২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নীলার গ্রাম দেখা

-

পরীক্ষা শেষে স্কুল ১০ দিনের ছুটি দিয়েছে। এতদিন ধরে এ সময়টার অপেক্ষায় ছিল নীলা। আব্বু আম্মুও নীলাকে বলেছে, পরীক্ষার পর স্কুল বন্ধ হলে নীলাকে গ্রামের বাড়ি বেড়াতে নিয়ে যাবে। নীলারও খুব ইচ্ছে সে গ্রামে যাবে, দাদুর মুখ থেকে রূপকথার গল্প শুনবে আর মাঠে ছুটে ফড়িং ধরবে। নীলা ক্লাস থ্রিতে পড়ে। মেধাবী ছাত্রী। সবাই তাকে আদর করে। আব্বু আম্মু ফুফি সবাই তাকে নীলা মা বলে ডাকে। অফিস থেকে নীলার আব্বু রাতে বাসায় ফিরেছেন। এসেই শুনলেন, কাল থেকেই নাকি নীলার স্কুল ছুটি। নীলার আম্মু আর আব্বু মিলে গ্রামে যাওয়ার তারিখ ঠিক করে নেন। পরশু দিন সোমবারেই তারা ময়মনসিংহের গ্রামের বাড়ি যাবেন। তাও আবার ট্রেনে করে। নীলা আনন্দে ফুফিকে জড়িয়ে ধরে। ফুফি নীলার পাগলামি দেখে বলে, নীলা মা তুমিতো দেখছি আকাশের চাঁদ পেয়ে গেলে হাতে। নীলারও তাই মনে হয়। সে অনেক দিন গ্রাম দেখে না। কী সুন্দর ছবির মতো গ্রাম। পুকুর ভর্তি মাছ, শীতের সকালে কুয়াশা মাখা ঘাস, গ্রামের আঁকাবাঁকা মেঠো পথ, সবকিছুই তাকে মুগ্ধ করে।
সোমবার দিন নীলারা ট্রেনে করে ময়মনসিংহে এসে পৌঁছলেন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে। নীলার দাদু, ছোট কাকা ও মেজো ফুফির সে কী খুশি চোখেমুখে। নীলাকে দাদু বুকে টেনে নিয়ে বললেন, বুড়ি মা, তাহলে এলে তুমি! এতদিনে তোমার আমাদের কথা মনে পড়ল। নীলা হাসিমুখ করে বলে, এবারতো এলাম। এবার কিন্তু আমাকে পুরো গ্রাম ঘুরিয়ে দেখাতে হবে দাদু! দাদু হাসি দিয়ে বললেন, অবশ্যই দেখাব। আগে দুপুরের খাবার খেয়ে নাও, তারপর আজ বিকেলেই তোমাকে গ্রাম দেখাতে নিয়ে যাবো। গ্রামের পুকুরের নানা পদের মাছ দিয়ে দুপুরের খাবারের পর নীলাকে নিয়ে তার দাদু গ্রাম দেখতে বেরিয়ে গেলেন।
চার পাশে সরিষার ক্ষেত আর ঝিলের পাড়ে হাঁসের বাচ্চাদের পিঁ পিঁ ডাক নীলাকে মুগ্ধ করে তোলে। নীলা খেজুর গাছে একজনকে কলসি বসাতে দেখে বলে, দাদু একে কী বলো তোমরা? দাদু এবার নীলাকে কাছে টেনে নিয়ে বললেন, এ হচ্ছে গাছি। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা এদের কাজ।
এত সুন্দর দৃশ্য দেখে নীলার চোখ দুটো আনন্দে ছলছল করছিল। সে মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এবার থেকে স্কুল ছুটি হলেই সে গ্রামে বেড়াতে আসবে।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement