ওই ওয়ার্ডের ভাতাভোগী মৃত দিল রওশনের (বই নং-২৪৬, হিসাব নং- ৩০৪) ভাতিজা রফিকুল ইসলাম এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
একই বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে ওই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। বয়স্ক ভাতাভোগী মৃত খোশবার আলীর ছেলে চান মিয়া ওই ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি অভিযোগে উল্লে­খ করেন, ইউপি সদস্য চানমিয়া তার মৃত বাবার নামে ইস্যুকৃত ভাতা-বই অফিসে ফেরত দেয়ার নাম করে নিয়ে গেছেন। কিন্তু সম্প্রতি তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে অফিসে বই জমা না দিয়ে সেই বইয়ের মাধ্যমে ভাতার টাকা ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম উত্তোলন করছেন। তিনি তার লিখিত অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন, ভাতাভোগী মৃত সাহেব আলী (বই নং- ৪০৭, হিসাব নং- ৪৫১), সুকিতন (বই নং- ১৭০ এবং হিসাব নং-২৮) ও অসচ্ছল প্রতিবন্ধী মৃত কুব্বাত আলীর (বই নং-৪, হিসাব নং-৪৬) এর নাম উল্লেখ করেছেন। উল্লিখিত নামের সবাই মারা গেছেন। কিন্তু ইউপি সদস্য তাদের নামে ইস্যুকৃত বইগুলো অফিসে জমা দেয়ার নাম করে নিয়ে নিয়মিত বইগুলোর নামের বরাদ্দকৃত টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে ওই দুই ইউপি সদস্য জানান, যারা মারা গেছেন তাদের নামের বইগুলো উপজেলা সমাজসেবা অফিসে তিনি জমা দিয়েছেন। তাদের বইয়ের বিপরীতে কোনো টাকা উত্তোলন করেননি বলেও তারা দাবি করেন। তবে ইউপি সদস্য দুলাল মিয়া নিজের মৃত বাবার ভাতার টাকা উত্তোলনের কথা স্বীকার করেছেন।
কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হাসান সিদ্দিকী অভিযোগ পাওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, উপজেলা সমাজসেবা অফিসারকে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।