২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

চাঞ্চল্যকর সুমি হত্যা মামলার রায়ে স্বামীসহ ৪ ভাইয়ের মৃত্যুদণ্ড

- ফাইল ছবি

সিরাজগঞ্জে চাঞ্চল্যকর গৃহবধু সুমি হত্যা মামলার রায়ে স্বামীসহ চার ভাইয়ের মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রদান করেছেন আদালত। একই সাথে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার সিরাজগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক ফজলে খোদা মোঃ নাজির এ মামলার রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন স্বামী সুবির কুমার রায়, ডাঃ সুশীল কুমার রায়, সুনীল কুমার রায় ও মনোরঞ্জন কুমর রায়।

মামলা সূত্রে জান যায়, ১৯৯৯ সালের সিরাজগঞ্জ শহরের মুজিব সড়কস্থ তৎকালীন শীলা জুয়েলার্স এর মালিক মৃত সতীশ চন্দ্র রায়ের চতুর্থ ছেলে জুয়েলারী ব্যবসায়ী সুবির কুমার রায়ের সাথে টাঙ্গাইল শহরের শাহাপাড়ার গোবিনাধ বিশ্বাসের কন্যা সুমি রানীর বিয়ে হয়। বিয়ের সময় দাবিকৃত পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের আড়াই লাখ টাকা কনে পক্ষ পরিশোধ করে। বাকি টাকার জন্য সুবির কুমার রায় ও তার পরিবারের সদস্যরা সুমি রানী রায়কে নির্যাতন করত।

পরবর্তিতে ২৯ জুন ২০০১ সালে যৌতুকের বাকি টাকার মধ্যে ৫০ হাজার টাকা গোপিনাথ বিশ্বাস সিরাজগঞ্জে এসে তার মেয়ের জামাতার ভাই ডাঃ সুশীল কুমার রায়ের নিকট দিয়ে যান।
যৌতুকের বাকি টাকার জন্য তার মেয়ের জামতা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা সুমি রানীকে নির্যাতন করতেই থাকে। এরপর ২০০১ সালের ১২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় সুবির কুমার রায় ও তার পরিবারের সদস্যরা যৌতুকের বাকি টাকার জন্য সুমি রানী রায়কে চাপ সৃস্টি করলে সুমি তার বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে অস্বীকার করে। এসময় আসামী সুবির কুমার রায়, আসামী ডাঃ সুশীল কুমার রায়, সুনীল কুমার রায়, মনোরঞ্জন কুমার রায়ের সহায়তায় সুমিকে গলা টিপে ও মারপিট করে হত্যা করা হয়। এ ব্যাপারে মনোরঞ্জন কুমার রায় সিরাজগঞ্জ সদর থানায় সুমি রানীর গলায় কাপড় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে থানায় জিডি করে।

পরে ময়না তদন্ত রিপোর্টে সুমিকে হত্যা করা হয়েছে বলে দেখা যায়। এরপর তদন্ত কর্মকর্তা এস আই মনিরুল ইসলাম ১৫ জানুয়ারী ২০০১ তারিখে হত্যা মামলা দায়ের করেন। সুমির পিতা গোপিনাথ বিশ্বাস, সুবির ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর থেকে সুবির, সুশীল, ডাঃ সুনিল, মনোরঞ্জন পলাতক রয়েছেন।

দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে চলা মামলার বাদীপক্ষের ১২ জনের সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে বিচারক মঙ্গলবার এ রায় প্রদান করেন। রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচলনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতের বিশেষ পিপি শেখ আব্দুল হামিদ লাভলু, বিশেষ এপিপি আনোয়ার পারভেজ লিমন এবং আসামী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত স্টেট ডিফেন্স অ্যাডভোকেট এস, এম জাহাঙ্গীর আলম।


আরো সংবাদ



premium cement