২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

প্রধানমন্ত্রীর চিঠিতে যা আছে

ড. কামাল হোসেন কে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর চিঠি। - ছবি: সংগৃহীত

সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। আগামী ১ নভেম্বর বহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।

প্রধানমন্ত্রীর চিঠি পৌঁছে দিতে আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বেইলি রোডে ড. কামাল হোসেনের বাসায় যান আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। ড. কামাল তার চিঠি গ্রহণ করে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলেন। এ সময় সেখানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ও গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুও উপস্থিত ছিলেন।

মোস্তফা মহসিন মন্টু জানান, সংলাপে সাত দফা দাবিসহ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

আর ড. আবদুস সোবহান গোলাপ বলেন, সংবিধানসম্মত আলোচনার জন্য সব সময় প্রস্তুত রয়েছে আওয়ামী লীগ।

ড. কামাল হোসেন কে দেয়া চিঠিতে যা আছে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিঠির শুরুতেই ড. কামাল হোসেনকে সালাম ও শুভেচ্ছা জানান। তিনি লিখেন, ‘জনাব, সালাম ও শুভেচ্ছা নিবেন। আপনার ২৮ অক্টোবর ২০১৮ তারিখের পত্রের জন্য ধন্যবাদ। অনেক সংগ্রাম ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে সংবিধানসম্মত সকল বিষয়ে আলোচনার জন্য আমার দ্বার সর্বদা উন্মুক্ত। তাই, আলোচনার জন্য আপনি যে সময় চেয়েছেন, সে পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ০১ নভেম্বর ২০১৮ তারিখ সন্ধ্যা ০৭-০০ টায়, আপনাদের আমি গণভবনে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’

এর আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপে বসার আগ্রহ দেখিয়ে রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। চিঠির বিষয়বস্তু নিয়ে গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত সবার সঙ্গে আলোচনা করেন। সেখানেই প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত দেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে বসার।

বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দলটির সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, দেশের রাজনীতির জন্য একটি সুখবর আছে। যা সারা দেশের রাজনীতির অঙ্গনে স্বস্তির সুবাতাস বইয়ে দেবে।

এরপর আজ মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ড. কামাল হোসেনের কাছে সংলাপের চিঠি দেয়া হয়।

 

আরো পড়ুন : 

ঐক্যফ্রন্টকে গণভবনে নৈশভোজের দাওয়াত
নিজস্ব প্রতিবেদক
 ২৯ অক্টোবর ২০১৮, ২২:৪৯

 


ঐক্যফ্রন্টকে গণভবনে ডিনারের আমন্ত্রণ। - সংগৃহীত
ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে নতুন গঠিত বিরোধীজোটের অন্যতম একজন নেতা মোস্তফা মহসীন মন্টু বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তাকে ফোন করে আনুষ্ঠানিকভাবে সংলাপে সম্মতির কথা জানিয়েছেন।

রাত ৮টার দিকে এই দু’নেতার মধ্যে ফোনে কথা হয়। এ সময় ঐক্যফ্রন্টকে গণভবনে নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানান ওবায়দুল কাদের। জবাবে মহসিন মন্টু তার জোটের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সময় দিবেন বলে জানান।


মহসিন মন্টু বলেন, ‘সংলাপের সময় এখনো নির্ধারণ হয়নি। আমাদের জোটের ১৫ সদস্য এতে অংশ নিতে পারেন।’

মন্টু বলেন, বুধ অথবা বৃহস্পতিবার সরকারের পক্ষ থেকে রাতে খাবার দাওয়াত দেওয়া হতে পারে, তবে স্থান জানানো হয়নি। ওবায়দুল কাদের তার কাছে ১০ থেকে ১৫ জনের একটি তালিকা চেয়েছেন।

প্রস্তাবের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংলাপে বসতে রাজী হওয়ার সরকারী সিদ্ধান্তে কিছুটা বিস্মিতই হয়েছেন বিরোধী নেতারা।

ঐক্যফ্রন্ট নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এত দ্রুত সরকার যে সংলাপের প্রস্তাবে সায় দেবে তা তারা ভাবেননি।

মন্ত্রীসভার বৈঠকের পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পক্ষ থেকে সংলাপে বসার ঘোষণা আসার পরপরই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা এক বৈঠক করেন।

বৈঠকের পর জোটের দুই শীর্ষ নেতা বলেন, সংলাপে বসার সরকারী সিদ্ধান্তকে তারা স্বাগত জানাচ্ছেন। জোটের প্রধান শরিক বিএনপির নেতা মওদুদ আহমেদ বলেন, সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ঐক্যফ্রন্ট স্বাগত জানাচ্ছে। আমরা এখন সংলাপের দিনক্ষণ ও স্থান জানার জন্য অপেক্ষা করছি।

মওদুদ আহমেদ বলেন, সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের একটা সুযোগ অন্তত তৈরি হয়েছে।

একই ধরনের কথা বলেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না। সরকার এত দ্রুত আমাদের প্রস্তাবে সাড়া দেবে বুঝিনি। সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

মাত্র গতকালই (রোববার) জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে একটি চিঠিতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই তাদের সাত-দফা দাবি নিয়ে সরকারকে আলোচনা বসার প্রস্তাব করা হয়।

বাংলাদেশে গত প্রায় তিন দশক ধরে মীমাংসা আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানে যে সব চেষ্টা হয়েছে তাতে সাফল্যের নজির নেই বললেই চলে।

তত্বাবধায়ক সরকারের ইস্যুতে সৃষ্ট সঙ্কট নিরসনে ১৯৯৪ সালে জাতিসংঘ মহাসচিব মধ্যস্থতার জন্য তার একজন দূত পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু তা সফল হয়নি। ২০০৪ সালে তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের মহাসচিব পর্যায়ের দীর্ঘ সংলাপেও কোনো লাভ হয়নি, যার জের ধরে ২০০৭ সালে সেনা-সমর্থিত একটি সরকার ক্ষমতা নিয়ে নেয়। এরপর ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি যাতে অংশ নেয়, তা নিশ্চিত করতে বিদেশীদের মধ্যস্থতায় মীমাংসার একাধিক চেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছিল।


আরো সংবাদ



premium cement