১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলকদ ১৪৪৫
`


স্বেচ্ছায় কারাবরণই একমাত্র সমাধান

-

সংবিধান অনুসারে, চলতি ২০১৮ সালের শেষ দিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার সময় নির্ধারিত আছে। এরপরও সবার মনেই একটি প্রশ্ন, জাতীয় নির্বাচন হবে তো? কারণ, ২০১৩ সালের ৫ জানুয়ারি প্রার্থী ও ভোটারবিহীন নির্বাচনের অভিজ্ঞতা দেশবাসীর রয়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বিগত জাতীয় নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা না পেলেও ভারতের অভিভাবকত্বের কারণে এবং পুলিশি সহায়তায় নির্বাচনবিহীন সরকার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দাপটের সাথেই চলছে। যেমন- যাকে জেলে রাখা দরকার তাকে জেলে দিয়েছে; যাকে ব্যাংক, বীমা, মিডিয়ার লাইসেন্স দেয়ার তাকে তা দিয়েছে; ব্যাংক লুট করার সুযোগও এ সরকারের আমলে হয়েছে, যা ইতোপূর্বে এমনভাবে আর দেখা যায়নি। নিরঙ্কুশ দলীয়করণের মাধ্যমে সরকারি ঘরানাদের ভাগ্যের চাকা চক্রবৃদ্ধি হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গণমানুষের দাবি- একটি স্বচ্ছ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার একই দাবি। তিনি চেয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের পরিবর্তে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন। এ কথাটির জন্য জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ ও চরম পরীক্ষা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে দিতে হয়েছে এবং হচ্ছে। স্বৈরাচারী বেড়াজাল ভেদ করে তিনি কবে নেতাকর্মীদের কাছে ফিরবেন, তাই এখন গণমানুষের চিন্তার খোরাক।

নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন এখন আর বিএনপির দাবি নয়, এটা এখন সব দলের দাবি। যারা এত দিন বিএনপিকে স্বাধীনতাবিরোধীদের আশ্রয়দাতা হিসেবে নাক সিটকাতেন, তারাও এখন প্রকাশ্যে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করছেন। কারণ, এখন তারা মনে করেন, শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে না। এ কথার পেছনে যুক্তি হলো- নির্বাচন কমিশনের অধীনে দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনের অভিজ্ঞতা। সব কথা বাদ দিলেও সম্প্রতি ১৫ মে ২০১৮ ঘটে যাওয়া খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের নিষ্ক্রিয়তার মাধ্যমে পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় হরিলুট করে ‘নৌকার’ জয় ছিনিয়ে নেয়ার দৃশ্য। সকাল ১০টার আগেই নৌকার সিল মারার কাহিনী কিছু মিডিয়াতে প্রকাশ পেলেও নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য মতে- নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। নাটকীয়তার মাধ্যমে হলেও রাষ্ট্রপতি নিশ্চয়ই যোগ্য ব্যক্তিদের নির্বাচন কমিশন (প্রধান কমিশনারসহ) হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন বলে দাবি করবেন। কারণ, রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে বর্তমান প্রধান বিচারপতির (বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন) নেতৃত্বেই গঠিত হয়েছিল ‘সার্চ কমিটি’। তাই সেই সার্চ কমিটি অনেক তল্লাশি করে যোগ্য ব্যক্তিদের দিয়েই নির্বাচন কমিশন গঠন করার দাবি অমূলক হবে না। তবে মেরুদণ্ডহীন ‘যোগ্য ব্যক্তি’ দেশ, জাতি ও সমাজের কোনো কাজে না লাগলেও নিজের ভাগ্য পরিবর্তনে খুবই সহায়ক। এ কারণেই অপদার্থ, ব্যক্তিত্বহীন, ব্যক্তিরা রাষ্ট্রের বড় বড় পদে আসীন হয়ে নিজ ও পরিবারের ভাগ্যান্বেষণে ব্যস্ত থাকে। ফলে জাতিকে পোহাতে হয় অমাবস্যার কালো রাত্রি। সাংবিধানিক পদসহ দায়িত্বশীল জাতীয় প্রতিষ্ঠানের বড় কর্মকর্তাদের যোগ্যতা হিসেবে ব্যক্তিত্বসম্পন্ন সৎচিন্তা বাস্তবায়নসম্পন্ন লোকের প্রয়োজন হয় না, বরং তেলের বাটি ব্যবহারের অনুশীলন থাকাই এখন বড় যোগ্যতা। তবে তেলের বাটির অনুশীলন যুগ যুগ ধরে চলে আসছে, যারা ব্যতিক্রম তাদের ঝরে পড়তে হয়েছে। স্রোতের বিপরীতে টিকতে না পারার কারণে তেলের বাটির ব্যবহার দিন দিন চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ছে। ফলে ভোগান্তি হচ্ছে জনগণের।

কথা বলছিলাম কাক্সিক্ষত জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কে, যে সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী নিজেও বলেছিলেন- তিনি ভবিষ্যতে আর বিতর্কিত নির্বাচন দেখতে চান না। ২০১৩ সালের ৫ জুনের নির্বাচন বিতর্কিত হওয়ার উপলব্ধি থেকেই হয়তো তিনি এ কথা বলতে পারেন, নতুবা কথাটি লোকদেখানো কথাও হতে পারে। তবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য লোকদেখানো কি না, এটাও ‘সময়ই’ প্রমাণ দেবে। তবে দৃশ্যত মনে হচ্ছে, বক্তব্যটি প্রধানমন্ত্রীর লোকদেখানো। কারণ, শুধু স্থানীয় নির্বাচন নয়, বরং স্কুল-কলেজের পরিচালনা পর্ষদ, পেশাজীবী সংগঠনের নির্বাচনও সরকারি দলের প্রভাবমুক্ত নয়। সম্প্রতি ১৪ মে ২০১৮ বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচন হয়ে গেল। ক্ষমতাসীনরা আগেও বার কাউন্সিলে ক্ষমতায় ছিল এবং এবারো তারাই নির্বাচিত হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা পরাস্ত হওয়ায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্রায় আট হাজার ভোটের মধ্যে মাত্র ৮৫৩ ভোট রেখে বাকি ভোট বিভিন্ন জেলা বারে স্থানান্তর করায় সুপ্রিম কোর্টের বেশির ভাগ আইনজীবীই এবার বার কাউন্সিল নির্বাচনে ভোট দিতে পারেননি। সুপ্রিম কোর্ট বার ভোটকেন্দ্রে ক্ষমতাসীনদের শোচনীয় পরাজয় হয়েছে একমাত্র অ্যাডভোকেট আ: বাছেত মজুমদার ছাড়া। ক্ষমতাসীনদের সাথে মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্বের কারণে সুপ্রিম কোর্টের বারের দুইবার নির্বাচিত সভাপতি ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ ভোট দিতে পারেননি। কারণ, তার অজান্তেই ভোট চট্টগ্রাম বারে ট্রান্সফার করে দেয়া হয়েছিল। এমনিভাবে সুপ্রিম কোর্টের অনেক সিনিয়র আইনজীবী ভোট দিতে পারেননি। যদি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্যরা সুপ্রিম কোর্ট ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে পারতেন, তবে বার কাউন্সিলের নির্বাচনের রেজাল্ট সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের মতোই হতো, যেখানে ক্ষমতাসীনদের ভরাডুবি হয়েছে।

সরকারের আগ্রাসী কর্মকাণ্ডে মনে হয়, সরকারি দল বিএনপি-বিহীন আরেকটি একতরফা নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের সাজা ও জামিনের কাহিনী, অসংখ্য নেতাকর্মীর নামে ডজন ডজন মামলা, পুলিশের মতো আদালতকে নিয়ন্ত্রণ, সব নির্বাচনে হরিলুট, প্রধান বিচারপতিকে দেশত্যাগে বাধ্য করাসহ প্রশাসনে নির্লজ্জ সার্বিক দলীয়করণ প্রভৃতি স্মরণ করিয়ে দেয়, আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন ও কলকাতা মনস্ক বুদ্ধিজীবীদের লাগামহীন নীতিকথা প্রচারের মাধ্যমে ২০১৩ সালের ৫ জানুয়ারির পুনরাবৃত্তিই দেশে ঘটতে যাচ্ছে।
একতরফা নির্বাচন ছাড়াও লগি-বৈঠার তাণ্ডব, এক-এগারোর সরকার থেকে আমরা (রাজনীতিবিদরা) কী শিক্ষা নিলাম, তাও জাতির কাছে স্পষ্ট নয়। পরিসংখ্যান নিলে দেখা যাবে, তৃণমূল থেকে আসা রাজনীতিবিদদের পরিবর্তে ব্যাংক লুটেরা ধনিক শ্রেণীর হাতেই এখন রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ। ফলে এক-এগারোর মতো যখন দলের দুঃসময় আসে, তখন আর তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না; বরং উল্টো খেলা খেলে। দলীয় প্রধান জেলে, যার ভাবমর্যাদার ওপর দলের ভাবমর্যাদা নির্ভরশীল, তার জেলমুক্তি আইনি প্রক্রিয়া একটি বাতুলতা মাত্র। আইনি প্রক্রিয়ার চেয়ে গণ-আন্দোলন জোরদার না হলে আইনি দীর্ঘসূত্রতা ও লোকদেখানো ন্যায়বিচার ২০১৮ সালকে পার করে দেয়ার একটি স্পষ্ট চিত্র চোখের সামনে ভেসে আসে।

দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার জেল রাজনৈতিক। সরকারের প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে বিচার বিভাগ বিচারিক সিদ্ধান্ত দেয়ার পারিপার্র্শ্বিক অবস্থান কোথায়? রাজনৈতিক জেল রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করার একমাত্র নির্ভরযোগ্য স্থান আদালত নয়, রাজপথ। রাজপথে থাকতে গিয়ে বিএনপিকে অনেক মাশুল দিতে হয়েছে বটে, কিন্তু রাজপথেই যাদের জীবন-মরণ তাদের কি দল যথাযথভাবে সঠিক স্থানে অবস্থান দিয়েছে? এ বিষয়টিও বিবেচনায় নিতে হবে যাদের হাতে দলের দণ্ডমুণ্ড তাদের। জেলাভিত্তিক কমিটি কোথাও আছে, কোথাও দ্বন্দ্ব-কোন্দলে দিন কাটাচ্ছে, কোথাও নিষ্ক্রিয়, তবে ম্যাক্সিমাম জেলায় বিএনপি কমিটি গঠিত হয়েছে সাংগঠনিক পদ্ধতিতে নয়, বরং তদবির-ভিত্তিক। এ বিষয়গুলো সমাধান করাও কোনো কঠিন বিষয় নয়, যদি ওপরওয়ালাদের সদিচ্ছা থাকে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তির আইনি লড়াইয়ে নিযুক্ত আইনজীবীরা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এবং নিযুক্ত আইনজীবীরা দেশের সেরা আইনজীবী। পেশার পাল্লায় ওজন করলে জ্ঞান ও আইন পেশায় তারা আন্তর্জাতিক মানের। ফলে মামলা পরিচালনায় কোনো ত্রুটিবিচ্যুতি নেই, এ কথা জোর দিয়েই বলা যায়। দেশব্যাপী জাতীয়তাবাদী সব আইনজীবীই বিএনপি চেয়ারপারসনের জামিনের জন্য উদগ্রীব এবং তারা এটাকে প্রেস্টিজ ইস্যু মনে করছেন, এ মর্মে তাদের আবেগ-উৎকণ্ঠার অভাব নেই। তারপরও এত বড় শক্তিশালী জাতীয়তাবাদী আইনজীবী সমাজ সাংগঠনিকভাবে কি কোনো ভূমিকা রাখতে পেরেছে? এর কারণ কী?

এবারো যদি সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে সরকারের একতরফা জাতীয় নির্বাচন ঠেকানো না যায়, তবে জাতির জন্য হবে অশনিসঙ্কেত। এখন তো সরকারবিরোধীরা গুম, খুন, পলাতক ও কারাবন্দী রয়েছে। খোদা না করুন, এমন দিন তো আসতেও পারে; যেদিন সরকারবিরোধীদের এ দেশে থাকা নিষিদ্ধ করা হতে পারে। সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী (স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর মতিয়া চৌধুরী সংসদে দাঁড়িয়ে দৃঢ়তার সাথে যখন বলেন, রাজাকারের সন্তানদের তারা চাকরি দেবেন না। তখন ভবিষ্যৎ নিয়ে যদি আমরা গভীরে যাই তবে এ কথাও স্পষ্ট যে, সরকার অর্ধশতাব্দী পরও জাতিকে দ্বিখণ্ডিতভাবেই চিন্তা করছে)। মতিয়া চৌধুরী, হাসানুল হক ইনু প্রমুখ মন্ত্রী এক সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সম্পর্কেও অশালীন কথা বলেছেন। আজ প্রধানমন্ত্রী তাদের সাথে হাত মিলিয়েছেন শুধু বিএনপিকে কোণঠাসা করার জন্য। তারাও (বামপন্থী) বুক ফুলিয়ে স্পষ্টই বলেছেন, তাদের ছাড়া আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যেতে পারবে না। অনুরূপ মন্তব্য এরশাদও করছেন, যাকে এক সময় শেখ হাসিনা মহাচোর বলতেন। এখন এটাই স্পষ্ট, মহাচোর ও বঙ্গবন্ধু কুৎসাকারীদের (১৯৭২-৭৫ পর্যন্ত) সাথে প্রধানমন্ত্রীর হাত মেলাতে বাধা নেই শুধু বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য।

আমাদের এলাকায় একটি প্রবাদ চালু রয়েছে- ‘যা হয় না ৯ দিনে, তা হবে না ৯০ দিনে’। ইতোমধ্যে ৯ বছর তো পার হয়েই গেল। ২০১৮ সালের অর্ধেক পার হয়ে যাচ্ছে। কার্যকর ভূমিকা নেয়ার সময় রয়েছে মাত্র আর তিন মাস। এ সময়ের মধ্যে কার্যকর ভূমিকা (অবশ্য গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে) না নিলে এবারো ট্রেন মিস করতে হবে এবং এ জন্য শুধু বিএনপিকে নয়, পস্তাতে হবে সবাইকে। ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। কারণ সরকারি দলে গৃহদাহ শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের সামনে সরকারি দলে নিজেদের মধ্যে মারামারি হচ্ছে, প্রভাবশালী মন্ত্রীকে (মতিয়া চৌধুরী) নির্বাচনী এলাকায় অবাঞ্ছিত করা হয়েছে প্রভৃতি মিলিয়ে তারাও চিন্তামুক্ত, এ কথা ধারণা করা ঠিক হবে না। তবে বিএনপিকে নিজের ক্ষতস্থানে ওষুধ লাগাতে হবে, শুধু পরের দোষ দেখলে হবে না।
জাতির সামনে এখন ক্রান্তিকাল। শুধু ‘গণতন্ত্র’ রক্ষার জন্য জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া আবশ্যক। ধর্মভিত্তিক ও ধর্মনিরপেক্ষ সবাই যদি ‘গণতন্ত্র’ পুনরুদ্ধারের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামতে পারে, তবেই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে জাতীয় নেতৃবৃন্দের একটি কৈফিয়ত থাকে, নতুবা জবাবদিহিতার দায় থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনো রাস্তা নেই, বিষয়টি সর্বস্তরের জাতীয় নেতৃত্বের বিবেকের ওপর ছেড়ে দেয়া হলো।

বিএনপি এর আগে এমন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করেনি, যা এখন করছে। দলের সব স্তরের দায়িত্বপ্রাপ্তদের জবাবদিহিতায় আনা যায়নি। অন্য দিকে কর্মের পুরস্কার বা তিরস্কারের প্রচলন না থাকার বিষয়টি অনেকাংশে দায়ী। এ ক্রান্তিকাল থেকে উত্তরণের একমাত্র অবলম্বন রাজপথ। ঐতিহাসিক ‘রাজপথই’ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করবে। এ রাজপথই দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি এনে দেবে। অন্যথায় কেউ যদি খালেদা জিয়াবিহীন (মাইনাস) নির্বাচনের কথা চিন্তা করেন বা নতুন করে সংস্কারবাদী গ্রুপ সৃষ্টি হয় তা হবে গুড়েবালি। কারণ, বিষয়টি বিশ্বাসঘাতকরা মেনে নিতে পারে, তৃণমূল মেনে নেবে না। এ অবস্থায় নির্বাচনে যাওয়া-না যাওয়া বিষয়টি গভীরভাবে চিন্তা করা দরকার। শুধু জামিন নয়, সাজামুক্ত খালেদা জিয়া চাই। নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। নেতৃত্ব দেবেন খালেদা জিয়া- এটাই তৃণমূলের কামনা-বাসনা। পুনরায় এ জন্য রাজপথই একমাত্র অবলম্বন এবং এ জন্য স্বেচ্ছায় কারাবরণের জোরালো সিদ্ধান্ত নেয়া ছাড়া এ ক্রান্তিকাল অতিক্রমের বিকল্প রাস্তা নেই। বিষয়গুলো বিএনপিকে আরো গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে। কর্মীদের মুক্তচিন্তার সুযোগ দিতে হবে এবং তদবির নয়, সাংগঠনিক পদ্ধতিতে দলকে আরো গতিশীল করতে হবে। মনে রাখতে হবে, তদবিরে সরকার চলতে পারে, কিন্তু রাজনৈতিক দল গতিশীল হয় না। প্রকৃত জাতীয়তাবাদী শক্তির একটি তালিকা দলের কাছে আছে বলে মনে হয় না।
লেখক : কলামিস্ট ও আইনজীবী (আপিল বিভাগ)


আরো সংবাদ



premium cement
দুমকীতে হত্যা মামলার আসামি বাবা-ছেলে গ্রেফতার ১২ সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি : যেখানে আপত্তি ইসরাইলের পথশিশুদের জন্য ছায়াতলের স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত মিরসরাইয়ে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের আরোহী নিহত মালয়েশিয়ায় বিএমইটি কার্ডের নামে ফাঁদ! সতর্ক করল দূতাবাস ভোলায় বার্জের সাথে মাছ ধরার ট্রলারের ধাক্কা, জেলে নিহত সিদ্ধিরগঞ্জে অবৈধ গ্যাস সংযোগে দালাল চক্র, ৪৮টি বাড়ির সংযোগ বিচ্ছিন্ন সব বিভাগেই বৃষ্টি হতে পারে মানিকগঞ্জে পৌঁছেছে পাইলট আসিম জাওয়াদের লাশ ‘বল এখন সম্পূর্ণভাবে’ ইসরাইলের কোর্টে : যুদ্ধবিরতি আলোচনায় হামাস মিশুস্তিনকে আবার রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাব পুতিনের

সকল