০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`


অনিয়মই যেখানে নিয়ম

-

অনিয়মের মধ্যেই চলছে সামার ওপেন (র‌্যাঙ্কিং) টুর্নামেন্ট। উডেন ফোরের মেঝে থেকে শুরু করে টুর্নামেন্ট রেফারি পর্যন্ত প্রতিটি জায়গাতেই নিয়মের কোনো বালাই নেই। এ নিয়ে কর্তাদের মধ্যে কোনো আফসোসও নেই। টুর্নামেন্ট রেফারি জাহিদুল হক কচি বরং বুক ফুলিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এভাবেই চলে আসছে, চলছে এবং ভবিষ্যতেও চলবে।’
থলের বিড়াল বেরিয়ে আসে গত শনিবার রাতে মিনহাজ ও চট্টগ্রামের আসাদের মধ্যকার ম্যাচে। ম্যাচের একপর্যায়ে লাইনজাজের এক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেন চট্টগ্রামের সাজ্জাদ (যিনি আসাদের পক্ষে কোচের চেয়ারে বসেছিলেন, যদিও কাগজে কলমে আসাদের কোচ মোর্শেদ)। তাকে কোনোভাবেই বারণ করা যাচ্ছিল না বিধায় কচি তাকে ভেনু থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। তাতেই তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠেন সাজ্জাদ। বিষয়টি নিয়ে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। কেউ কেউ বহিরাগত লোকদেরও ফোন করে উডেন ফোরে নিয়ে আসেন। বহিরাগত লোকের বিষয়টি স্বীকার করেননি কচি কিংবা চট্টগ্রামের কেউ। তবে প্রশ্ন উঠেছে টুর্নামেন্ট রেফারি, লাইনজাজদের যোগ্যতা ও পক্ষপাতিত্ব নিয়ে।
বাংলাদেশে স্বীকৃত আম্পায়ার রাসেল নজীব ইসমাইল জানালেন, ‘টুর্নামেন্ট রেফারি হতে হলে তাকে অবশ্যই পাঁচ বছর ডেপুটি রেফারি ও পাঁচ বছর আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করতে হয়। তা ছাড়া ২০১৭ সালে ব্যাডমিন্টন অভিভাবক সংস্থা বিডব্লিউএফ পাকাপোক্তভাবে নিয়ম করে দিয়েছে কোনো কোচ আম্পায়ার কিংবা রেফারি হতে পারবেন না।’
অথচ সামার ওপেনে রেফারির দায়িত্ব পালন করা জাহিদুল হক কচি জাতীয় দলের কোচ। বিষয়টিতে তিনি কোনো অনিয়ম দেখছেন না। এটিই বাংলাদেশের নিয়ম উল্লেখ করে কচি বলেন, ‘আমার সময়ে কেন বিষয়টি উঠছে। আমি প্রায় ৩০টির মতো টুর্নামেন্টে আম্পায়ার ও সহকারী রেফারির দায়িত্ব পালন করেছি। আমার আগে গোলাম জিলানী, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত মনোয়ার হোসেন বাবুল ও হাসিবুর রহমান শাকিল কোচ ও রেফারির দায়িত্ব পালন করেছেন। কই তখন তো কোনো কথা হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টনের লোকাল আইনে সব কিছুই সম্ভব। সাদ্দামকে চিরজীবনের জন্য ভেনু থেকে বহিষ্কার করা উচিত ছিল। সেক্রেটারিকে আগেই বলেছিলাম, সাজ্জাদ ছাড়া মাঠে আর কেউ গেঞ্জাম করে না। কিন্তু তিনি তা পারেননি।’
কোয়ার্টার ফাইনালের খেলা বিকেল ৫টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সেটি শুরু হলো ৬টায়। টুর্নামেন্ট কমিটির সাহস হলো না ওয়াক ওভার দিতে। জুমার আমিন ঠিক সময়ে মাঠে উপস্থিত থাকলেও তার প্রতিপক্ষ সিলেটের গৌরব উপস্থিত হন পৌনে ৬টায়। তার কোচ হিসেবে চেয়ারে বসেছেন কয়েকবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন ও আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা এনাম। তিনিও সময়ের ব্যাপারে নির্বিকার। এ বিষয়ে কচি বলেন, ‘এখন যদি জুমারকে ওয়াক ওভার দেই তাহলে সিলেটের পুরো টিম চলে যাবে। ফলে টুর্নামেন্টই হবে না। এ জন্যই বলি বাংলাদেশের নিয়মেই চলে ব্যাডমিন্টন।’
তবে সাধারণ ব্যাডমিন্টন প্রেমিরা অবস্থার পরিবর্তন চেয়ে বলেন, ‘যারা বিষফোঁড়া রয়েছে তাদের উপড়ে ফেললেই সমাধান হবে অনেক অনিয়মের।’


আরো সংবাদ



premium cement