২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এই হেলমেট পরা লোকজন ছাত্রলীগের : মির্জা ফখরুল

এই হেলমেট পরা লোকজন ছাত্রলীগের : মির্জা ফখরুল - ছবি : সংগ্রহ

নয়াপল্টনে নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশি হামলার ঘটনা ‘পূর্ব পরিকল্পিত’ বলেছে বিএনপি। বুধবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক জরুরী সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ‘‘বিনা কারণে বিনা উস্কানিতে যখন নেতা-কর্মীদের শান্তিপূর্ণ মিছিল আসছিলো সেখানে পুলিশ ঢুকে গিয়ে হঠাৎ করে বাঁধা দিতে শুরু করে এবং এরপরেই টিয়ারগ্যাস ছোঁড়া হয়েছে, সাথে সাথেই গুলি চালানো হয়েছে। বহু নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। তারপরে হঠাৎ করেই পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগালো। পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগালো কারা?”

‘‘এই ছবিগুলো দেখুন। হেলমেট পরা কিছু মানুষ এসে ওই গাড়ির ওপরে আক্রমণ শুরু করলো। আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি এই হেলমেট পরা লোকজন ছাত্রলীগের। অসমর্থিত খবরে আমরা এটা জানতে পেরেছি। আজকের এই হামলার সম্পূর্ণ পূর্ব পরিকল্পিত। পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে আমরা মনে করি।”

নয়াপল্টনে ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘‘এই ঘটনা ঘটানোর উদ্দেশ্য হচ্ছে, নির্বাচনের কর্মসূচিকে বানচাল করা, নির্বাচনকে বানচাল করা। এই আক্রমণ শুধু বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর আক্রমণ নয়, এটা গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণ, এটা সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের ওপর আক্রমণ।”

‘‘যখন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে, বিরোধী দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে, যখন উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে তখনই এই আক্রমন। সেই আক্রমণটা সরাসরি সরকারের কাছ থেকে নির্বাচন কমিশনের যোগসাজসে এলো।”

তিনি বলেন, নয়া পল্টনের এই ঘটনার পর সন্ধ্যায় অফিস থেকে যারা বেরিয়েছেন তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমাদের বগুড়ার সাবেক এমপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হেলালুজ্জামান লালু, গ্রাম সরকার সম্পাদক আনিস উজ্জামান খান বাবু এবং খুলনা জেলার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমির রেজা খানসহ কমপক্ষে ৬০/৭০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

‘‘এটাকে আমরা হালকা করে দেখছি না। আমরা নির্বাচন কমিশনকে পরিস্কার করে বলতে চাই, এই মামলাগুলো প্রত্যাহার করতে হবে। পুলিশ প্রশাসনকে বলতে চাই, অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় এই নির্বাচনের ব্যাপারে আমাদের সিদ্ধান্ত পুনবির্বেচনা করতে এতটুকু দ্বিধাবোধ করবো না। এ দায়-দায়িত্ব বর্তাবে সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের ওপর ও সরকারের ওপরে।”

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘‘ঘটনার পর সরকারের একটি নির্দিষ্ট মহল অভিযোগ করলো যে, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে। এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটা অত্যন্ত সাজানো একটা পরিকল্পনা। ‘‘

‘‘ সেই পরিকল্পনা হচ্ছে, এই সাজানো হামলা করে বিএনপিকে দায়ী করে আবার বিএনপির ওপর হামলা নির্যাতন শুরু করা। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আজকে সুপরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে বানচাল করার জন্যে এই প্লট তৈরি করেছে। আমরা বক্তব্য পুলিশ আক্রমন করেছে এবং তাদের ছত্রছায়ায় যারা গাড়িতে আগুন লাগিয়েছে হেলমেট বাহিনী।”

নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন দমাতে ‘হেলমেট বাহিনী’ শিশু শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমনের কথাও তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।
নির্বাচন কমিশন পুলিশ প্রশাসনের কাছে যে নির্বাচনী আচরণ বিধি বন্ধের যে নির্দেশনা দিয়েছে তা প্রত্যাহারের দাবিও জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘‘ প্রধানমন্ত্রী আজকে গণভবনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রার্থী প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ব্যক্তির সাথে মিটিং করেছেন। সরকারি প্রতিষ্ঠান গণভবনে। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর পদকে অপব্যবহার করে সরকারি সুযোগ সুবিধা নিয়ে তিনি নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গ করেছেন।”
‘‘ আমরা দেখতে চাই, নির্বাচন কমিশন কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেন।”

সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে রাতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিএনপিতে যোগদান অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন যে, সরকার একাদশ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে।

তিনি বলেন, ‘‘ নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য আজকে আমাদের কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশ হামলা চালিয়েছে। এসব সহিংসতা করে তারা নির্বাচনকে বানচাল করতে চায়।”

‘‘ আমি স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই,আমরা কোনোভাবেই নির্বাচন বানচাল করতে দেবো না। আমরা মনে করি নির্বাচনের মাধ্যমেই এই সরকারের অপসারণ হবে, নির্বাচনই সরকার পরিবর্তনের একমাত্র পথ।”

গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে রাতে গাইবান্ধার নেতা কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ফারুক আলম সরকার বিএনপিতে যোগদান উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জেলার সাহঘাটা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
যোগদান অনুষ্ঠানে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, গাইবান্ধা জেলা সভাপতি ডা. সৈয়দ মইনুল হাসান সাদিক, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুন নবী টুটুল ও শাহঘাটা উপজেলার সাধারণ সম্পাদক মইন প্রধান লাবু।

সূত্র : বিএনপি ফেসবুক

 


আরো সংবাদ



premium cement