২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জেলখানায় জায়গা নেই, কাশ্মিরে তাই ‘ডেইলি ডিটেনশন’

-

প্রতিবাদ ঠেকাতে কাশ্মিরে অভিনব এক পদ্ধতির গ্রেফতার শুরু করেছে ভারতীয় বাহিনী। গত ৫ আগস্টের পর থেকে দেড় হাজারের বেশি সাধারণ যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে সেখানে। তবে এর বাইরেও অনেককে নিয়মিত হাজির হতে হয় পুলিশ স্টেশনে, তারা যে কোন ধরনের বিক্ষোভের সাথে জড়িত সেই সেকথা প্রমাণ করতে এই ব্যবস্থা। দিনের বেলা পুলিশ স্টেশনে কাটিয়ে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরেন তারা।  জেলখানায় জায়গা না হওয়ায় তাদের স্থায়ীভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে না।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম দ্য হিন্দু জানিয়েছে, শ্রীনগর পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের তথ্য অনুযায়ী গত কয়েক সপ্তাহে দেড় হাজার তরুণকে তুলে নেয়া হয়েছে এবং তাদের আবার ছেড়েও দেয়া হয়েছে একটি সময় পরে। নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর পাথর ছোড়ার ঘটনা বৃদ্ধির পর এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

দ্য হিন্দুর প্রাপ্ত তথ্য মতে, মূল ধারার রাজনীতিকসহ এক হাজার ১৮৫ জনকে আটক করা হয়েছে ৫ আগস্টের পর থেকে। যাদের মধ্যে আছেন বিভিন্ন দলের বড় নেতারা। আর সব মিলে প্রথম তিন সপ্তাহেই আটক করা হয়েছে ৩ হাজার ২০০ জনকে।

কিন্তু এর বাইরেও দেড় হাজার যুবককে ‘রিভলবিং ডোর’ অ্যারেস্টের অধীনে রাখা হয়েছে। পুলিশের ভাষায় যারা আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করতে পারে বলে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

শীর্ষস্থানীয় এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘স্থায়ী আটকের বাইরেও ব্যাপক সংখ্যক যুবককে এক দিন থেকে দুই সপ্তাহ পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে আটক রাখা হয়েছে। এই গ্রেফতার ও মুক্তি প্রতিদিন চলে। প্রতিদিনের এই গ্রেফতার অভিযান একটি ধারবাহিক প্রক্রিয়া।

পুলিশ জানায়, কাশ্মির উপত্যকার জেলখানায় পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় প্রতিদিন গ্রেফতার ও মুক্তির এই পদ্ধতি চলে। এত সংখ্যক মানুষকে গ্রেফতার করা হয় যে, স্বাধীনতাকামীসহ অনেক বন্দীকে উত্তর প্রদেশ, হরিয়া ও দিল্লির জেলখানায় স্থানান্তরের পরও জায়গার সাংকুলান হয় না।

জম্মু ও কাশ্মির সরকারের মুখপাত্র রোহিত কানসাল গ্রেফতারকৃততের সংখ্যার বিষয়ে তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান।

সৌরা এলাকার বাসিন্দা আকরাম খান(ছদ্মনাম) জানান, আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে মাগরিবের নামাজ শেষে ঘরে ফেরার পথে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেদিন ওই এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছিল।

তিনি জানান, আরো অনেক যুবকের মতো গ্রেফতারের পর থেকে তাকে রোজ দিনের বেলায় গিয়ে পুলিশ স্টেশনে থাকতে হয়। যদিও তার বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই।

তার এক নিকটাত্মীয় বলেন, ‘তাকে বলা হয়েছে প্রতিদিন সকালে সৌরা পুলিশ স্টেশনে যেতে হয়, সারাদিন সেখানে থেকে সন্ধ্যা ৭টায় বাড়ি ফেরার অনুমতি পায়। সংঘর্ষের সাথে জড়িত নয় সেটা প্রমাণ করতে তাকে এটি করতে হয়। শুধু তার বিষয় হয়, পুরো পরিবারকেই এই ব্যবস্থা মেনে নিতে হয়েছে। এ যেন প্রতিদিন জাহন্নামে বসবাস।

পুলিশ বলছে, নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর পাথর ছোড়ার ঘটনা এড়াতেই এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement