২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আফগানিস্তানে জিরগার নির্বাচন ও শর্ষেফুল

আফগানিস্তানে জিরগার নির্বাচন ও শর্ষেফুল - ছবি : সংগৃহীত

আফগানিস্তানে নির্বাচনের আগেই লয়া জিরগার এক প্রার্থী সদস্য, হাজী মোহাম্মদ দাউদকে হত্যা করা হয়েছে। গজনিতে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় যখন খোদ প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি গজনি সফর করছিলেন। বলা যায়, এটি তার জন্য আরেকটি সতর্কবার্তা। দাউদকে বেধড়ক মারধর করে পরে হত্যা করা হয়েছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করতে দাউদকে বলা হয়েছিল। কিন্তু এতে কর্ণপাত না করায় তাকে প্রাণ দিতে হলো। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এটি তালেবানের কাজ।

সংসদের নিম্নকক্ষকে আফগানরা ওয়লসি জিরগা বলে ডাকে। হাজী দাউদ ওয়লসি জিরগার সদস্য পদে লড়াই করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। চলতি অক্টোবরের ২০ তারিখ এই নির্বাচন। এবার নানগারহার প্রদেশে একটি নির্বাচনী প্রচারণায় আত্মঘাতী হামলায় ১৩ জন নিহত ও ২৫ জন আহত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, এ হামলায় পাঁচ প্রার্থী নিহত হয়েছেন। দেশের বিভিন্ন প্রদেশে সহিংসতা ও খুনের আতঙ্ক জনগণকে ভীতিকর অবস্থায় ফেলেছে। অনেকেই শঙ্কিত যে, তালেবান নিয়ন্ত্রিত এলাকায় আদৌ কোনো নির্বাচন বা ভোটাভুটি হবে কি না।

এ ধরনের হত্যাকাণ্ড আফগানিস্তানে এখন ব্যাপক, বলতে গেলে নিয়মিত। এমন কোনো দিন নেই যেদিন কোনো-না-কোনো সরকারপন্থী লোক, পুলিশ-সেনা এবং বিদেশী সেনারা প্রাণ দিচ্ছে। লয়া জিরগা বা সংসদ নির্বাচনে যারা অংশ নেবেন তারা নিজ এলাকা ও শহর বিলবোর্ড, ছবি, পোস্টার ইত্যাদিতে ছেয়ে ফেলেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও আর ছবি পোস্ট করছেন। আফগানিস্তানের জিরগায় ২৪৯টি আসনে লড়াই করছেন দুই হাজার ৫০০ জন। এর মধ্যে ৪০০ জন মহিলা, যা বলতে গেলে অভাবনীয়। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া মহিলারা সবসময় আফগানিস্তানের এসব নির্বাচন থেকে দূরে ছিলেন।

তালেবান শাসনের পর প্রথম ২০০৫ সালে এবং দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১০ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আফগান নির্বাচনে প্রার্থীদের অনেক নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। যেমন- নিরপেক্ষতা : প্রার্থীকে জনস্বার্থবিষয়ক সব ইস্যুতে নিরপেক্ষ থাকতে হয়, সভামঞ্চ, জাতীয় ও প্রাইভেট মিডিয়ায় নিরপেক্ষ থাকা জরুরি, নির্বাচনী প্রচারে স্বচ্ছতা থাকা চাই, তহবিলের সূত্র প্রকাশ করতে হয় এবং সব প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগের দ্বার উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে ৬০ জনকে আগাম নির্বাচনী প্রচারের জন্য ৩০ হাজার থেকে এক লাখ মুদ্রা জরিমানা করেছে। সোস্যাল মিডিয়ায় পোস্টিং দিয়ে আফগানিস্তানে নৃতাত্ত্বিক, উপজাতীয় ও ভাষা সংক্রান্ত বিরোধ উসকে দেয়া যায়। এদিকে কাবুলের অনেক বাসাবাড়ির মালিক দেয়ালে ছবি লাগানোর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। অনেক প্রার্থী এরই মধ্যে শিশুদের ভাড়া করে ছবি ও ব্যানারসহ জমকালো মিছিল করেছেন। সময়ের আগে এসব কাজ আইনে অনুমোদিত নয়। তবে উপজাতীয় এলাকায় নির্বাচনী জোয়ার বেশ ভালোভাবেই শুরু হয়েছে। মহিলারাও পিছিয়ে নেই। আনিসা বেগম একজন উপজাতি প্রার্থী। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, তাজিকসহ সংখ্যালঘুদের অধিকারের জন্য লড়বেন। অপর এক প্রার্থী আজমল বালুচজাদা বলেছেন, ‘মেয়েদের অধিকারের জন্য লড়ব;’ ‘সমাজে সবার জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে চাই।’ তিনি কিছু প্রার্থীর সমালোচনা করে বলেন, নির্বাচনী প্রচার না যেন সাধারণের কাছে উপদ্রবে পরিণত না হয়। জোর করে মানুষের বাড়িঘরে এবং রাস্তায় ব্যানার ও ছবি টানানোর প্রথা বন্ধ করা উচিত।

এই নির্বাচন অনেক প্রতীক্ষিত, তথাপি নির্বাচন নিয়ে অনেক সংশয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো নিরাপত্তাহীনতা। এজন্য অনেক ভোটকেন্দ্র বাতিল ঘোষণা করতে হয়েছে। এই ভোটদাতাদের অনেক দূরে গিয়ে অন্য কোনো কেন্দ্রে ভোট দিতে হবে। সব মিলিয়ে পাঁচ হাজার ১০০টি ভোটকেন্দ্র ঠিক করা হয়েছে এবং আফগান নিরাপত্তা বাহিনী ও সেনাবাহিনীর ৫৪ হাজার ৭৭৬ জন সদস্যকে এর নিরাপত্তায় নিয়োজিত করা হবে। সেনাসদস্যদের ভোটের পাঁচ দিন আগেই এ কাজে পাঠানো হবে। এর বাইরে, সেনাবাহিনীর ৯ হাজার ৫৪০ সদস্যের একটি রিজার্ভ বাহিনীও গঠন করা হয়েছে। দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ‘নির্বাচনী জালিয়াতি’। সরকার ও নির্বাচন কমিশন ‘বায়োমেট্রিক পদ্ধতি’ ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আফগানিস্তানের ইতিহাসে নির্বাচনে টেকনোলজির ব্যবহার এটাই প্রথম। এই টেকনোলজি ব্যবহার নিয়ে আফগানরা ভীতি ও সংশয়ের মধ্যে আছে।

বয়স্ক বিপুল জনসংখ্যা টেকনোলজি বোঝে না। এখন টেকনোক্রেটরা কোনো কারচুপি করলে তা ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্ম দেবে। কেননা সরকারের প্রতি সাধারণ জনগণ ও তালেবান সমর্থিতদের আস্থা নেই। তারা মনে করে গনি সাহেব ‘তৈল মর্দন’ করে ওয়ার লর্ডদের নিয়ে ক্ষমতায় টিকে আছেন। জনসাধারণ, তালেবান আর আইএস বিশ্বাস করে যে, প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি ‘আমেরিকার পুতুল’।

গনি আস্তে ধীরে নির্বাচন করতে এবং ক্রমেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চাচ্ছেন। কিন্তু সাহায্যকারী দেশগুলো নির্ধারিত সময়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে চায়। জিরগার নির্বাচন যেন কোনো কারণে বিলম্বিত না হয়, সেটাই পশ্চিমাদের কামনা। অথচ সরকার এখন এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। না তালেবানদের সাথে কোনো শান্তি আলোচনা হয়েছে না শান্তি আলোচনায় কোনো অগ্রগতি হয়েছে। সাহায্যকারী দেশগুলো ২০১৮ সালের লয়া জিরগার নির্বাচন এবং ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ১০০ মিলিয়ন ইউরো দিয়েছে।

আফগান নির্বাচনে ভোটার রেজিস্ট্রেশন একটি জটিল ও জরুরি বিষয়। এবার রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ভোটাররা যেকোনো স্থানে ভোট দিতে পারবেন। এসব ভোটার রেজিস্ট্রেশন কার্ডগুলো ২০০১ সালে তৈরি করা। এর পরও কিছু ভোটার রেজিস্ট্রেশন কার্ড বিতরণ করা হয়েছে, সব মিলে যার সংখ্যা ২০ মিলিয়নের বেশি। কিন্তু হিসাব মতে, ভোটারের সংখ্যা হবে ১২ মিলিয়নের ওপর। অল্প সময়ে এসব কার্ড বাতিল করে নতুন কার্ড দেয়া নির্বাচন কমিশনের সাধ্যের বাইরে। তাই ধারণা করা হচ্ছে, নির্বাচনে প্রতারণার ফাঁদ তৈরি হয়েই আছে। সরকার বিদেশী সহায়তায় ইলেকট্রনিক আইডি প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু এই জটিল প্রক্রিয়া শুরু ও শেষ করতে কম পক্ষে ১০ বছর লাগবে। নির্বাচনী সংস্কারের জন্য প্রেসিডেন্ট গনি ১৬ সদস্যের একটি কমিশন গঠন করেছিলেন, তাতে কাজ হয়নি। সংসদও অতিরিক্ত সময় অতিবাহিত করছে প্রেসিডেন্ট কর্তৃক এর সময় বাড়ানোর ডিক্রির মাধ্যমে। এখন কেউ অতিরিক্ত সময় বাড়ানো পছন্দ করছেন না। বিশেষ করে এলাকাভিত্তিক ভোটার রেজিস্ট্রেশন জরুরি। তাহলে এতদিন নির্বাচন কমিশন কী করল?

ইনডিপেন্ডেন্ট ইলেকশন কমিশন কয়েকটি জায়গায় এই কাজ কিছুটা এগিয়ে নিয়েছে। কিন্তু দেশব্যাপী পুরো কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। নির্বাচনের এই সময়ও আবদুল্লাহ-আবদুল্লাহর সাথে আশরাফ গনির বিরাট মতপার্থক্য। আবদুল্লাহ প্রেসিডেন্টকে পাত্তাই দিতে চান না। উভয়ের এই বিরোধে শেষ পর্যন্ত না নির্বাচন কমিশনকেই ‘বসে যেতে হয়’! সেনাবাহিনী নির্বাচনী কাজে সহায়তা করছে। সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারগুলো ফারিয়াবের মতো দূরবর্তী এলাকায় নির্বাচনীসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে। কমিশন ২২ হাজার বায়োমেট্রিক যন্ত্রের ১৩ হাজারটি পৌঁছে দিয়েছে।

গনির শাসনের পুরো সময়কালে তালেবানদের আক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আসলেই দেশ পরিচালনার যোগ্য কি না, সে প্রশ্ন এখন সবমহলে আলোচিত। দিন দিন তার জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা কমছে। তালেবান সমস্যার কোনো কূলকিনারা না হওয়া, এমন এক অর্থনীতি যা পরিপূর্ণভাবে বিদেশী সহায়তানির্ভর এবং আফিম বা পপি চাষের বিস্তৃতি তাকে অনেক নিচে নামিয়ে দিয়েছে। পাকিস্তান-চীন-ইরানÑ কোনো দেশ গনিকে নির্ভরযোগ্য নেতা হিসেবে বিবেচনা করে না। নিজের দলের কাছেও তিনি সমালোচিত। শুরু থেকেই ক্ষমতা ভাগাভাগির ফলে দলের অনেক নেতা দূরত্বে অবস্থান নিয়েছেন। যেমন- আবদুল্লাহ-আবদুল্লাহ ২০১৪ সালে ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের তদানীন্তন সেক্রেটারি অব স্টেট জন কেরি উভয়ের মধ্যে সমঝোতা করেন।

কেরির উদ্দেশ্য ছিল কাবুলে যেন রাজনৈতিক সঙ্ঘাত শুরু না হয়। যুক্তরাষ্ট্রের কারণে ঐকমত্যের সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেও আবদুল্লাহর সমর্থকরা তাকে অধিকতর যোগ্য মনে করেন। জন কেরির মধ্যস্থতার কারণে গনি প্রেসিডেন্ট এবং আবদুল্লাহ প্রধান নির্বাহী হিসেবে কাজ করে আসছেন। কিন্তু এবারের নির্বাচনে সে ঐকমত্য রাজনীতির ময়দানে কাজ করছে না। সরকারের ব্যর্থতাগুলো আবদুল্লাহর পরিবর্তে প্রেসিডেন্ট গনির কাঁধে চেপেছে এবং গনি চার দিক থেকে কোণঠাসা হয়ে যাচ্ছেন। দেখা যাচ্ছে, আফগানিস্তানে ক্ষমতার ভাগাভাগি সহযোগিতার পরিবর্তে বিভেদ ও অবিশ্বাসের জন্ম দিয়েছে। রাজনৈতিকভাবেও আফগানিস্তান ছিন্ন ভিন্ন হয়ে পড়ছে। সাদিক পাতমান প্রাক্তন হামিদ কারজাই প্রশাসনের এক ক্ষমতাধর কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘গনি সাহেব কাউকে বিশ্বাস করেন না। তিনি ছোটখাটো কাজও নিজে দেখাশোনা করেন। তাই তিনি সর্বদাই ব্যস্ত।’

সমালোচকেরা মনে করেন, গনি প্রেসিডেন্ট পদের যোগ্য নন তা সত্ত্বেও তিনি আমেরিকার দয়ায় এতদিন ধরে ক্ষমতার মাঝখানে বসে রয়েছেন। কারজাই সরকার অনেক দরকষাকষি করে ২০১৪ সালের মধ্যে বিদেশী সৈন্যরা দেশ ছাড়ার জন্য চুক্তি করেছিল। এ সময় না বাড়ানোর কারণে তাকে ক্ষমতা থেকে চলে যেতে হয়েছে। সেখানে এলেন আশরাফ গনি। জন কেরি তখন কারজাইকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন, ‘আপনি চুক্তি না করলেও এমন একজন আসবেন, যিনি বিদেশী সেনাবাহিনী এখানে থাকার জন্য চুক্তি করবেন।’

সাউথ এশিয়া ডেমোক্রেটিক ফোরামের পরিচালক ডয়েচ ভ্যালিকে বলেন, ‘গনি সব কিছু নিজের হাতে রেখে কাজ করায় তার চার দিকে চাটুকাররা ঘুর ঘুর করছে। তিনি আচার ব্যবহারে এবং রাজনৈতিক চিন্তাধারায় অপরিপক্ব। তার কারণে অনেক সমস্যা জটিল আকার ধারণ করেছে।’ ‘আকাশ ছোঁয়া দুর্নীতি, অকার্যকর জনপ্রশাসন এবং তালেবানদের দিন দিন জোরালো আক্রমণে তিনি দিশেহারা। জনাব গনি পাকিস্তানি তালেবান আর আইএসের ওপর দোষ চাপিয়ে দিচ্ছেন। এসব ‘ফন্দি’কে এখন কোনো পক্ষই গুরুত্ব দিচ্ছেন না। আফগানিস্তান ব্যর্থ রাষ্ট্র না হলেও এক ‘ভঙ্গুর দেশ’!’ ফোরামের পরিচালক এই মন্তব্য করেন।

গনির নির্বাচনযন্ত্রের ওপর কোনো পক্ষই ভরসা করছে না। কিছু ওয়ার-লর্ড গনির সাথে রয়েছেন, তারা বেশ ক্ষমতাবান। তাদের কথায় পুরো এলাকা উঠে বসে। চলতি মাসের নির্বাচনকে জনাব গনি বিশ্বাসযোগ্য করতে না পারলে আগামী বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও সেটি মারাত্মক প্রভাব ফেলবে এবং তালেবান আর আইএস আরো বেপরোয়া হয়ে পড়বে। গনির জন্য নয় শুধু, এই নির্বাচন আফগানিস্তানের বাঁচা-মরার প্রশ্ন।

২০০৯, ২০১০ এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের ‘গণতান্ত্রিক পন্থা’ নিয়ে অনেক সংশয় রয়ে গেছে। তাই ঐক্যের এই সরকারকে সাবধানে এগোতে হবে। এসব নানা কাজের মধ্যে ০১. ভোটার রেজিস্ট্রেশন নির্ভুল হতে হবে এবং ‘ডুপ্লিকেট’গুলো বাতিল করার ব্যবস্থা করতে হবে। ০২. জনমানুষের আস্থা অর্জনের জন্য যে অল্প কয়দিন আছে, এ সময়ে গণি ও আবদুল্লাহর বিরোধ প্রাসাদ থেকে রাস্তায় যেন নেমে না আসে তা নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে কুক্ষিগত করার জন্য উভয়ের তোড়জোড়ে এখনই ইতি টানাতে হবে। নতুবা বিদেশী নির্বাচনী সহায়তা বন্ধ হবে। অপর দিকে তালেবানেরা ‘ডাণ্ডা’ নিয়ে অগ্রসর হবে। ০৩. এখনো দেশের ৪০ শতাংশ এলাকায় নিরাপত্তাব্যবস্থা প্রচণ্ড ঝুঁকিতে রয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে নিরাপত্তা বিধানের ‘কৌশলী ব্যবস্থা’ নিতে হবে। কেননা, অনেক স্থানে ন্যাটোর সৈন্যরা ভয় ও নিরাপত্তার জন্য যেতে চায় না।

এসব এলাকায় কিভাবে ভোট নেয়া হবে, গনি সরকার বা নির্বাচন কমিশন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। নিরাপত্তা বাহিনী গজনি, লোগার, হেলমন্দ, নিমরোজ, কুনার, নানগারহার, কান্দাহার, উরুজগান, ফারিয়াব, বাঘলান, হিরাত, সর-ই-পুল এবং বাদাখশান প্রদেশে জোর অপারেশন চালাচ্ছে। এসব অপারেশনে এ পর্যন্ত ৩০ জন নিহত এবং কয়েক ডজন আহত হয়েছে। ০৪. জনপ্রশাসন নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষভাবে সহায়তা দিতে পারে বলে আফগানেরা মনে করেন।

গনি এই সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হলে নির্বাচনে চোখে ‘শর্ষে ফুল’ দেখবেন। কেননা তার অনুগত আর কোনো পক্ষ অবশিষ্ট নেই। ০৫. মহিলাদের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করার জন্য নির্বাচন কমিশন অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে। এখন মনে করা হচ্ছে বেশি মহিলার অংশগ্রহণ দেশ-বিদেশে নির্বাচনকে আরো বিশ্বাসযোগ্য করে তুলবে এবং মহিলাদের অংশগ্রহণ না হলে ‘ভূতের ভোট’ বৃদ্ধি পাবে। মোটকথা, এই নির্বাচন নির্ধারণ করবে গনির ভবিষ্যৎ।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব,
বাংলাদেশ সরকার ও গ্রন্থকার


আরো সংবাদ



premium cement