৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


মায়ের আদরের স্মৃতি

-

আজ বেশ আয়োজন করেই বসলাম- ‘মাকে নিয়ে দু’কলম লিখব বলে। হৃদয়ের যত আবেগ, যত প্রীতি-ভালোবাসা- কলমের কালিতে সব একাকার করে ঢেলে দেবো খাতার পাতায়। কিন্তু আমি ঠিক কী লিখব? মাকে নিয়ে লিখলে কত কিছুই তো লেখা যায়! মায়ের সব অবদান আমার সাত জনমেও কি আমি লিখে শেষ করতে পারব? তবুও আজ লিখতে বসেছি, কটা লাইন লিখেই তবে উঠব।
এসব সাতপাঁচ ভেবে যখন স্মৃতির ঝাঁপিটা খুললাম তখন আমার সামনে ভেসে উঠল মায়ের আদর-স্নেহ-মমতার হাজারখানেক স্মৃতি। কোনটি ছেড়ে কোনটি লিখব সে চিন্তায় আটকে পড়লাম আরো কিছুক্ষণ। তবে এ মুহূর্তে আমার মনের ক্যানভাসে খুব বেশি স্পষ্ট হয়ে যে স্মৃতিটি ভাসছে সেটি লিখলে বোধ করি মন্দ হবে না।

শৈশব পেরিয়ে তখন আমি এক দূরন্ত কিশোর। যে বয়সে সচরাচর ছেলেরা মায়ের কাছ থেকে বেশি দূরে যায় না। আমার যত দাপাদাপি, যত খেলাধুলা সব ছিল বাড়ির উঠোন-আঙিনাতেই। দূরে কোথাও যাওয়ার সাহস করতাম না কখনো। কিন্তু নিয়তির কী খেলা! বাড়ির সাথে লাগোয়া নূরানি মাদরাসাটি থেকে যখন তৃতীয় ক্লাস পড়ে শেষ করলাম, তখন সেই ছোট্ট আমি আল্লাহর ইচ্ছায়, একদিন আল্লাহর পবিত্র কালাম হেফজ করার উদ্দেশ্যে চলে গেলাম দূরের শহরে। মায়ের অনেক আড়ালে। যেখানে থেকে মায়ের জন্য আমার ভীষণ পরাণ পড়ত। যত দিন মায়ের কাছ থেকে দূরে থাকতাম তত দিন আমার বাকির খাতায় মায়ের অনেক আদর জমা হয়ে যেত। তার পর যেদিন বাড়ি ফিরতাম, সেদিন সারা রাস্তা পার করে যখনই বাড়ির আঙিনায় পা রাখতাম, মা কীভাবে যেন টের পেয়ে যেতেন! বাড়ির উঠোন পর্যন্তও আসতে দিতেন না। দূর থেকে দেখামাত্রই ছুটে আসতেন পাগলের মতো। এসেই বুকে জড়িয়ে নিতেন পরম মমতায়। মায়ের ম্লান মুখটাতে ক্ষণিকের জন্য যেন পূর্ণিমার চাঁদ নেমে আসত তখন! আর সে অন্তরঙ্গ মুহূর্তটিতে আমার কাছে মনে হতো, আমার এত দিনের বকেয়া সব আদর মা এক নিমিষেই যেন চুকে দিলেন! সন্তানের প্রতি পৃথিবীর সব মায়ের আদর বুঝি এমনই হয়! প্রভুর কাছে কাতর হয়ে ফরিয়াদ জানাই, হে দয়াময় প্রভু! আমার মায়ের প্রতি তুমি তোমার খাস রহম নাজিল করো।


আরো সংবাদ



premium cement