২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দৃষ্টিপাত : পানির বিকল্প উৎস হোক বৃষ্টির পানি

-

পৃথিবীর ৭০ শতাংশ জল ও ৩০ শতাংশ স্থল। কিন্তু এই পানির বেশির ভাগই আমাদের ব্যবহারের অযোগ্য। কারণ মোট পানির প্রায় ৯৭ শতাংশ পানিই লোনা। বাকি ৩ শতাংশ ‘মৃদু’ পানির আবার ৯৭ শতাংশ হিমবাহ ও বরফ আকারে গ্রিনল্যান্ড, সাইবেরিয়া ও হিমালয়ে জমা আছে। বাকি তিন শতাংশ মৃদু পানি নদী-নালা, খাল-বিল ও বৃষ্টি রূপে প্রকৃতিতে রয়েছে। আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নানা কাজে ‘মৃদু পানি’ ব্যবহার করে থাকি। আর এই জন্য আমরা প্রতিদিন ব্যাপক হারে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করি, যা ভূগর্ভস্থ পানির স্তরকে নামিয়ে দিচ্ছে। ভূগর্ভস্থ পানির অধিক উত্তোলন দেশকে এক নতুন সঙ্কটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। শহর অঞ্চলের বেশির ভাগ জলাশয় ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। নতুন নতুন রাস্তাঘাট তৈরি করা হচ্ছে। কংক্রিটের স্থাপনার কারণে বৃষ্টির পানি মাটিতে পৌঁছতে পারছে না। আগে বৃষ্টির পানি মাটি শুষে নিত। বর্তমানে তা না হওয়ায় পানি ভূ-গর্ভে পৌঁছতে পারছে না। ফলে ক্রমে ভূগর্ভের পানির স্তর নেমে যাচ্ছে। দিন দিন মৃদু পানির সঙ্কট বাড়ছে।
দেশের দক্ষিণ অঞ্চলে ধীরে ধীরে লবণাক্ত পানির পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষত ঘূর্ণিঝড় ‘আইলার’ পর থেকে পিরোজপুর, বাগেরহাট, খুলনা এবং সাতক্ষীরা অঞ্চলগুলোতে পানিতে লবণাক্ততার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের এখন থেকেই সচেতন হওয়া প্রয়োজন। পানির অপচয় থেকে বিরত থাকা উচিত। অবিবেচকের মতো জলাশয় ভরাট করা থেকে বিরত থাকতে হবে। যে পরিমাণ পানি আমরা ভূগর্ভ থেকে উত্তোলন করি, সে পরিমাণ পানি যেন ভূগর্ভে ফেরত যায়, সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। বেশি বেশি পুকুর খনন এবং সেচ সাশ্রয়ী ফসল উৎপাদন করতে হবে। দেখা যায় মৃদু পানির বেশির ভাগ অংশই আমরা সেচে খরচ করে ফেলি।
সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলোÑ মৃদু পানির বিকল্প উৎসের সন্ধান করা। বৃষ্টির পানি মৃদু পানির খুব ভালো একটি উৎস। এর নানা উপকারিতাও রয়েছে। বৃষ্টির পানি হজম শক্তি বাড়ায়, ক্যান্সার রোগীদের ক্ষেত্রে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের কাজ করে, চুল সুন্দর করে, আলসার নিরাময় এবং ব্যাকটেরিয়া-নাশক হিসেবে কাজ করে। তাই আমাদের বেশি করে বৃষ্টির পানি ব্যবহারের দিকে নজর দেয়া উচিত।
লেখক : শিক্ষার্থী, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

 


আরো সংবাদ



premium cement