০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`


আ মি ও ব ল তে চা ই

পরীর পরিণতি

-

অনেক জোর করেও পরীকে রাজি করানো যায়নি। ওর একটাই কথাÑ আমি পড়াশোনা করব, এখন বিয়ে করতে পারব না। বাড়ি থেকে যতবার ছেলে দেখেছে ততবার ও কান্নাকাটি করে হলেও বিয়ে বন্ধ করেছে। কত-ই বা বয়স। বড়জোর ১৩-১৪ বছর। সবে দশম শ্রেণীর ছাত্রী। তবে বয়স কম হলেও শারীরিক গঠন তুলনামূলক ভালো।
বাবা-মায়ের একমাত্র মেয়ে। লেখাপড়ায় অনেক ভালো। রূপ-লাবণ্য আর গুণ বলতে যা বুঝায়, তার কোনোটিরই কমতি নেই। মায়ের রান্নায় সহযোগিতা, বাবার কাজে সহযোগিতা সবই করে ও। এত ভদ্র প্রকৃতির মেয়ে আজ আমাদের সমাজে পাওয়া বেশ দুষ্কর। ভালো খাবার, দামী কাপড় বা সোনা-গহনা, প্রসাধনী এসবের কোনো আবদার নেই পরীর। পরিবারের কাছে পরীর একটাই আবদারÑ সে পড়তে চায়। বাবা-মা শিতি নন বলে কখনো তাদের তাগিদের অপোয় না থেকে সময়মতো পড়ার টেবিলে বসে যায়। পরীর বাবার সামর্থ্য নেই ওকে প্রাইভেট পড়ানোর।
প্রতিবেশী হওয়ার কারণে বিভিন্নভাবে ওদের বাড়ির খোঁজ-খবর চলে আসে আমাদের কাছে। ইদানীং বিয়ে নিয়ে খুব রাগ অভিমান চলছে ওদের বাড়িতে। কৌতূহল নিয়েই চাচীর সাথে কথা বললাম। কী ব্যাপার চাচী শুনলাম পরীর বিয়ে নিয়ে খুব তোড়জোড় করছেন। ও তো পড়াশোনায় অনেক ভালো এত তাড়াহুড়া করছেন কেন? মেয়ের ভালো শুনে অনায়াসে তার অনেক গল্প শুনাল চাচী। চাচীর কথা শুনে মনে হলোÑ মা হিসেবে সে খুব গর্বিত। সব শুনে বললাম, বাড়ির একটাই মেয়ে, চাচার ইনকাম যা হয় তা দিয়ে ওর পড়ালেখা চালানো তো খুব সমস্যা হওয়ার কথা না। আবার রেজাল্টও ভালো করছে।
চোখের কোণায় পানি জমে গেছে চাচীর। ভাঙা কণ্ঠে বললেন, ‘বাপরে কী আর বলব, অনেক শখ ছিল মেয়েকে ডাক্তারি পড়াব। ভালো ছেলে দেখে বিয়ে দেবো। কিন্তু বাধ্য হয়ে এখন মেয়ের অমতেই বিয়ে দিতে হচ্ছে।’ কারণ কী চাচী? তিনি বললেন, ‘তুমি তো জানো, সমাজের এখন কী অবস্থা! মেয়েটা একা একা স্কুলে যায়। রাস্তাঘাটে কতজন কত কথা বলে। ও শুধু বাড়ি এসে কাঁদে। এই অবস্থায় ভাবছি বিয়েটা দিতে পারলেই ভালো।’
এই সমাজের একজন যুবক হিসেবে কোনো উত্তর দিতে পারলাম না। আমতা আমতা করে উঠে এলাম। পেছনে ফিরে দেখি পরী দাঁড়িয়ে আছে। কাঁদতে কাঁদতে ও বলল, ‘ভাইয়া, মাকে একটু বুঝান। আমি পড়তে চাই। আমি অনেক বড় হতে চাই।’ ওকে শান্ত করার ব্যর্থ চেষ্টা করলাম। মনে মনে ভাবলাম, বোনরেÑ এ সমাজ তোর জন্য না। তোর বাবার অর্থ নেই, বিত্ত নেই, নেই প্রভাব প্রতিপত্তি। তোর জন্য অপো করছে সমাজের এক শ্রেণীর শকুনের থাবা। নোংরা কিছু মানুষের লোলুপ দৃষ্টি।
শুধু পরী নয়। আমাদের সমাজের প্রত্যেকটি পরিবার যাদের কন্যা সন্তান রয়েছে আমার চাচীর মতো তারাও নির্ঘুম রাত যাপন করেন। দলীয় দাপট, অর্থের পাহাড়, আর মতার অপব্যবহার আমাদের এটাই চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, গরির বাবার ঘরে সুন্দরী কন্যা থাকতে নেই।
শাহজালাল
ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।


আরো সংবাদ



premium cement
গাজীপুরে পল্লী বিদ্যুতের সাবস্টেশনে দুর্ধর্ষ ডাকাতি সখীপুরে স্কুল খোলা থাকলেও নেই শিক্ষার্থী, প্রধান শিক্ষকের রুমে তালা বিজয়ের সেঞ্চুরিতে ডিপিএলে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন আবাহনী বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নয়, মা গলা টিপে হত্যা করেন শিশু মাইশাকে গরমে ঢাকার হাসপাতালে রোগীর অতিরিক্ত চাপ, শিশু ওয়ার্ডে আসন সঙ্কট প্রকট এ জে মোহাম্মদ আলীর রূহের মাহফিরাত কামনায় সুপ্রিম কোর্টে দোয়া চৌগাছায় দুর্বৃত্তের আগুনে পুড়ল কৃষকের ১ বিঘা জমির পানের বরজ সেলফি তুলতে চাওয়ায় ভক্তের ওপর চটেছেন সাকিব, চেপে ধরলেন ঘাড় টিভি চ্যানেলের অবৈধ সম্প্রচার বন্ধে কার্যক্রম শুরু যেখানে অবৈধ পাথর খনির মিহি গুঁড়াতে ভরে ওঠে ফুসফুস শিবপুরে গৃহবধূর আত্মহত্যা : স্বজনদের দাবি হত্যা, স্বামী আটক

সকল