২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বন্যায় পশুখাদ্যের ব্যাপক সংকট

- ছবি : নয়া দিগন্ত

সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে যমুনা নদীর পানি গত দুই সপ্তাহ বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে অবশেষে কমতে শুরু করেছে। এরইমধ্যে বাঁধ ধসে গেছে তিনটি। অনেক রাস্তঘাট লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। চরাঞ্চলগুলোর বেশির ভাগ পরিবারের ভাগ্য বদলের সম্বল গবাদিপশু পালনে বিপাকে পড়েছেন ক্ষুদ্র খামারী ও কৃষকেরা।

সাম্প্রতিক উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ছয়টি পুরোপুরি ও দুইটির অর্ধেক স্থান ডুবে গেছে বন্যার পানিতে। ফলে এসব চরের মানুষ তাদের পশুখাদ্য যোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছে। তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে পশুখাদ্যের।

যমুনার বিশাল চরে জন্ম নেওয়া কাইশা, বর্ধনশীল নেপিয়ার ঘাস ও আগাছাই পশুখাদ্যের প্রধান উপকরণ। এরইমধ্যে ডুবে থাকা চরগুলো জেগে উঠতে শুরু করেছে। পলিবাহিত কাদা আর বালিতে ঢেকে গেছে কাইশা, পচে গেছে বাড়ির আঙিনায় রাখা বছর ধরে খাওয়ানোর খড়।

উপজেলার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত খাসরাজবাড়ি ইউনিয়নের গোদারবাগ গ্রামে গিয়ে কথা হয় কৃষক বেল্লাল মিয়ার সাথে। তিনি ১৭টি গরুসহ আশ্রয় নিয়েছেন ওই গ্রামে।

তিনি জানান, প্রতিবছর কোরবানির ঈদে গরু বেচে দেই। এবার ঈদ আসার আগেই চরগুলো ডুবে গেল। যা খড় আছিল তাও শ্যাষ। এহন কালকে হাটে নিয়া যা দাম কয় সব বেইচা দিমু।

চরছিন্না গ্রামের বাথান মালিক বাদশা নিয়া জানান, দুইজন রাখাল আমার ২৫টি গরু ও ৪ মহিষ দেখাশোনা করতো। পানি ওঠায় নৌকায় করে শালগ্রাম মাদ্রাসা মাঠে কোনমতে আশ্রয় নিয়েছি। সব পশুতো আর বিক্রির ইচ্ছে ছিলো না। কিন্তু ফিরে গিয়ে কি খাওয়াবো সেটাই চিন্তা। ওই মাদ্রাসা মাঠে তারা মিয়া, নুরুল ইসলাম, সবুজ মন্ডলসহ বেশ কয়েকজন প্রায় তিনশতাধিক পশু নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।

সব মিলিয়ে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের চরাঞ্চলে পশুখাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এই সুযোগে যমুনার ডানতীরের বিড়া এলাকার স্থানীয় হাট-বাজারগুলোতে পশুখাদ্য বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। আসন্ন কোরবানির ঈদে বেশি লাভের আশায় বছরের শুরু থেকে গরু পালনকারী কৃষক ও খামারীগণ এখন লোকসানের শঙ্কায় রয়েছেন।

অনেকে কয়েকদিন আগেই তাদের পশু বিক্রি করছেন। এ কারণে গত শনিবার উপজেলার সবচেয়ে বড় নাটুয়ারপাড়া পশুর হাটে অনেক বেশি পশু বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হক সরকার।

কাজিপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. সোহেল আলম খান জানান, এরই মধ্যে সরকারিভাবে আড়াই মে. টন খাদ্য বরাদ্দ পাওয়া গেছে। উপজেলা পরিষদ থেকেও কিছু পাওয়া যাবে যা বন্যাকবলিত এলাকার পশু পালনকারীদের মধ্যে শিগগিরই বিতরণ করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement