২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নির্বাচন ও আন্দোলনের বার্তা দেবে বিএনপি

নির্বাচন ও আন্দোলনের বার্তা দেবে বিএনপি - ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির সমাবেশ আজ। ২২ শর্তে গতকাল দুপুরে এ সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত হওয়ার আগেই এ সমাবেশের মধ্য দিয়ে আন্দোলন ও নির্বাচন নিয়ে দেশী-বিদেশী সব মহলকে সুনির্দিষ্ট বার্তা দিতে চাইছে বিএনপি। জনসভায় লাধিক মানুষের জমায়েত করে দলটি তাদের আগামী দিনের দাবি ও ল্য উত্থাপন করবে।
দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা বলেছেন, যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত দলগুলো তাদের দাবি ও ল্য ইতোমধ্যে তুলে ধরেছে। জাতীয় ঐক্যে যুক্ত হওয়ার আগে বিএনপিও তাদের দাবি ও ল্য জানাতে চায়। মূলত এ জন্যই এ জনসভা ডাকা হয়েছে। একইসাথে সমাবেশে বড় শোডাউনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে । 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, একটি সফল ঐতিহাসিক জনসভার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বেলা ২টায় এ সমাবেশ শুরু হবে। কী কারণে বিএনপি আন্দোলনে যেতে চায়, কী হলে নির্বাচনে যাবে সেসব বিষয় স্পষ্ট করা হবে জনসভায়। আন্দোলনে যাওয়ার একটি বার্তাও দেবেন সিনিয়র নেতারা। 
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনসভা থেকে আমরা আমাদের নীতিনির্ধারণী বক্তব্য দেবো; ভবিষ্যতের কর্মপন্থা, ভবিষ্যতের কর্মসূচি এগুলোই আসবে সেখানে।
জানা গেছে, সমাবেশ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের পূর্ব শর্ত হিসেবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে সংসদ ভেঙে দেয়া, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন, ইভিএম ব্যবহার না করাসহ সাত দফা দাবি তুলে ধরা হবে। নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে বিএনপির অবস্থান বা সরকার গঠন করলে তাদের অবস্থান কী হবে, তার স্পষ্ট বার্তা দেয়া হবে এতে। বিশেষ করে একটি সুষ্ঠু ও নিরপে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সরকার গঠিত হলে রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রতিহিংসার রাজনীতির পরিবর্তে গণতন্ত্র, সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং মতায় ভারসাম্য আনার অঙ্গীকার থাকবে। প্রতিবেশী দেশ ভারতের উদ্দেশেও বার্তা দেয়া হবে। বিশেষ করে কোনো ধরনের সন্ত্রাসবাদকে মদদ না দেয়া এবং কোনো জঙ্গিগোষ্ঠীকে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে না দেয়ার অঙ্গীকার থাকবে এ বার্তায়। সশস্ত্র বাহিনীকে আরো আধুনিক, শক্তিশালী ও কার্যকর করা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রতিষ্ঠানগুলোকে যথাযথভাবে সংস্কার ও কার্যকর করার অঙ্গীকার থাকবে। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, সমাবেশ থেকে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের দাবি ও লক্ষ্যগুলো ঘোষণা করব। তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে যুক্তফ্রন্ট ও ঐক্য প্রক্রিয়া পাঁচ দফা দাবি ও ৯ লক্ষ্য ঘোষণা করেছে। 

জানা গেছে, সমাবেশ থেকে দলের সাত দফা দাবির পাশাপাশি ১২টি লক্ষ্য ঘোষণা করা হবে। তবে কোনো আলটিমেটাম না দিয়ে সরকারকে এসব দাবি বাস্তবায়নে আলোচনায় বসার আহ্বান জানানো হবে। 
কত লোক এসেছে সমাবেশের পর মন্তব্য করবেন-গয়েশ্বর রায় : গতকাল বিকেলে সমাবেশস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পরিদর্শনে গিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর রায় বলেন, সরকার বিএনপির সমাবেশ ঘিরে কোনো ঘটনা ঘটানোর জন্য আগাম সহিংসতার কথা বলছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, বিএনপির মিটিংয়ে বিএনপি কেন অস্থিরতা করবে, সহিংসতা করবে। আমরা অত্যন্ত সুশৃঙ্খল এবং কঠোর নজরদারির মাধ্যমে সমাবেশ করব। সমাবেশে লোক আসার পর আপনারা মন্তব্য করবেন কত লোক এসেছে। 

তিনি বলেন, সরকার গাড়ি বন্ধ করতে পারে, রিকশা বন্ধ করতে পারে, ট্রেন বন্ধ করতে পারে, লঞ্চও বন্ধ করতে পারে। তারা অনেক কিছুই করতে পারে। তারা সবকিছু করবে, তারপরও আমরা সেটাকে অতিক্রম করব। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে দাবিগুলো আছে সেগুলোকে একত্র করে মিটিংয়ে আমরা উপস্থাপন করব। 

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মজিবুর রহমান সারোয়ার, ফজলুল হক মিলন, আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ। 
গতকাল বেলা ১১টার আগে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল মহানগর পুলিশ কমিশনারের সাথে বৈঠক করে। তখন ২২ শর্তে তাদের সমাবেশের অনুমতির কথা জানানো হয়।


আরো সংবাদ



premium cement