২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বাম জোটের গণঅবস্থান

শাসক শ্রেণী ডাকসু নির্বাচনকে ভয় পায় : অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম

রাজনীতি
অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী - ফাইল ছবি

বাম গণতান্ত্রিক জোটের গণঅবস্থানে সংহতি জানাতে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, সারা দেশের সর্বস্তরের জনগণ অবিলম্বে ডাকসু (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন) নির্বাচন দাবি করেছে। অথচ সরকার ডাকসু নির্বাচন দিতে রাজি না। নিয়মিত ডাকসু নির্বাচন হলে দেশে সাংস্কৃতিক অঙ্গন মুখরিত হয়ে উঠবে। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বিকশিত হবে। নেতৃত্ব সৃষ্টি হবে। অথচ এ শাসক শ্রেণী ডাকসু নির্বাচনকে ভয় পায়।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক পরিবেশের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ মঙ্গলবার বাম গণতান্ত্রিক জোটের গণঅবস্থানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি একথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, এটা বৃটিশ, পাকিস্তান আমলেও কল্পনা করা যেত না। এমনকি স্বাধীনতার পরে অল্প কিছু সময়েও ডাকসু’র ব্যাপারে শাসকশ্রেণী তেমন উচ্চবাচ্য করেনি। তিনি অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচন দেয়ার জন্য সরকারের কাছে আহবান জানান।

অপরদিকে সিপিবি’র সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম অবিলম্বে ‘নির্বাচনকালীন সরকার’ ও তার ‘রুটিন কাজের’ বিধান রেখে অষ্টাদশ সংশোধনী পাশ করার জন্য সংসদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সময় নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হবে’ এবং ‘সে সরকার শুধু রুটিন কাজ করবে’- ক্ষমতাসীনদের এসব কথা যদি প্রকৃতই তাদের অন্তরের সদিচ্ছাপ্রসূত হয়, তাহলে তা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করে নিতে তাদের কোনো আপত্তি থাকার কথা নয়। এক্ষেত্রে এখন যা প্রয়োজন তা হলো এ বিষয়ে ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক সদিচ্ছা। যদি সেই সদিচ্ছার অভাব না থাকে তাহলে এ বিষয়ে এখনই ক্ষমতাসীনদেরকে সরকারের বাইরের গণতান্ত্রিক দল ও শক্তির সাথে দ্রুত শলাপরামর্শ শেষ করে ‘নির্বাচনকালীন সরকার গঠন ও তা শুধু রুটিন কাজ করবে’Ñ মর্মে ‘অষ্টাদশ সংবিধান সংশোধন বিল’ প্রস্তুত করে আগামী ২৩ অক্টোবর যে সংসদ অধিবেশন বসছে সে অধিবেশনেই এই সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ করার ব্যবস্থা করতে হবে।

সেলিম আরও বলেন, সংবিধান সংশোধনের জন্য সময়ের স্বল্পতার অজুহাত দেখানো গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ এরশাদী স্বৈরশাসনের পতনের পর তিনি যার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন সেই বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদের নাম সবাই মিলে চূড়ান্ত করতে ১২ ঘণ্টা সময়ও লাগেনি। সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীও মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে উত্থাপিত, আলোচিত ও অনুমোদিত হয়েছিল। সদিচ্ছা থাকলে সংবিধানের অষ্টাদশ সংশোধনীয় স্বল্পদিনের অধিবেশনে পাশ করানো সম্ভব।

চার দফা সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবিতে এ কর্মসূচিতে উপস্থিত আছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, সিপিবি সাধারণ সম্পাদক মো: শাহ আলম, বাসদ নেতা বজলুর রশিদ ফিরোজ, সিপিবি নেতা সাজ্জাদ জহির চন্দন, রুহিন হোসেন প্রিন্স ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু ও সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হকসহ জোটের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

জোটের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি দাবি হচ্ছে তফসিল ঘোষণার পূর্বে জাতীয় সংসদ ভেঙে দিতে হবে। বর্তমান সরকার পদত্যাগ করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তদারকি সরকার গঠন করতে হবে। জনগণের আস্থাহীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে এবং সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা প্রবর্তনসহ গোটা নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করতে হবে।

সকাল ১১টায় শুরু হওয়া এ অবস্থান কর্মসূচি দুপুর ২টা পর্যন্ত চলবে।


আরো সংবাদ



premium cement