শত উদ্দীপনা ও উত্তেজনার মধ্য দিয়ে শুরু হলো ২০২০। বিভিন্ন আয়োজনে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে বরণ করে নেয়া হলো নতুন বছরকে।
মুছে যাক গ্লানি ঘুচে যাক জরা/অগ্নি স্নানে শুচি হোক ধরা। কবিগুরুর কথাগুলোকে যেন আক্ষরিকভাবে নিয়েছে মেক্সিকোবাসী। তারা নতুন বছরের আগে রাতে বছরের যত খারাপ ঘটনা রয়েছে, তা একটি কাগজে লিখে তা আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া বাসায় ঐতিহ্যবাহী রুটি বানানো হয়, যার মধ্যে একটি মুদ্রা লুকোনো থাকে। ধারণা করা হয়, যার ভাগে মুদ্রাটি পড়বে, তার নতুন বছর ভালো যাবে। নতুন বছরের আগের সন্ধ্যায় ঘরগুলোকে বিভিন্ন রঙ দিয়ে সাজানো হয়। সামগ্রিক উন্নতির জন্য লাল, চাকরিতে সৌভাগ্যের জন্য হলুদ, আর্থিক অবস্থার উন্নতির জন্য সবুজ ও স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য সাদা রঙ দিয়ে ঘর সাজানো হয়। নতুন বছর শুরুর ঠিক ১২ সেকেন্ড আগ থেকে প্রতি সেকেন্ডে একটি করে আঙ্গুর খেয়ে নতুন বছরের প্রথম প্রহরকে বরণ করে নেয় মেক্সিকোবাসী।
ব্রাজিলের অন্যতম মূল উৎসব হিসেবে পালিত হয় নতুন বর্ষ উৎযাপন। সাধারণত সমুদ্রতীরে সাদা পোশাক পরে আমোদ-প্রমোদের মাধ্যমে তারা নতুন বছরকে আপন করে নেয়। রিও ডি জেনেরোর কোপাকাবানা সমুদ্রসৈকতে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আতশবাজির প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৮ সালে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ এ প্রদর্শনী দেখার জন্য ভিড় করে কোপাকাবানা সমুদ্রসৈকতে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আয়োজিত হয় সঙ্গীত অনুষ্ঠান। সাও পাওলো শহরে নতুন বর্ষকে বরণ করে নিতে আয়োজন করা হয় সেইন্ট সিভারস্টার ম্যারাথনের।
আলজেরিয়ায় মূলত পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে ঘরোয়াভাবে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়। এ সময় অন্যান্য খাবারের সাথে ঐতিহ্যবাহী কেক, ব্লাক কফি এবং সোডা খাওয়া হয়। শহীদ মিনার ও গ্রান্ড, পোস্ট প্যালেসের সামনে লোকজন জড়ো হয় থার্টিফার্স্ট নাইট উৎযাপনের জন্য। নতুন বছরের আগের রাত ৮টায় প্রেসিডেন্ট জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। আলজেরিয়ারবাসী কার্ড ও চিঠির মাধ্যমে প্রিয়জনকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানায়।
উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ায় ১ জানুয়ারি নতুন বছর উৎযাপন করা হয়। উভয় কোরিয়ায় বছরের প্রথম দিনে ‘টিওক-গুক’ নামে একটি স্যুপ পান করা হয়। ধারণা করা হয়, এ স্যুপ পান করলে দীর্ঘজীবী হওয়া যায় এবং এ স্যুপ পানে কেউ যদি অসম্মতি জানায়, তাহলে তার জীবনে দুর্ভাগ্য আসবে। ৩১ ডিসেম্বর মধ্যরাতে সিউলের বসিনগেগ বেল ৩৩ বার বাজানো হয় এবং লটে ওয়ার্ড টাওয়ারে লেজার লাইট শো হয়।
জাপানের নতুন বছররের দেবতা তশিগামীকে বরণ করে নিতে ঘরগুলো বিশেষভাবে সাজানো হয়। ৩১ ডিসেম্বর মধ্যরাতে বৌদ্ধবিহারগুলোতে ১০৮ বার ঘণ্টা বাজানো হয়। প্রতিটি ঘণ্টা ‘বোনো’-এর একটি এলিমেন্টকে নির্দেশ করে। ‘বোনো’ হলো এমন মানসিক অবস্থা যা মানুষকে খারাপ করতে প্ররোচিত করে।
গ্রিসে নতুন বছর উৎযাপন করতে শিশুরা বিভিন্ন বাসায় গিয়ে গান গায় এবং এর বিনিময়ে তাদের টাকা দেয়া হয়। রাতে খাওয়ার সময় যিনি খাবার সার্ভ করেন, তিনি খাবারের সাথে প্রতি প্লেটে তার কিছু গহনাও সার্ভ করেন এবং এ বাসনপত্র পরের দিন পরিষ্কার করা হয়। কারণ, ধারণা করা হয়Ñ সেন্ট ভাসিলিস রাতে গিফট দিতে আসে এবং তার জন্যও খাবার রাখা হয়। মধ্যরাতে তারা ঘরের সব বাতি নিভিয়ে দেয় এবং চোখ বন্ধ করে রাখে এবং নতুন বছর শুরু হওয়ার পর বাতি আবার জ্বালানো হলে তারা চোখ খুলার মাধ্যমে নতুন আলোতে নতুন বছর শুরু করে এবং কিং পাই খায়, যার মধ্যে একটি মুদ্রা লুকানো থাকে। এই মুদ্রাটি খুঁজে পাওয়া সৌভাগ্যের লক্ষণ হিসেবে দেখা হয়।
নানা অয়োজনে বিভিন্ন দেশের মানুষ নতুন বছরকে বরণ করে নেয়, আসন্ন বছরকে সুখ ও সমৃদ্ধির সাথে কাটানোর জন্য। আশা করা যায়, ২০২০ আমাদের জীবনে বয়ে আনবে সুন্দর মুহূর্ত।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা