২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মুসলিম রাষ্ট্রনায়কেরা যা করেছেন, তাদের সম্পর্কে যা বলা হয়

মুসলিম রাষ্ট্রনায়কেরা যা করেছেন, তাদের সম্পর্কে যা বলা হয়
মুসলিম রাষ্ট্রনায়কদের মানবতার প্রতি শ্রদ্ধা - ছবি : সংগৃহীত

আমি প্রথমে এই পরিচ্ছেদটির শিরোনাম নির্ধারণ করেছিলাম মুসলিম রাষ্ট্রনায়কদের বৈশিষ্ট ও গুণাবলী নামে। যেখানে আমি ইসলামি সভ্যতার নেতৃত্বের যুগের মুসলিম রাষ্ট্রনায়কদের গুণাবলী নিয়ে আলোচনা করব। আমি দেখলাম তাদের অনেক এমন আছেন যাদের রয়েছে বহুমুখি গুণাবলী। তাদের সততা, ন্যায়পরায়ণতা, তাকওয়া ও পরহেযগারিতা, আমল-আখলাক ও অনুপম চরিত্রাবলী ইতিহাসের পাতায় এতটাই ব্যাপ্তি হয়ে আছে যে, এর জন্য একটি স্বতন্ত্র বইও যথেষ্ট নয়। তাই আমি দ্বিতীয় বার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে শিরোনাম ঠিক করলাম, “মুসলিম রাষ্ট্রনায়কদের মানবতার প্রতি শ্রদ্ধা“, যেখানে মাত্র দুএকজন রাষ্ট্রনায়কদের আলোচনাই প্রাধান্য পাবে।

আমি দ্বিতীয়বার এই শিরোনামটি ঠিক করার কারণ হলো, বর্তমান পাশ্চাত্য সভ্যতার অধিপতিরা মানবাধিকার ও মানবতা নিয়েই বেশি সোচ্চার। তারা বাকি দুনিয়ার কোথাও কেহ মানবতার প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করলে এর তারা নিন্দা জানায়। তারা এ-ও বলে যে তারাই একমাত্র জাতি যারা মানবতার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা পোষণ করে আসছে এবং তারাই এর জোড়ালো প্রবক্তা। তারা এ-ও বলে যে এক্ষেত্রে ইসলামি সভ্যতার কোনো দৃষ্টান্ত নেই। ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তরবারীর জোরে। তাদের এই ডাহা মিথ্যা অপবাদটি আদৌ সত্য নয়। বরং তারাই যে একমাত্র কথিত সভ্য জাতি যারা সাম্রাজ্যবাদ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে এবং নিজেদের কায়েমী স্বার্থ চরিতার্থ করার হীন উদ্দেশ্যে মানবতাকে গলা টিপে হত্যা করছে। বোধ করি তারা এই তিক্ত সত্যটি বেমালুম ভুলে গেছে।

জ্ঞান-বিজ্ঞানের এই যুগে কোনো ইতিহাসই আজ গোপন নেই। ইসলামি সভ্যতার ইতিহাস আজ পাশ্চাত্য সভ্য দুনিয়ার ভালই জানা আছে। মুসলিম শাসকদের এই গৌরাবান্বিত ইতিহাসকে বোধ করি তারা ইচ্ছাকৃতভাবেই ভুলে গেছে। না হয় তারা পাশ কাটিয়ে এড়িয়ে গেছে।
ইতিহাস অনুসন্ধান করলে দেখা যায়, গ্রিক সভ্যতা থেকে আধুনিক পাশ্চাত্য সভ্যতা পর্যন্ত প্রতিটি যুগেই তাদের সম্রাট, রাজা ও রাষ্ট্রপ্রধানদের দ্বারা মানবতার অপমৃত্যু ঘটেছে। গ্রিক মহাবীর আলেকজান্ডার থেকে এই একবিংশ শতাব্দীর পশ্চিমা শাসক জর্জ বুশ, টনি ব্লেয়ার, সারকোজি ও পুতিনসহ প্রত্যেকের হাতেই মানবতার রক্তের দাগ লেগে আছে। তাই মানবতার পক্ষে তাদের কথা বলা এবং তাদেরকেই এর প্রবক্তা বলে জ্ঞান করাটা অনেক বাস্তব মানবতাবাদীদের নিকট প্রশ্নবিদ্ধ। তাই আমি এখানে মধ্য যুগের ইসলামি বিশ্বের দু-একজন মুসলিম শাসকদের মানবতার প্রতি তাদের শ্রদ্ধার বাস্তব নমুনা পেশ করছি। যাতে ইসলামি সভ্যতার বাস্তব ধারণাটা আমরা কিছুটা হলেও উপলব্ধি করতে সক্ষম হই।

মুসলিম রাষ্ট্র নায়কগণ রাজ্য জয় করেছেন ও সাম্রাজ্য কায়েম করেছেন ঠিক কিন্তু এসব করতে গিয়ে তারা কখনোও প্রতিশোধ স্পৃহায় উন্মত্ত হয়ে মানবতাকে হত্যা করে মুসলিম ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেন নি। তারা স্থাপন করেন নি ন্যাক্কারজনক দৃষ্টান্ত। যেমনটা করেছেন পাশ্চাত্য সভ্যতার কথিত সভ্য শাসকরা।
আমরা যদি মুসলিম শাসকদের মানবতার প্রতি তাদের শ্রদ্ধা প্রদর্শন নিয়ে আলোচনা করতে চাই তাহলে সর্বাগ্রে যে নামটি চলে আসে তিনি হলেন ইসলামের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা:)। তার এলাকার লোকদের নির্মম অত্যাচার ও নিপীড়নে অতিষ্ঠ হয়ে তিনি তাঁর সাহাবীদের নিয়ে হিজরত করে মদীনাতে চলে যান। দীর্ঘ আট বছর পর যখন তিনি মক্কা দখল করেন, ওই সময় তিনি একটি প্রাণীকেও হত্যা করেন নি। সম্পূর্ণ রক্তপাতহীনভাবে দখল করে নেন মক্কাকে। তিনি ইচ্ছে করলে সেদিন তাঁর ও তাঁর সাহাবীদের উপর চলা অত্যাচারের পরিপূর্ণ প্রতিশোধ গ্রহণ করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে ক্ষমা ও দয়ার মহানুভবতা প্রদর্শন করেছেন।

ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর (রাঃ) এর শাসনামলে হযরত আবু উবায়দা ইবনে জাররাহ (রা:) এর নেতৃত্বে ৬৩৮ খ্রিস্টাব্দে মুসলমানরা জেরুজালেম দখল করে নেন। হযরত ওমর (রা:) সেদিন কাউকেতো হত্যার কোনো নির্দেশ প্রদান করেননি, বরং তিনিও দেখিয়েছেন ক্ষমা ও উদরতার পরাকাষ্ঠা। সেদিন কারো উপর চালানো হয়নি কোনো হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ। বরং সেখানে তিনি খ্রিস্টানদের থাকার অনুমতি ও তাদের পরিপূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রদান করেন। এমনকি যে ইহুদিদেরকে খ্রিস্টানরা সেখানে তাদের থাকার কোনো অধিকার দিত না হযরত ওমর (রা:) ওখানে ইহুদিদেরকেও বসবাসের সুযোগ করে দেন।

৭১২ খ্রিস্টাব্দে মুসলিম সেনাপতি তারিক বিন যিয়াদের নেতৃত্বে মুসলমানরা প্রথম ইউরোপীয় ভূখ- দখল করে নেন। সেখানে প্রতিষ্ঠিত হয় মুসলিম শাসনব্যবস্থা। স্পেন দখল তদপরবর্তিতে উমাইয়া শাসন প্রতিষ্ঠা পর্যন্ত কোনো সময়ও সেখানে কোনো গণহত্যা পরিচালনা করা হয়নি। সেখানেও খ্রিস্টানদের সাথে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি স্থাপন করে মুসলিম শাসন পরিচালনা করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায় ১৪৯২ খ্রিস্টাব্দে সেখানে মুসলিম শাসনের অবসান ঘটলে রাজা ফার্দিনান্ড ও রানী ঈসাবেলার প্রতারণার ফাঁদে আটকিয়ে গণহত্যা চালিয়ে হত্যা করা হয় লক্ষ-লক্ষ মুসলিমদেরকে। ধ্বংস করা হয় মুসলিম নিদর্শনাবলীকে।

যে অঞ্চলসমূহকে মুসলিমরা শাসন করেছিলেন দীর্ঘকাল যাবৎ তার অন্যতম হলো ভারত উপমহাদেশ। ৮ম শতাব্দীতে উমাইয়া সেনাপতি মহাবীর মুহাম্মদ বিন কাসিমের নেতৃত্বে ভারতে মুসলিম শাসনামলের সূচনা হয়। তারপর যথাক্রমে সুলতান মুহাম্মদ গযনবী আল ফাতিহÑ ৯৯৭Ñ১০০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত, সুলতান কুতুবুদ্দীন আইবেক ১২০৬ থেকে ১২১০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত, ভারতে মুসলিম বিজয়ের ধারা অব্যাহত রাখেন। অবশেষে সুলতান আলাউদ্দীন শাহ্ খিল্জি ১২৯৬ থেকে ১৩১৬ পর্যন্ত এই সময়ে সমগ্র ভারত উপমহাদেশে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। মুসলিম শাসনের এই ধারা ভারতে ১৮৫৮ পর্যন্ত চালু থাকে এবং মোঘলদের পতনের মধ্য দিয়ে তার ইতি ঘটে।

ভারত উপমহাদেশে এই সুদীর্ঘকাল যাবৎ মুসলিম শাসকদের রাজ্য জয় এবং সেখানে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠার সময় কখনোও কোনো গণহত্যা কিংবা ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়নি। বরং অত্যন্ত সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি স্থাপন ও ভ্রাতৃত্বের সেতুবন্ধন স্থাপন করেই তারা রাজ্য পরিচালনা করেছেন। ভারতে মুসলিম শাসকদের আচরণের বর্ণনা দিতে গিয়ে ভারতেরই প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ও গবেষক ড. তারা চাঁদ লিখেন :
“মুসিলম বিজয়ীরা বিজিতদের সাথে সঙ্গত আচরণ করেন এবং জনগণের প্রতি দয়া ও অনুগ্রহ প্রদর্শন করেন। ভূমি রাজস্বের ক্ষেত্রে তাঁরা ভারতীয়দের পূর্বরীতি চালু রাখেন। হিন্দু পূজারী, যোগী, পুরোহিত ও ব্রাহ্মণদেরকে মন্দিরের পূজা অর্চনা করার পূর্ণ সুযোগ দেওয়া হয়। তাদের উপর অতি অল্প পরিমাণের একটি কর (জিযিয়া) ধার্য করা হয়। তাও আদায়কারীদের আয়ের সাথে সঙ্গতি রেখে ধার্য করা হয়। যেন তাদের পক্ষে আদায় করা সহজে সম্ভব হতে পারে। ভূমি মালিকদেরকে ব্রাহ্মণ ও মন্দির সমূহের জন্য পূর্ববর্তী রীতি অনুযায়ী কর যথারীতি প্রদানের অনুমতিও দেওয়া হয়। ৮৫
স্যার উইলিয়াম ব্যান্টিংক বলেন:

বহুদিক থেকে মুসলমানদের রাজত্ব আমাদের রাজত্ব থেকে শ্রেষ্ঠ। মুসলমানগণ যেসব অঞ্চল জয় করেছিলেন, সেখানে নিজেদের বসতি স্থাপন করে নিজেদেরকে ভারতের স্থায়ী বাসিন্দায় পরিণত করেন। তারা স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে বৈবাহিক সূত্রে আবদ্ধ হন ও বাসিন্দাদের প্রাপ্য অধিকার প্রদান করেন। ফলে বিজয়ী ও বিজিতদের মধ্যে কোন বৈরিতার উদ্রেক ঘটাতে পারেনি বরং একই অঞ্চলের বাসিন্দা হিসেবে পারস্পরিক স্বার্থ এক ও অভিন্ন স্রোতে প্রবাহিত হয়। পক্ষান্তরে আমাদের কর্মপদ্ধতি এর সম্পূর্ণ বিপরীত। আমাদের শাসন পদ্ধতির মধ্যে বিজয়ী ও বিজিতদের মধ্যে বৈরিতা, কঠোরতা, স্বার্থপরতা ও দরদহীনতা বেশী প্রাধান্য পেয়েছে। ৮৬
রাজ্য দখল করার পরবর্তীতে হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর পরে ক্ষমা, উদারতা ও দয়ার চরম পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করেছেন মহাবীর সালাহ্্উদ্দীন আইয়ূবী। পাশ্চাত্যের বর্বর ক্রসেডাররা ১০৯৯ সালে জেরুজালেম দখল করার পর কী অমানবিকতা ও অমানবতা প্রদর্শন করেছে তা অবর্ণনীয় ও অকল্পনীয়। নির্মম গণহত্যা চালিয়ে বিধ্বস্ত করে দেওয়া হয়েছিল জেরুজালেম নগরীকে।
ঠিক তার উল্টো আচরণ প্রদর্শন করলেন সালাউদ্দীন আইয়ুবী। তিনি ১১৮৭ খ্রিস্টাব্দে জেরুজালেমকে পুনরুদ্ধার করার পর ক্রসেডারদের ন্যূনতম আচরণও প্রদর্শন করেন নাই। চালাননি কোনো গণহত্যা। সম্পূর্ণ রক্তপাতহীনভাবেই জয় করেন জেরুজালেম। ইচ্ছে করলে তিনি ১০৯৯ সালের মুসলিম গণহত্যার প্রতিশোধ নিতে পারতেন ১১৮৭ সালে এসে খ্রিস্টান গণহত্যার মাধ্যমে। বরং তিনি তা না করে প্রদর্শন করেন ক্ষমা ও দয়ার এক চরম পরাকাষ্ঠা। সেখানে তিনি ইহুদিÑখ্রিস্টান সকলকে সমান অধিকার দান করেন। মুক্তি দান করেন নারী, পুরুষ ও শিশুসহ সকলকে। সালাহউদ্দীনের এই ক্ষমা ও মহানুভবতার বর্ণনা দিতে গিয়ে ঐতিহাসিক লেনপুল বলেন;

Then I shall tell you the great courtesy which Saladin showed to the wives and daughters of knights, who fled to Jerusalem where their lords were killed or mad prisoners in battle. When these ladies were ransomed and come forth froth Jerusalem, they assembled and went before Saladin crying mercy. When Saladin saw them he asked who they were and what they sought. And it was told him that they were the dames and damsels of knights who had been taken prisoners or killed in the battle. Then he asked what they wished and they answered for God’s sake have pity on them, for the husbands of some were in prison and some others were dead and they have lost their lords and in the name of God let him counsel and help them, when saladin saw them weeping, he had great compassion for them and wept himself for pity. And he bad the ladies whose husbands were alive to tell him where they were caplives and as soon as he could go to the prisons he would set them free. (And all were released wherever they were found). After that he commanded that the dames and damsels whose lords were dead there should be handsomely distributed from his own treasure, to some more and others less according to their estate. And he gave them so much that they gave praise to God and published abroad the kindness and honour which saladin had done to them.

অতঃপর আমি (বালিয়ানের সহযোগী) আপনাকে (বালিয়ানকে) একটি বিরল সৌজন্যতার উপাখ্যান শোনাতে চাই। সালাহউদ্দীন নাইটদের স্ত্রী ও কন্যাদের প্রতি এ সৌজন্যতা প্রদর্শন করেছিলেন এসব নাইট জেরুজালেমে পালিয়ে গিয়েছিলেন এবং যুদ্ধে হয়তো বন্দি নয়তো নিহত হয়েছিলেন। এসব মহিলার ওপর মুক্তিপণ ধার্য করা হলে তারা জেরুজালেম থেকে বের হয় এবং দয়া করার জন্য কাঁদতে কাঁদতে সমবেতভাবে সালাহউদ্দীনের সামনে হাজির হয়। তিনি তাদের দেখতে পেয়ে জানতে চান তাঁরা কারা। তারা কি চায়। তখন সালাহউদ্দীনকে জানানো হয় তারা হলো বন্দি অথবা নিহত নাইটদের স্ত্রী ও কন্যা।

তারপর তিনি জানতে চান তাদের অভিপ্রায় কি। জবাবে নাইটদের স্ত্রীরা জানায় ঈশ্বরের নামে তারা অনুগ্রহ চায়। তাদের কারো স্বামী কারাগারে আবার কারো স্বামী মৃত। তারা তাদের অভিভাবদের হারিয়েছে। ঈশ্বরের নামে তারা তাদের বন্দি স্বামীর পরামর্শ ও সাহায্য চায়। সালাহউদ্দীন তাদেরকে কাঁদতে দেখে তাদের প্রতি সহানুভূতিতে নিজেও কেঁদে ফেলেন। যেসব মহিলার স্বামী জীবিত ছিল তিনি তাদের বিদায় জানান। তাদের স্বামীদের কোথায় বন্দি করে রাখা হয়েছে তা তাকে জানাতে বলেন এবং তিনি কারাগারে প্রবেশ করা মাত্র মুক্তি দেবেন। (প্রত্যেককে খুঁজে পাওয়া মাত্র মুক্তি দেওয়া হয়) তারপর তিনি নিহত নাইটদের স্ত্রী ও কন্যাদের তাদের জমিজমা অনুযায়ী তার নিজের তহবিল থেকে যথেষ্ঠ পরিমাণ অর্থ বিতরণ করার নির্দেশ দেন। কাউকে দেয়া হয়েছিল কিছু বেশি বা কাউকে সামান্য কম। তিনি তাদের এত দান করেছিলেন যে, তারা ঈশ্বরের প্রশংসা করে এবং বাইরে এসে তাদের প্রতি সালাহউদ্দীনের উদারতা ও সন্মান প্রদর্শনের উপাখ্যান প্রকাশ করে।

এই হলো মুসলিম শাসকদের মানবতার প্রতি শ্রদ্ধা। এই হলো তাদের আদর্শ। তাদের ছাড়া আরো অনেক শাসক যেমন, ওসমান, আলী (রা:), মুয়াবিয়া, ওমর ইবনে আব্দুল আযীয, ইমামুদ্দীন জঙ্গী, নুরুদ্দীন জঙ্গী, আব্দুর রহমান, কুতুবুদ্দীন আইবেকসহ হাজারো মুসলিম শাসক আছেন যারা এই অনুপম চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। উজ্জ্বল করেছিলেন ইসলামের ভাবমূর্তি। সমুন্নত রেখেছিলেন মানবতা ও মানবিকতাকে।

লেখকের সভ্যতার দ্বন্দ্ব ও আগামী দিনের পৃথিবীতে ইসলাম গ্রন্থ থেকে


আরো সংবাদ



premium cement