২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যুদ্ধবিমানে ব্যাপক উন্নতি করেছে তুরস্ক

যুদ্ধবিমানে ব্যাপক উন্নতি করেছে তুরস্ক - ছবি : সংগৃহীত

২০২৩ সালের মধ্যে আকাশে উড়বে তুরস্কের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি প্রথম পাইলটবিহীন যুদ্ধবিমান। আনুষ্ঠানিকভাবে এই যুদ্ধবিমানের নাম এখনো ঠিক করা হয়নি। তুরস্কের সেনাবাহিনীকে এই বিমান সরবরাহ করবে এই প্রযুক্তিতে বিশ্ববাজারে নেতৃত্ব দেয়া বাইকার মাকিন নামক ইউএভি বা ড্রোন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি এই প্রতিষ্ঠানটি তুরস্কের জন্য প্রথমবারের মতো পাইলটবিহীন যুদ্ধবিমান তৈরির প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

বর্তমানে তুরস্কের অভ্যন্তরীণ ও জাতীয় প্রযুক্তি বিভাগ প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে নতুন নতুন যুদ্ধবিমান তৈরির প্রকল্প হাতে নিয়েছে। পাইলটবিহীন যুদ্ধবিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বাইকার মাকিনের প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা সেলসুক বাইরাক্তার বলেন, ‘গতানুগতিক যুদ্ধের দিন শেষ। আর এই জন্যই আমাদের প্রতিষ্ঠান পাইলটবিহীন যুদ্ধবিমান তৈরির পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। ২০২৩ সালের মধ্যে প্রথম যুদ্ধবিমান আকাশে ওড়াতে সক্ষম হবো বলে আমরা আশা করছি।’

বাইরাক্তার আরো বলেন, ‘তুরস্কের জন্য বিরাট ব্যয়বহুল প্রযুক্তির উন্নয়ন করা খুবই অস্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু প্রতিরক্ষা শিল্পে সবাই বিরাট উন্নতি দেখতে চায়।

আরো পড়ুন :

ঝুঁকিমুক্ত এরদোগান, আরো উন্নত হবে তুরস্ক
সাবাহ, আনাদোলু ও বিবিসি

তুরস্কের অবস্থান এমন এক জায়গায় যে এর নেতা কে হচ্ছেন তার বৈশ্বিক গুরুত্ব আছে। কারণ তার একদিকে ইউরোপ, অন্য দিকে ইরাক আর সিরিয়ার সীমান্ত। এর মধ্যে বৃহৎ মুসলিম বিশ্বের এক নেতৃস্থানীয় দেশ তুরস্ক পশ্চিমা বিশ্বেরও এক গুরুত্বপূর্ণ মিত্র, নেটো জোটের সদস্য।

তুরস্ক ইউরোপীয় ইউনিয়নেরও সদস্য পদপ্রার্থী। তুরস্কের সেনাবাহিনী নেটো জোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাহিনী। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ, কুর্দি সমস্যা, ইরাক-সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই, অভিবাসী সংকট - ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে তুরস্কের ভুমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এ নির্বাচনে জয়ী হলে এরদোগান আরো ক্ষমতাধর হয়ে উঠবেন। আর যদি তা না হয় তাহলে তুরস্ক রাষ্ট্রের গতিপথই বদলে যেতে পারে। এরদোগান এখনো বিপুলভাবে জনপ্রিয়। তাই নির্বাচনের ফল যখন আসতে শুরু করবে, তখন সংশয়বাদীরা ভুল প্রমাণিত হতে পারেন।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ‘সেন্টার ফর আমেরিকান প্রগরেস’ এর পরিচালিত একটি জরিপে ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছিল। যেখানে দেখানো হয়েছিল, এরদোগানের একে পার্টি এবং জাতীয়তাবাদী এমএইচপি জোট সুস্পষ্টভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাচ্ছেন।  এরদোগানের একে পার্টি কিংবা জাতীয়তাবাদী এমএইচপি’র পক্ষে ৪২.৬ শতাংশ ভোটার তাদের ভোট প্রদানের পরিকল্পনা করছেন।

জরিপের এই ফলাফল মিথ্যা হলে তা এরদোগানের জন্য একটি বড় বিজয়। আর সত্য হলে এরদেগোনকে আরেকটি দলের সমর্থন নেয়া এবং ক্ষমতায় থাকার জন্য জোট গঠন করতে হবে। চারটি প্রধান বিরোধী দল- সিএইচপি, আইয়ি, এসপি এবং ডিপি- একত্রে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তারা একত্রে এখনো পর্যন্ত ৩২.৮ শতাংশ ভোট পাচ্ছেন বলে জরিপে দেখানো হচ্ছে। অন্যদিকে, কুর্দি সমর্থিত ও এরদোগান বিরোধী ‘এইচডিপি’ পার্লামেন্টে প্রবেশের জন্য বাধ্যতামূলক ১০ শতাংশ ভোট পেতে যাচ্ছেন বলে দেখানো হয়েছে।

তুরস্কে প্রেসিডেন্ট ও সংসদ নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বিনালি জিলদ্রিম। ইজমিরের এইজিয়ান প্রদেশে রোববার তিনি ভোট প্রয়োগ করেন। নিজ প্রদেশ এইজিয়ানের বাহার জিলদ্রিম এলিমেন্টারি স্কুলের কেন্দ্রে তিনি ভোট দেন। ভোট দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, তুরস্ক নতুন লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাবে। নতুন সরকার পদ্ধতির সঙ্গে অবশ্যই বর্তমান সরকারই খাপ খাইয়ে নিতে পারবে। নির্বাচনের ফলে এ দেশ আরও উন্নত হবে। 

প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যেপ এরদোগান রোববার ইস্তাম্বুলের একটি কেন্দ্রে ভোট দিয়ে বলেন, তুরস্কজুড়ে ভোটদানের হার ভালো। গণতান্ত্রিক পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। 

মুহাররম ইঞ্জে বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘যদি এরদোগান জেতে, তাহলে তোমার ফোনে আড়িপাতা চলবে, ভয়ের রাজত্ব অব্যাহত থাকবে। আর যদি ইঞ্জে জেতে, তাহলে আদালত হবে স্বাধীন।’ 

বিরোধীদের অভিযোগ, এরদোগানের সময়ে গণতন্ত্র ও মানুষের মৌলিক স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হয়েছে। এরদোগান ‘বিভেদকামী’ বলেও মনে করেন বিরোধীরা। তারা বলেন, এরদোগান জয়লাভ করলে ‘এক ব্যক্তির শাসন’ কায়েম হবে। শেষ নির্বাচনী প্রচারে ইঞ্জের সমালোচনা করে এরদোগান বলেন, ‘পদার্থবিজ্ঞানের মাস্টারি করা এক জিনিস আর দেশ চালানো আরেক জিনিস। প্রেসিডেন্ট হতে গেলে অভিজ্ঞতা লাগে।’

এই প্রথমবারের মতো তুরস্কে প্রেসিডেন্ট এবং পার্লামেন্ট নির্বাচন একসাথে অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ সময় রোববার রাত ৮টায় ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হওয়ার পর চলছে গণনা। প্রেসিডেন্ট এবং পার্লামেন্ট মিলিয়ে গড়ে ভোট পড়েছে ৮০ শতাংশ। তুরস্কের রাস্ট্রীয় সম্প্রচার কেন্দ্র (টিআরটি)’র পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট পরেছে ৮৬.৮২ শতাংশ আর পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৮৭ শতাংশ।

এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তুরস্কে ২০ শতাংশ ভোট গণনা করা হয়েছে। এতে দেখা যায় ৫৯.৩ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে আছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান। প্রধান বিরোধী প্রার্থী ইনস পেয়েছেন ২৬.৪ শতাংশ আর এইচডিপি নেতা সেলাহাত্তিন ডেমরিতাস পেয়েছেন ৫.৫ শতাংশ ভোট। রোববার তুরস্কের ৮১ টি প্রদেশে একযোগে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। এরআগে গত ৭ জুলাই থেকে বিদেশে অবস্থানরত এবং প্রতিবন্দীদের জন্য বিশেষ ভোটের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।


আরো সংবাদ



premium cement