বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধর্ম হওয়া সত্ত্বেও অ্যাঙ্গোলাতে ইসলাম আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। দক্ষিণ আফ্রিকার এ দেশটিতে প্রায় তিন কোটি মানুষ রয়েছে, যাদের ৭৫ শতাংশ খ্রিষ্টান। তাদের অধিকাংশই ক্যাথেলিক খ্রিষ্টান। অন্য দিকে অ্যাঙ্গোলায় মুসলমানদের সংখ্যা প্রায় আট লাখ বলে জানিয়েছেন সেখানকার মুসলিম কমিউনিটির প্রধান ডেভিড আলবার্তো জা।
আলবার্তো জা আনাদোলু এজেন্সিকে জানান, যদিও অ্যাঙ্গোলাতে অনেক আগে থেকেই ইসলামের শিকড় প্রোথিত রয়েছে, কিন্তু ইসলাম সেখানে প্রসার লাভ করে ১৯৯০ সালের দিকে পশ্চিম আফ্রিকান দেশ মালি, সেনেগাল ও গিনি থেকে গণহারে অভিবাসনের মাধ্যমে। তিনি বলেন, অ্যাঙ্গোলার ধর্ম জাতির বিশেষ বাস্তবতা দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে, যার রাজনৈতিক ইতিহাস সমাজতান্ত্রিক মতাদর্শ ও বহু বছরের গৃহযুদ্ধের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। রাজনৈতিক ও আইনি সংস্কারের গতি এখানে খুবই ধীর। আগের শাসকেরা ইসলাম ধর্ম ইস্যুতে ততটা উদার ছিলেন না। ফলে অ্যাঙ্গোলার মুসলমানেরা আজ অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। বর্তমানে এখানে সবচেয়ে বিতর্কিত ইস্যুগুলোর একটি হচ্ছে ধর্মবিষয়ক আইন।
২০০৪ সালে সেখানে যে আইন করা হয়, তাতে বলা হয় যেকোনো ধর্মকে অবশ্যই রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত হতে হবে, এর কমপক্ষে এক লাখ সদস্য থাকতে হবে এবং দেশের দুই-তৃতীয়াংশ জায়গায় তাদের উপস্থিতি থাকতে হবে। এ ছাড়া কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে বৈধ করতে হলে ওই ধর্মের লোকদের কমপক্ষে ৬০ হাজার স্বাক্ষরের প্রয়োজন হবে। অ্যাঙ্গোলায় বর্তমানে এক হাজার ধর্মীয় সম্প্রদায় রয়েছে, যাদের মধ্যে মাত্র ৮৪টিকে বৈধতা দেয়া হয়েছে। আলবার্তো জা বলেন, ইসলাম এখন এখানকার বাস্তবতা, যা অস্বীকার করা যায় না। এখন তারা ৬০ হাজার স্বাক্ষর গ্রহণের কর্মসূচি পালন করছেন। তিনি বলেন, আগে এ সংখ্যাটি এক লাখ ছিল। পরে আইন সংশোধন করে তা ৬০ হাজারে নামিয়ে আনা হয়।
মুসলমানদের বর্তমান অবস্থা
অ্যাঙ্গোলার আইনি সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আলবার্তো জা মুসলমানদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশাবাদী। তিনি বলেন, আমি বলতে চাই, অ্যাঙ্গোলার বর্তমান রাজনৈতিক সংস্কারের ফলে মুসলমানরা রাষ্ট্র ও সমাজের সাথে আরো ভালো সম্পর্ক তৈরি করতে পারছে। অনেক আইনজীবী অবশ্য জানান, ধর্মবিষয়ক আইনে যেসব নীতি পালন করা হচ্ছে, তা ধর্মের স্বাধীনতাকে অনেকটাই সীমাবদ্ধ করে ফেলছে, যা ধর্মীয় ও নৃগোষ্ঠীর অধিকারের পরিপন্থী। তবে আইনি স্বীকৃতির অভাব সত্ত্বেও অ্যাঙ্গোলার মুসলমানরা অনেক দশক ধরেই স্বাধীনভাবে তাদের ধর্মচর্চা চালিয়ে যাচ্ছেন। দেশটিতে এখন ৬০টি মসজিদ রয়েছে।
অ্যাঙ্গোলার ইসলামিক রিলিজিয়াস গাইডেন্স অ্যান্ড কোঅপারেশনের প্রধান মোহাম্মদ সালেহ জাবু বলেন, আমরা স্বাধীনভাবে আমাদের ধর্ম পালন করছি। কিন্তু সরকার এখনো ইসলামকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি। এ অবস্থার পরিবর্তন হওয়া উচিত। আমরা আমাদের ধর্মকে বৈধকরণের প্রক্রিয়া চালাচ্ছি। জাবু বলেন, বিচার মন্ত্রণালয় লুয়ান্ডার অ্যাঙ্গোলিয়ান মুসলিমদের সর্বোচ্চ পরিষদকে স্বীকৃতি দিয়েছে। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও স্বীকৃতি পাওয়ার পথে রয়েছে। এ ক্ষেত্রে মুসলিম দেশগুলোর প্রতি সহায়তার আহ্বান জানিয়ে জাবু বলেন, অ্যাঙ্গোলান মুসলিমদের শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইসলামি দেশগুলোর সহায়তা প্রয়োজন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা