২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বসনে বসন্ত : রঙের ঝলক

-

ফাল্গুন মানেই উৎসব। আর ফাগুন এলে সে উৎসবে মাতে সবাই। রঙের মেলা বসে যেন প্রকৃতিতে। ফালগুনের রঙিন ছোঁয়া শুধু প্রকৃতিতেই নয়, ছুঁয়ে যায় বাঙালির মনে ও পোশাকে। ফাগুনের জমকালো সাজ-পোশাক বৈচিত্র্য এনে দেয় নগর জীবনে। আর কিছু দিন পরই আসবে ফালগুন। তাই এখন থেকেই ফাগুনের পোশাক নিয়ে চলছে ভাবনা। বাঙালির বসন্তের আমেজ নতুন নয়। সেকাল থেকে একাল, স্বগৌরবে বসন্তের রঙে সেজে উঠতে চায় বাঙালি মন।
কবিতা, গান, নৃত্য আর চিত্রকলায় বহুকাল আগ থেকেই আলাদা স্থান দখল করে আছে ফালগুন। ফালগুন মানেই যেহেতু রঙের বাহার, তাই বসন্তের পোশাকেও রয়েছে রঙের সমাহার। নারী পুরুষ সবাই বাহারি ডিজাইনের পোশাকে সজ্জিত হয়ে স্বাগত জানায় ফালগুনকে। আর তাই ফালগুনের পোশাক ভাবনা নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন। ফালগুনে নারীদের পোশাক : ফালগুনে নারীদের পোশাক হয় বেশ জমকালো। বাঙালিয়ানা মানেই তো শাড়ি। তবে শাড়ির পাশাপাশি সালোয়ার-কামিজ, থ্রি-পিস, লং কুর্তা, সিঙ্গেল কামিজ, টপস, আনস্টিচ, সিঙ্গেল ওড়না, টি-শার্ট ফতুয়াসহ নানা পোশাকে সজ্জিত হয় বাঙালি নারীরা।
সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলো সব সময়ই তাদের পোশাকের ঢং আর ডিজাইনে নিয়ে আসে নানা পরিবর্তন আর নতুনত্ব। এবারো তারা তৈরি করেছে নানা রঙের বসন্তের পোশাক। সব ধরনের পোশাকেই রয়েছে বসন্তের ছোঁয়া। এ যেন বসন্ত ছুঁয়েছে পোশাকে। বসন্ত পোশাকে নানা ধরনের কাজ করা হয়েছে। টাইডাই, স্প্রে ব্লক, চুনরি, স্ক্রিনপ্রিন্ট, কারচুপি ইত্যাদি। এবার ফালগুনের পোশাকে ফ্লোরাল মোটিভকেই বেছে নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে নারীদের শাড়িতে নানা ধরনের কাজ করা হয়েছে। কেননা বসন্ত উৎসবে নারীরা যেন শাড়িতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। আর তাই আমাদের ফ্যাশন হাউজগুলোও শাড়িকে প্রাধান্য দিয়েছে। পাশাপাশি তারুণ্যের রুচিবোধের কথা মাথায় রেখেও তৈরি করেছে বিভিন্ন পোশাক। আর বসন্তের পোশাকে এবারো খেলা করছে নানান রঙের ছোঁয়া। বাসন্তী বা হলুদকে ফালগুনের রঙ মনে করা হলেও বর্তমানে আর সেই ধারা অব্যাহত নেই। এখন বাসন্তী ও হলুদ রঙের সাথে কমলা, লাল এবং নতুন পাতার সবুজ রঙকেও বসন্তের রঙ ধরা হয়। তাই এ বসন্তের পোশাকেও এসব রঙের ছোঁয়ায় একাকার। এ বিষয়ে দেশের স্বনামধন্য ফ্যাশন হাউজ অঞ্জন’স-এর কর্ণধার শাহিন চৌধুরী বলেন, বসন্তের উৎসব বাঙালির সেকাল থেকে এ কাল চলছে। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরা পয়লা ফালগুনকেই বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে। আমাদেরও নানা ধরনের আয়োজন থাকে এ উৎসবকে ঘিরে। বসন্ত উৎসবে নারীরা সাধারণত শাড়ি বা টপসকেই বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। পাশাপাশি সালোয়ার-কামিজ, থ্রি-পিস এসব পোশাকও ক্রেতাদের পছন্দের তালিকাতে রয়েছে। কেননা এখন আর কেউ একটি পোশাকেই সারা দিনের উৎসব পালন করতে চান না। বেলা গড়ায় আর পোশাকেরও পরিবর্তন হয়। আবার সব বয়সীরাই কিন্তু এ উৎসব পালন করেন। এ জন্য আমরাও সব বয়সীদের পোশাকই তৈরি করে থাকি। বাঙালির প্রতিটি উৎসবেই থাকে আমাদের দেশীয় ফ্যাশন হাউজের ছোঁয়া।
ফালগুনে ছেলেদের পোশাক : ফালগুনের পোশাক হিসেবে নারীরা যেমন শাড়ি পরতে পছন্দ করে তেমনি ছেলেরাও বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে পাঞ্জাবি-পায়জামাকে। এ ছাড়াও ফুলহাতা ও হাফহাতা শাট, টি-শার্ট, পলো শার্টকেও প্রাধান্য দিয়ে থাকে অনেকেই। এ প্রসঙ্গে বিশ্ব রঙের ফ্যাশন ডিজাইনার ও কর্ণধার বিপ্লব সাহা বলেন, আসলে ফালগুন মানেই রঙ উৎসব। আর রঙিন উৎসবকে ঘিরেই চলে পোশাকে বৈচিত্র্য আনার ভাবনা। এবারের ফালগুন ঘিরে থাকছে ছেলেদের পাঞ্জাবির নতুন সব কালেকশন। ছেলেদের বসন্তের পাঞ্জাবিগুলো করা হয়েছে নানা নকশার আদলে। তবে কাপড় হিসেবে সুতিকেই বেস্ট অপশন হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া বসন্তের কাপড়ে বৈচিত্র্য আনার জন্য ব্লক, অ্যামব্রয়ডারি, স্ক্রিনপ্রিন্টের সাথে সিকোয়েন্স ব্যবহার করা হয়েছে। মোটিফ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ফ্লোরাল মোটিফ। বসন্ত উৎসবের রঙ হিসেবে বাসন্তী হলুদ, কমলা, লাল, সাদা, লাইম গ্রিন উজ্জ্বল সব রঙ বেছে নেয়া হয়েছে।
দরদাম : মেয়েদের শাড়ি এক হাজার টাকা থেকে ছয় হাজার টাকা। তবে দুই হাজার টাকার মধ্যেও আপনি পেতে পারেন আপনার পছন্দের শাড়ি। সালোয়ার-কামিজের দাম পড়বে দুই হাজার ২০০ টাকা থেকে তিন হাজার টাকা। ছেলেদের পাঞ্জাবি এক হাজার টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা। আর শিশুদের পোশাক পাওয়া যাবে ৪০০ টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা।
কোথায় পাবেন : অঞ্জন’স, বিবিয়ানা,বিশ্ব রঙ, কাপড়-ই-বাংলা, ইনফিনিটি, আড়ং, রঙ, কে-ক্রাফট টাস্ট মার্ট, বাংলার মেলা, দেশাল ও নিপুণে পেয়ে যাবেন পছন্দের ফালগুনের পোশাক। এ ছাড়া বসুন্ধরা শপিংমল, যমুনা ফিউচার পার্ক, কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি, মৌচাক মার্কেট, ফরচুন শপিংমল এবং নিউ মার্কেট ও গাউসিয়া থেকে বেছে নিতে পারেন বাসন্তী পোশাক।

 


আরো সংবাদ



premium cement