১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলকদ ১৪৪৫
`


ইরানের টার্গেট ছিল যুক্তরাষ্ট্রের চারটি দূতাবাস!

-

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরানের শীর্ষ জেনারেলকে যখন হত্যা করা হয় তখন চারটি মার্কিন দূতাবাসে হামলার পরিকল্পনা করছিল তেহরান।

যখন ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে কোনো ধরণের হুমকি শুক্রবারের ড্রোন হামলার পেছনে কাজ করেছে তখন তিনি বলেন, "আমি এইটুকু বলতে পারি যে, আমার বিশ্বাস এটা হয়তো চারটি দূতাবাস ছিল।"

বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসের বাইরে কয়েক দিন ধরে বিক্ষোভের পর জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যা করা হয়।

কিন্তু ড্রোন হামলা সম্পর্কে ডেমোক্রেটরা যে গোয়েন্দা তথ্য দিয়েছে তাতে তারা বলেছে যে দূতাবাসে হামলার পরিকল্পনার কোনো প্রমাণ পায়নি তারা।

বৃহস্পতিবার ট্রাম্প দূতাবাসে হামলার পরিকল্পনার অভিযোগ প্রথমে হোয়াইট হাউসে আনেন। পরে তিনি সেদিন রাতে ওহাইয়োতে একটি র‍্যালিতে গিয়ে আবারো একই অভিযোগ করেন। তার এই অভিযোগে সমর্থন দেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও।

"আমাদের কাছে আসন্ন হামলার হুমকির সুনির্দিষ্ট তথ্য ছিল এবং এই হুমকির মধ্যে মার্কিন দূতাবাসগুলোও ছিল," ইরানের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার সময় তিনি এসব কথা বলেন।

৬২ বছর বয়সী সোলাইমানি মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের সব কর্মসূচির মূল হোতা ছিলেন। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সিরীয় সরকারের লড়াই এবং ইরাকে ইরানপন্থী আধা সামরিক বাহিনীর উত্থানেরও কারিগর ছিলেন তিনি।

ট্রাম্প এবং পম্পেও দাবি করেছেন, হাজার হাজার মৃত্যুর জন্য দায়ী ছিলেন তিনি।

শুক্রবার মার্কিন গণমাধ্যমে বলা হয়, গত ৩ জানুয়ারি ইয়েমেনে বসবাসরত গুরুত্বপূর্ণ ইরানি কমান্ডার এবং অর্থায়নকারী আব্দুল রেজা শাহলাইকেও টার্গেট করেছিল মার্কিন বাহিনী।

তারা বেনামী এক মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলে, গোপন ওই মিশনে মারা যাননি ওই কমান্ডার। তবে ইয়েমেনে অভিযান চালানোর বিষয়ে এখনো সরাসরি কোনো মন্তব্য করেনি ওয়াশিংটন।

ট্রাম্প কী বলেছেন?
গত বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে পরিবেশ বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে ট্রাম্প প্রথমবার মন্তব্য করেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তিনি হামলার অনুমোদন দিয়েছেন কারণ ইরান "আমাদের দূতাবাসগুলো উড়িয়ে দিতে চেয়েছিল।"

তিনি আরো বলেন, এটা "নিশ্চিত" যে, "বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসে বিক্ষোভকারীরা যে হামলা চালিয়েছিল সোলাইমানির মৃত্যুর কয়েক দিন আগে ইরানই তার আয়োজন করেছিল।"

"আর আপনারা জানেন যে কে এটা আয়োজন করেছিল। সেই ব্যক্তি এখন আর কোথাও নেই। ঠিক আছে? আর তার পরিকল্পনায় আরো কয়েকটি নির্দিষ্ট দূতাবাসের কথা মাথায় ছিল।"

ওহাইয়োতে এক সভায় ট্রাম্প বলেন, "সোলাইমানি সক্রিয়ভাবে নতুন হামলার পরিকল্পনা করছিলেন, আর শুধু বাগদাদের দূতাবাসই নয় বরং তিনি আমাদের অন্য দূতাবাসগুলোকেও গুরুত্বের দিচ্ছিলেন।"

এদিকে ডেমোক্রেটরা অভিযোগ করেছে যে, হোয়াইট হাউস এ বিষয়ে আগে থেকে আইনপ্রণেতাদের যথাযথ প্রজ্ঞাপন দেয়নি। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প তাদের উপহাস করে বলেন, তাহলে ডেমোক্রেটরা মার্কিন সামরিক পরিকল্পনা মিডিয়ার কাছে ফাঁস করে দিত।

কী প্রমাণ রয়েছে?

ট্রাম্প মার্কিন দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভকে ইরানের পরিকল্পনার প্রমাণ বলে উল্লেখ করেছেন। যাই হোক, বাগদাদ বিমানবন্দরে সোলাইমানির গাড়ি বহরে মার্কিন হামলার আগেই সেই বিক্ষোভ শেষ হয়ে গিয়েছিল।

হাউস সশস্ত্র সার্ভিস কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডাম স্মিথ যিনি একজন ডেমোক্রেট, তিনি বুধবার হোয়াইট হাউসে আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশ্যে দেয়া এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ভবিষ্যতে মার্কিন দূতাবাসে ইরানের হামলার পরিকল্পনার কোন প্রমাণ নেই।

"আমি সব পর্যায়ের সবার সাথে কথা বলেছি, এমনকি আমি হোয়াইট হাউসেরও অনেকের সাথে কথা বলেছি, তারা কেউই এমন কিছু বলেনি," পলিটিকো-কে তিনি একথা বলেন।

"আমাকে যা বলা হয়েছে তাতে, কোনো নির্দিষ্ট টার্গেটের কথা বলা হয়নি। আমাদের কাছে যে গোয়েন্দা তথ্য ছিল তাতে কোনো নির্দিষ্ট টার্গেটের কথা উল্লেখ করা হয়নি," তিনি বলেন।

"প্রেসিডেন্টের কাছে যদি নির্দিষ্ট টার্গেটের প্রমাণ থাকে, তাহলে সেটি আমাদের জানানো হয়নি।"

ভারমন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স, যিনি নভেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রতিযোগী হবেন, তিনি বলেন, ট্রাম্পকে বিশ্বাস করা যায় না।

এনবিসি নিউজকে তিনি বলেন,"সমস্যাটি হচ্ছে, আমি অবশ্য এতটা কঠিনভাবে বলতে চাইনি, তবে আমাদের একজন প্রেসিডেন্ট আছেন যিনি অস্বাভাবিকভাবে মিথ্যা বলেন।"

"সুতরাং এটা কী সত্য হতে পারে? হয়তো পারে। কিন্তু যদি বলা হয়, এটা কি সত্য হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে? হয়তো না," তিনি বলেন।

সোলাইমানির মৃত্যু কেন হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য জরুরী হয়ে উঠলো, হোয়াইট হাউসের কাছ থেকে এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা না পেয়ে শুধু ডেমোক্রেটরাই হতাশ হয়নি।

উতাহ এর রিপাবলিক সিনেটর মাইক লি হোয়াইট হাউসের সংবাদ সম্মেলনের কড়া সমালোচনা করে একে "অপমানজনক" এবং "সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য" বলে উল্লেখ করেছেন।

তিনি সংবাদ সম্মেলনকে "ঘটনার পরের অবস্থা দ্বারা প্রভাবিত ও খোঁড়া" বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, হোয়াইট হাউস সামরিক পদক্ষেপের বিষয়ে কংগ্রেসের সাথে সমন্বয় করতে গিয়ে এর কর্মকর্তারা কারণ "সনাক্ত করতে হিমশিম খেয়েছে"।

বৃহস্পতিবার, মার্কিন পার্লামেন্টর প্রতিনিধি পরিষদ ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে ট্রাম্পের ক্ষমতা সীমিত করার পক্ষে ভোট দিয়েছে।

নতুন নিষেধাজ্ঞা

শুক্রবার, ইরানের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হোয়াইট হাউস। যার উদ্দেশ্য ইরানকে "বৈশ্বিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা থেকে প্রতিহত করা," বলেন মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্টিভ নুচিন।

তিনি বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা ইরানের অবকাঠামো নির্মাণ, উৎপাদন এবং খনি শিল্পের উপর প্রভাব ফেলবে। পম্পেও বলেন, এই নিষেধাজ্ঞার টার্গেট ইরানের "অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা যন্ত্রপাতি"।

এক বিবৃতিতে ট্রাম্প ইরানকে "বিশ্বের সন্ত্রাসবাদের নেতৃস্থানীয় অর্থায়নকারী" বলে উল্লেখ করেন এবং "ইরান রাষ্ট্র হিসেবে তাদের ব্যবহার পরিবর্তন না করা পর্যন্ত" ইরানের হুমকি মোকাবেলা করার শপথ নেন।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement
আরো ৩ জাহাজে হামলা হাউছিদের জেলেনস্কিকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে উত্তাল ইউক্রেন ‘শয়তানের নিঃশ্বাস‘ নামের যে ড্রাগ প্রতারণায় ব্যবহার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে মার্কিন বিমানবাহিনীর সদস্য নিহত পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে বিএনপির সমাবেশ শুরু টঙ্গীতে ৩ তলার ছাদ থেকে পড়ে বিএনপি নেতার ছেলের মৃত্যু মালদ্বীপ থেকে সব সৈন্য প্রত্যাহার করেছে ভারত জামিন পেলেন কেজরিওয়াল, তবে ভোটগণনার দিন থাকতে হবে জেলেই পরকীয়া প্রেমিক যুগলের গলায় জুতার মালা : চেয়ারম্যান বরখাস্ত সমাবেশে যোগ দিতে নয়াপল্টনে জড়ো হচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা রংপুরে রেয়াত পদ্ধতি চালুসহ ৪ দফা দাবিতে মানববন্ধন

সকল