২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পাকিস্তান গুলি ছুড়লেই গোলা ছুড়বে ভারত : অমিত শাহ

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আবারো হুমকি দেন অমিত শাহ - ছবি : সংগৃহীত

ভারতে লোকসভা নির্বাচন চলছে। আজ সেখানে তৃতীয় দফায় ভোটগ্রহণ চলছে। আরো বাকি আছে চার দফা। মোট সাত দফা ভোট গ্রহণের পর ঠিক এক মাস পর ২৩ মে ফল ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ভারতে।

নির্বাচন যেহেতু বাকি আছে, তাই সেখানে চলছে প্রচারণা। আর ভারতের নির্বাচনী প্রচারণাতে সব সময়ই বাড়তি উত্তেজনা যোগ করে পাকিস্তান প্রসঙ্গ। বিজেপি এ বিষয়ে কংগ্রেসের তুলনায় বেশি সিদ্ধ হস্ত। তাই তো আবারো পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ।

গতকাল সোমবার পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে এক নির্বাচনী জনসভায় অমিত শাহ বলেন, এখন থেকে পাকিস্তান গুলি ছুড়লেই গোলা ছুড়বে ভারত। দেশের সুরক্ষার জন্যই তারা এ কৌশল নিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।

অমিত শাহ বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদি দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই দেশের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার কাজ শুরু হয়েছে। আগে ইউপিএ সরকার ছিল, মমতাও তাদের সমর্থন করেছিলেন। সে সময় পাকিস্তান থেকে মানুষ এদেশে ঢুকে যেত। তারা আমাদের সেনাদের গলা কেটে নিয়ে যেত কিন্তু কেউ তার কোনো প্রতিবাদ করতো না। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি পাল্টেছে। সন্ত্রাসবাদীদের উচিত শিক্ষা দেয়া হচ্ছে।

কাশ্মিরের পুলওয়ামার হামলার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, পুলওয়ামায় সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে, তাতে আমাদের ৪০ আধা-সামরিক সেনা নিহত হয়েছেন। ওই ঘটনার পরই পাকিস্তানে গিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করে এসেছে।

এরপরই স্থানীয় মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে বিজেপি সভাপতি বলেন, কিন্তু মমতা দিদির সেটা ভালো লাগেনি। ওরা কি মমতা দিদির চাচাতো-মাসতুতো ভাই হয় নাকি? আপনার এত কষ্ট হচ্ছে কেন? কংগ্রেস, বামেরা, মমতা সকলেই বলতে শুরু করলো পাকিস্তানে বোমা ফেলবেন না, জঙ্গিদের মারবেন না। ওদের সাথে আলোচনা করুন।

সমাবেশে অমিত শাহ জনগণকে প্রশ্ন করেন, আপনারাই বলুন, আমাদের ৪০ জনকে হত্যা করলো তাদের সাথে সংলাপে বসা উচিত না বোমা ফেলা উচিত?

এরপরই তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদির সরকার-পাকিস্তান থেকে গুলি আসলে এখান থেকে গোলা যাবে। ইটের জবাব পাথর দিয়ে দেয়া হবে। এটাই আমাদের সংকল্প। ভারতের সুরক্ষার জন্য ভোট ব্যাঙ্ক রাজনীতির সাথে কোনো আপস করা হবে না।

 

আরো পড়ুন : পাল্টা হামলা শুরু করেছে পাকিস্তান
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৮:০৬

পাকিস্তানে হামলা চালানোর দাবি করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ভারতে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। আজ বুধবার সকালে ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরের রাজৌরি জেলার নওসেরা সেক্টরে হামলা চালায় পাকিস্তানের চারটি যুদ্ধবিমান। তারা সেখানে বোমা হামলা চালিয়ে দেশে ফিরে যায় বলে জানিয়েছে ভারতীয় সূত্রগুলোই।

ভারতের সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, বুধবার সকালে রাজৌরি জেলার নওশেরা সেক্টরের লাম উপত্যকায় প্রবেশ করে মার্কিন প্রযুক্তিতে তৈরি পাকিস্তান বিমানবাহিনীর চারটি এফ-১৬ বিমান। সেখানে তারা পুঞ্চ এবং রাজৌরি সেক্টরে বোমা বর্ষণ করে। একটি সেনাশিবিরের কাছেও তারা বোমা বর্ষণ করে। এরপর তারা ফিরে যায়।

ভারত দাবি করছে, তাদের প্রতিরোধের মুখেই তিনটি বিমান ফিরে যায় এবং একটিকে গুলি করে নামানো হয়। তবে পাইলটের ব্যাপারে তারা জানায়, বিমান থেকে ঝাপিয়ে ওই পাইলট নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

এদিকে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানেরও যে আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে তা বোঝাতেই এ হামলা চালানো হয়েছে। এছাড়া এ হামলার পেছনে তাদের অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই বলেই তারা প্রকাশ্যে এ হামলা চালিয়েছে। অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকলে তারা এভাবে হামলা চালাতো না।

ভারতের পক্ষ থেকে হামলার দাবি করার পরপরই ইসলামাবাদ জানিয়েছিল, তাদের আত্মরক্ষার অধিকার আছে এবং যথোপযুক্ত সময়েই তা করা হবে।


ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়, পাকিস্তান হামলা করতে চায় না। শান্তি ও সমৃদ্ধি চায়। কিন্তু ভারত যদি হামলা চালায় তাহলে তাদেরকে তা ফিরিয়ে দেয়া হবে।

দুইটি বিমান ভূপাতিত করার দাবি পাকিস্তানের
ইসলামাবাদ দাবি করছে, পৃথক এক হামলায় পাকিস্তান বিমানবাহিনী ভারতীয় বিমানবাহিনী দুটি যুদ্ধবিমানকে গুলি করে ভূপাতিত করেছে। এ সময় তারা একজন পাইলটকে গ্রেফতার করে। দুই দেশের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর হামলা চালিয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনীর এ ক্ষয়ক্ষতি করা হয় বলে দাবি করেছে পাকিস্তান।

বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি
এদিকে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে হামলার আশঙ্কায় জম্মু কাশ্মীরে এবং লেহ-তে বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত। পাকিস্তান সীমান্তের কাছে হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বাণিজ্যিক বিমানের ক্ষেত্রেও একই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এ দিকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে শ্রীনগর বিমানবন্দরে বেসামরিক বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আপাতত আট দিনের জন্য এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। ফলে বহু বাণিজ্যিক বিমান বাতিল হয়েছে। আপাতত শ্রীনগর বিমানবন্দরে শুধুমাত্র ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিমান ওঠানামা করবে। লেহ, জম্মু, পাঠানকোটেও বিমানবন্দরে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।

পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলায় সিআরপিএফের ৪৯ সদস্য নিহত হওয়ার পর দেশের ভেতর পাকিস্তানবিরোধী অবস্থান বেশ জোরালো হয়ে ওঠে। নির্বাচনকে সামনে রেখে এ ইস্যুটি স্বাভাবিকের চেয়ে বড় আকার ধারণ করে। এছাড়া সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে এ হামলার জন্য দায়ী করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি ওঠে। ভারত প্রথম আন্তর্জাতিকভাবে পাকিস্তানকে একঘরে করে ফেলার চেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু তাতে ব্যর্থ হওয়ার পর পুলওয়ামা হামলার ১২দিন পর এ প্রতিক্রিয়া জানায় ভারত।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, মঙ্গলবার রাত সাড়ে তিনটায় সীমান্ত পেরিয়ে হাজার কিলো বোমা ফেলে পাকিস্তানের কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর বহু সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। ২১ মিনিটের এ হামলায় জয়েশ-ই মোহাম্মদ, লস্কর-ই-তৈয়বা এবং হিজবুল মুজাহিদিনের তিনটি ঘাঁটি তছনছ করা গিয়েছে। কিন্তু ভারতের এই সমস্ত দাবি কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে পাকিস্তান। বলেছে, পাকিস্তানের নিরাপত্তাবাহিনীর তাৎক্ষণিক প্রতিরোধে তারা পালিয়ে যায়। ভারত যেখানে সীমান্তের ৭০-৮০ মাইল ভেতরে ঢুকে হামলার দাবি করেছে, সেখানে পাকিস্তান বলছে, সীমান্তের ভেতর তিন-চার মাইল ঢুকতেই তাদের প্রতিরোধ করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement