২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সুনামগঞ্জের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৩ হাজার একশ’ পরিবার

সুনামগঞ্জের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৩ হাজার একশ’ পরিবার - নয়া দিগন্ত

সুনামগঞ্জে টানা বৃষ্টিপাতে ও পাহাড়ি ঢলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া জেলার কুশিয়ারা,খাসিয়ামারা, যাদুকাটা,পাটলাই, রক্তিসহ বিভিন্ন নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নদীর তীরবর্তি বাড়িঘর ও হাওর পাড়ের বাড়ি ঘরে ডেউয়ের আগাতে ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে। আর সরকারি হিসাবে বন্যায় সুনামগঞ্জের প্রায় ১৩ হাজার ১০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিক ভুইয়া জানান, বর্তমানে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গেল ২৪ ঘণ্টায় ১৬৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রের্কড করা হয়েছে। আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে এই বৃষ্টি আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকার আশঙ্কা রয়েছে।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর জেলার সকল মসজিদে বিশেষ মোনাজাতের জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার অনুরোধ করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ। এছাড়াও সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারি কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক কর্মস্থলে থাকার এবং আশ্রয়কেন্দ্র গুলো সব সময় খোলার রাখার নির্দেশনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের জরুরি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, টানা বৃষ্টিপাতে সুনামগঞ্জের ১৩ হাজার একশ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মধ্যে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় ২৯৫০, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ১৪০০, তাহিরপুর উপজেলায় ৪১০০, দোয়ারাবাজার উপজেলায় ২৮৫০ এবং জামালগঞ্জ উপজেলায় ১৮০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত এসব পরিবারের সহায়তায় জন্য সুনামগঞ্জ সদর,তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, জামালগঞ্জ, দোয়ারাবাজার উপজেলায় ৫০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। অন্যদিকে জেলায় ১২৩৫ প্যাকেট শুকনা খাবার এবং ২০০ মেট্রিক টন চাল মজুদ রাখা হয়েছে।

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের পানিতে বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে চরম দুর্ভোগে পড়েছে হাওড়বাসী। আমি প্রতিদিনেই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নৌকা করে স্বেচ্ছাসেবী কর্মীদের নিয়ে বন্যা আক্রান্ত হাওরপাড় ও মেঘালয় সীমান্তের বন্যায় আক্রান্ত ক্ষতিগ্রস্ত শতাধিক পরিবারের মধ্যে চিড়া, গুড় ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরী করে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া হবে। অসহায় পানি বন্দী মানুষগুলোকে বাঁচাতে ত্রানের পরিমান আরো বাড়াতে তিনি সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের নিকট দাবি জানিয়েছেন।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ জানান,বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় খাবার পৌঁছে দিয়েছি। তাছাড়া জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় ৫হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার ও ৩শ মেট্রিক টন চালের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছি। 


আরো সংবাদ



premium cement