১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলকদ ১৪৪৫
`


ট্রাম্প শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা করলে অসলো চুক্তি মানবে না ফিলিস্তিন

ফিলিস্তিনিরা ওযাশিংটনকে আর মধ্যস্থতাকারী মানে না
সংবাদ সম্মেলনে ফিলিস্তিনের মধ্যস্থতাকারী সায়েব এরেকাত : ইন্টারনেট -

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি কথিত ‘মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা’ ঘোষণা করেন তাহলে ‘অসলো চুক্তির’ মূল শর্তগুলো থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন ফিলিস্তিনের নেতারা। ৯০-এর দশকে ইসরাইলের সাথে স্বাক্ষরিত চুক্তি অসলো চুক্তি (অ্যাকর্ড) নামে পরিচিত।
অসলো চুক্তির আওতায় ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে ফিলিস্তিন লিবারেশন অরগানাইজেশন (পিএলও) ইসরাইলের শান্তিপূর্ণ অবস্থানকে স্বীকৃতি দেয় এবং ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার ও লক্ষ্য অর্জনে সহিংসতা পরিহারের ঘোষণা দেয়। অসলো অ্যাকর্ড ইসরাইলের সাথে ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক নিরাপত্তা সহযোগিতা চুক্তি হিসেবেও পরিচিত।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আজ মঙ্গলবার নিয়মিত বৈঠকের আগেই মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশ করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও দেশটির বিরোধী দলের নেতা বেনি গান্টজকে ওয়াশিংটনে আমন্ত্রণ জানানোর পর গত শুক্রবার তিনি এ মন্তব্য করেন।
যুক্তরাষ্ট্রকে ইসরাইলের সবচেয়ে বড় বন্ধু হিসেবে আখ্যা দেয়া নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি এই সপ্তাহে ওয়াশিংটনে ‘ইতিহাস গড়ার’ প্রত্যাশা করছেন। কথিত এই শান্তি চুক্তি ইতোমধ্যে প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া তাদেরকে হোয়াইট হাউজে বৈঠকের আমন্ত্রণও জানায়নি ওয়াশিংটন। ট্রাম্প প্রশাসন জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার পর থেকে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ ট্রাম্পের ওপর নাখোশ। এ নিয়ে উভয়পক্ষের উত্তেজনার মধ্যেই ট্রাম্প তার মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশের ঘোষণা দেন। বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলো এ বিষয়ে একমত যে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে জেরুসালেমের ভাগ্য নির্ধারণ করা উচিত। ফিলিস্তিনের প্রধান মধ্যস্থতাকারী সায়েব এরেকাত এএফপিকে বলেছেন, ‘ট্রাম্প তার পরিকল্পনা প্রকাশ করলে অসলো চুক্তির অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তি থেকে সরে আসার অধিকার রয়েছে পিএলওর।’ এরেকাত বলেন, ‘ট্রাম্পের এই উদ্যোগ ফিলিস্তিনের ভূখণ্ডে ইসরাইলের অস্থায়ী দখলকে স্থায়ী দখলে পরিণত করবে।’
১৯৯৫ সালে ওয়াশিংটনে ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে একটি অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এটি দ্বিতীয় অসলো নামে পরিচিত। ওই চুক্তিতে ৯৩ সালের প্রথম অসলো চুক্তির শর্তগুলো বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করা হয়েছিল। উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তিতে পশ্চিম তীর এবং গাজায় ফিলিস্তিনের স্বায়ত্তশাসনের সুযোগ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। একটি স্থায়ী চুক্তি চূড়ান্ত হলে অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তিটি কেবল পাঁচ বছর স্থায়ী হওয়ার কথা ছিল, তবে এটি অঘোষিতভাবে প্রায় দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে কার্যকর রয়েছে। ইসরাইল ১৯৬৭ সাল থেকে পূর্ব জেরুসালেম এবং পশ্চিম তীর দখল করে রেখেছে। আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে অবৈধ হিসেবে বিবেচিত জনবসতিগুলোতে এখন ৬ লাখেরও বেশি ইসরাইলি বসবাস করছে।
পরিকল্পনার বিষয়বস্তু
এই শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের নভেম্বরে। কুশনারের নেতৃত্বে ট্রাম্প প্রশাসনের একদল উপদেষ্টা ও প্রধান মধ্যস্থতাকারী জেসন গ্রিসব্লাট, সহকারী জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা দিনা পাওয়েল ইসরাইলের মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিড ফ্রাইডম্যান ছিলেন ওই দলে। পরিকল্পনাটি কয়েক ডজন পৃষ্ঠার লম্বা হলেও এর রাজনৈতিক রূপরেখা খুব গোপন করে রাখা হয়।
কুশনার বলেন, তার দেয়া শান্তি প্রস্তাবনায় ‘দুই রাষ্ট্র নীতি’ ব্যাপারটি থাকছে না। তবে আগের মার্কিন প্রশাসন এই শান্তি পরিকল্পনাকে দুই রাষ্ট্র নীতির ভিত্তিতেই সমাধান করার চেষ্টা করে আসছিল। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন সেই নীতি থেকে সরে আসে। ওই নীতি অনুযায়ী, ১৯৬৭ সালের ৪ জুন প্রতিষ্ঠিত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত। যার রাজধানী পূর্ব জেরুসালেম। ২০১৮ সালে এই চুক্তির প্রধান মধ্যস্থতাকারী জেসন গ্রিসব্লাট টাইমস অব ইসরাইলকে বলেন, ‘মূল যেসব বিষয় রয়েছে এ পরিকল্পনার মধ্যে সেসব বিষয়ের সমাধানের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে শরণার্থী ইস্যু এবং ইসরাইলের নিরাপত্তা শঙ্কার মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই প্রস্তাব ইসরাইলের নিরাপত্তার বিষয়টির দিকে সবচেয়ে বেশি মনোযোগী। কিন্তু আমরা ফিলিস্তিনিদের প্রতিও ন্যায়বিচার করতে চাই। আমরা একটা ভারসাম্য আনার ব্যাপারে চেষ্টা করে যাচ্ছি। তাই উভয়পক্ষই চুক্তিতে এমন কিছু বিষয় দেখবে যা তাদের মনমতো হবে না। এখানে কোনো নিখুঁত সমাধান নেই।’
ফিলিস্তিনিদের আশঙ্কা এই পরিকল্পনায় অর্থনৈতিক উন্নয়নের লোভ দেখিয়ে তাদেরকে ইসরাইলের দখলদারিত্ব মেনে নিতে বাধ্য করা হবে। এটা হলো ঘুষ। যার মাধ্যমে ইসরাইল পশ্চিম তীর ও জর্ডান উপত্যকার বেশির ভাগ অংশ নিজেদের দখলে নিয়ে নেবে, যেসব এলাকা নিয়ে বিতর্ক চলছেই।
আন্তর্জাতিক সমর্থনে অনিশ্চয়তা
তবে এটা এখনো অজানা যে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণার প্রভাব কি রকম হবে এবং এর পরের ঘটনা কেমন হবে। এই পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক সমর্থন লাভ করতে পারবে কি না এটাও বেশ অস্পষ্ট। জাতিসঙ্ঘ ও বেশির ভাগ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দীর্ঘদিন ধরে দুই রাষ্ট্র সমাধানের কথা বলে আসছে। কিন্তু ট্রাম্পের পরিকল্পনায় তা নেই।

 


আরো সংবাদ



premium cement
যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে মার্কিন বিমানবাহিনীর সদস্য নিহত পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে বিএনপির সমাবেশ শুরু টঙ্গীতে ৩ তলার ছাদ থেকে পড়ে বিএনপি নেতার ছেলের মৃত্যু মালদ্বীপ থেকে সব সৈন্য প্রত্যাহার করেছে ভারত জামিন পেলেন কেজরিওয়াল, তবে ভোটগণনার দিন থাকতে হবে জেলেই পরকীয়া প্রেমিক যুগলের গলায় জুতার মালা : চেয়ারম্যান বরখাস্ত সমাবেশে যোগ দিতে নয়াপল্টনে জড়ো হচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা রংপুরে রেয়াত পদ্ধতি চালুসহ ৪ দফা দাবিতে মানববন্ধন নতুন কোচের সন্ধানে বিসিসিআই, তাহলে কি দ্রাবিড়ের বিদায়! থাইল্যান্ডে এ বছর হিটস্ট্রোকে ৬১ জন প্রাণ হারিয়েছে : সরকার নির্বাচন শেষ হলে আরো সত্য ঘটনা সামনে আসবে, ধর্ষণের অভিযোগ প্রসঙ্গে শাহজাহান

সকল