০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫
`


যুক্তরাষ্ট্রের বড় কয়েকটি হত্যাকাণ্ড

টেক্সাসের এল পাসো শহরে শনিবারের হত্যাকাণ্ডের পর শোকার্ত এক শিশু ও এক তরুণ - ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের মেক্সিকো সীমান্তবর্তী শহর এল পাসোতে শনিবার এক শ্বেতাঙ্গ বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হয়েছে ২০ জন। আহত হয়েছে অন্তত ২৬ জন। এক বন্দুধকারী অত্যাধুনিক রাইফেল নিয়ে গুলি করতে করতে একটি শপিং মলে প্রবেশ করে।
যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের হত্যাকাণ্ড নতুন নয়। আধুনিক যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এ ধরনের ১০টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা উল্লেখ করা হলো। উল্লেখ্য, এই ১০ হত্যাকাণ্ডের মধ্যে সর্বশেষটি সহ ৪টি ঘটনাই দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় টেক্সাস অঙ্গরাষ্ট্রে।

হারভেস্ট মিউজিল ফেস্টিভ্যাল : নিহত ৫৮
২০১৭ সালে ১ অক্টোবর নেভাদা অঙ্গরাষ্ট্রের লাস ভেগাস শহরের হার্ভেস্ট মিউজিক ফেস্টিভ্যাল চলাকালে স্টিফেন প্যাডক(৬৪) নামের এক বন্দুকধারী একটি রিসোর্ট ও ক্যাসিনো ভবনের ৩২ তলায় আচমকা গুলি চালাতে থাকে। ওই উৎসবে তখন ২০ হাজারের বেশি লোক জড়ো হয়েছিল। হামলায় ৫৮ জন নিহত হয়, আহত হয় পাঁচ শ’র বেশি লোক। এক পর্যায়ে বন্দুকধারী আত্মহত্যা করে বলে পুলিশ ধারণা করে।

পালস নাইট ক্লাব : নিহত ৪৯
২০১৬ সালের ১২ জুন অরল্যান্ডোর একটি সমকামী নাইটক্লাবে হামলা চালায় ওমর সিদ্দিকী মতিন(২৯) নামের একজন। এতে ঘটনা স্থলেই নিহত হয় ৪৯ জন, আহত হয় পঞ্চাশের বেশি। অভিযানে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় বন্দুকধারী মতিন। মতিন জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিক। তবে তিনি আফগান বংশোদ্ভূত। মতিন চরমপন্থী সংগঠন আইএসের ভক্ত ছিলো।

ভার্জিনিয়া টেক : নিহত ৩২
২০০৭ সালের ১৬ এপ্রিল ভার্জিনিয়া অঙ্গরাষ্ট্রের ব্ল্যাকসবার্গের ভার্জিনিয়া টেক ইনস্টিটিউটেরই এক ছাত্র ক্যাম্পাসে বেপরোয়া গুলি চালায়। তার নাম শেউং হুই চো(২৩)। গুলিতে নিহত হয় ৩২ জন। এক পর্যায়ে হামলাকারীও আত্মহত্যা করে।

স্যান্ডি হুক : নিহত ২৭
২০১২ সালের ১৪ ডিসেম্বর অ্যাডাম ল্যানজা নামের ২০ বছরের এক তরুণ গুলি করে হত্যা করে ২০টি শিশু ও ৭ জন প্রাপ্তবয়স্ককে। নিহত শিশুদের সবার বয়স ৬ থেকে ৭ বছর। কানেক্টিকাট অঙ্গরাষ্ট্রের নিউ টাউনে স্যান্ডি হুক এলিমেন্টারি স্কুলে চালানো হয় এই হত্যাকাণ্ড। এক পর্যায়ে নিজেকেও হত্যা করে বন্দুকধারী। স্কুলে ঢুকে বর্বর এই হত্যাকাণ্ড চালানোর আগে বাড়িতে নিজের মা ন্যান্সি ল্যানজাকে গুলি করে হত্যা করে অ্যাডাম। পুলিশ বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে তার লাশ খুঁজে পায়।

ব্যাপ্টিস্ট চার্চ : নিহত ২৫
২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর টেক্সাসের প্রত্যন্ত সাদারল্যান্ড স্প্রিং নামের এক গ্রামের এক গির্জায় ঢুকে ২৫ জনকে হত্যা করে ডেভিন প্যাট্রিক কেলি নামের একজন। ঘটনার পর হত্যাকারীর লাশ খুঁজে পায় পুলিশ। তবে সে আত্মহত্যা করেছে নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে সেটি জানা যায়নি। এটিই টেক্সাসের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হত্যাকাণ্ড।

লুবিস ক্যাফেটেরিয়া : নিহত ২৩
১৯৯১ সালের ১৬ অক্টোবর টেক্সাসের কিলেন শহরে জর্জ হেনার্ড নামের এক ড্রাইভার ইচ্ছেকৃত একটি পিকআপ ভ্যান উঠিয়ে দেয় একটি ক্যাফেটেরিয়ার মধ্যে। এরপর গাড়ি থেকে নেমে গুলি করে হত্যা করে ২৩ জনকে। শেষে নিজেকেও শেষ করে দেয় ৩৫ বছর বয়সী হেনার্ড।

ম্যাকডোনাল্ড হত্যাকাণ্ড : নিহত ২১
১৯৮৪ সালের ১৮ জুলাই পশ্চিমাঞ্চলীয় ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাষ্ট্রের স্যান সিডরো শহরে জেমস হুবার্টি নামের এক লোক লম্বা ব্যারেলের সাব মেশিন গান উজি, একটি শট গান ও একটি হ্যান্ডগান দিয়ে পর্যায়ক্রমে গুলি করে হত্যা করে ২১ জনকে। ঘটনার পর তাকে খুঁজে দূর থেকে হত্যা করে মার্কিন পুলিশরে এক শুটার। ওই হামলায় নিহতদের মধ্যে কয়েকটি শিশুও ছিলো।

ওয়ালমার্ট : নিহত ২০
হতাহতের সংখার দিক থেকে এরপরেই অবস্থান সর্বশেষ শনিবারের হত্যাকাণ্ডের। এতে প্রাথমিকভাবে নিহতের সংখ্যা ২০ জন বলে জানা গেছে। তবে আহত অনেকের অবস্থা গুরুত্বর। তাই নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে। গুলি চালানোর সময় শপিং মলটির ভেতরে ৩ হাজার দোকানদার ও একশ মার্কেট স্টাফ ছিলো।

ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস : নিহত ১৮
১৯৬৬ সালে চার্লস জে হোয়াইটম্যান নামের সাবেক এক নৌ সেনা অস্টিন নগরীর একটি টাওয়ার থেকে ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের ক্যাম্পাস লক্ষ্য করে গুলি চালায়। ১৬ জনকে হত্যা করে সে। এতে আহত হয় অন্তত ৩০ জন। এই ঘটনার আগে বাড়িতে নিজের স্ত্রী ও মাকে গুলি করে হত্যা করে বন্দুকধারী। পরে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় সে।

পার্কল্যান্ড : নিহত ১৭
২০১৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি একটি স্কুলে ঢুকে হত্যাকাণ্ড চালায় স্কুলেরই সাবেক এক ছাত্র। শৃঙ্খল ভঙ্গের কারণে তাকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। যার কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে সে এই হত্যাকাণ্ড চালায়। সিএনএন


আরো সংবাদ



premium cement