র্যাব পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে বিজিবির এক পলাতক সৈনিকসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছেন র্যাব-১১ এর সদস্যরা। গত শনিবার রাতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের রূপসী এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো কুড়িগ্রাম জেলার উকিলপুর থানার মাসতীবাড়ী দীঘর এলাকার আবদুল মান্নানের ছেলে জয়নাল আবেদীন (২৭), গাজীপুর জেলার সদর থানার জান্দালিয়াপাড়া এলাকার মৃত মুসলেম উদ্দিনের ছেলে নাজমুল হোসেন (২৭) ও কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদি থানার চরজাকারিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান (২৯)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ইউনিফর্ম পরিহিত ২টি ছবি, বাংলাদেশ র্যাব লেখা ও র্যাবের মনোগ্রামসংবলিত একটি জ্যাকেট, র্যাব সদর দফতরের ভুয়া সিল, অফিসারদের ভুয়া স্বাক্ষরসহ সাতটি নোটিশ, র্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা অফিসার, ডিউটি অফিসার ও তদন্তকারী অফিসার নামীয় চারটি ভুয়া সিল, বিজিবির একটি আইডি কার্ড, বিজিবির এক সেট ইউনিফর্ম, একটি ল্যাপটপ, একটি প্রিন্টার, একটি মোবাইল ও ১৪টি সিম কার্ড জব্দ করা হয়। গতকাল রোববার দুপুরে র্যাব-১১ এর সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক কর্নেল কাজী শামসের উদ্দিন এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, র্যাব প্রতারক চক্রের দ্বারা প্রতারিত ভুক্তভোগী একজনের কাছ থেকে প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে র্যাব-১১। এতে দেখা যায়, প্রতারক চক্রটি র্যাব সদর দফতরের বিভিন্ন পদের সিলমোহর ব্যবহার করে নিজেদের তৈরিকৃত ভুয়া নোটিশ পাঠায়। নোটিশনামায় প্রদত্ত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে টাকা-পয়সা নিয়ে সেটি শেষ করে দেয়া হতো; অন্যথায় গ্রেফতারের ভয় দেখানো হতো। এ পরিপ্রেক্ষিতে গত শনিবার দিবাগত রাতে উৎকোচ গ্রহণ করার সময় ওঁৎ পেতে থাকা র্যাব-১১ সদস্যরা তাদের হাতেনাতে গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারকৃতদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রতারক চক্রের প্রধান আসামি জয়নাল আবেদীন এর আগে বিজিবিতে চাকরি করতেন। ২০১৭ সালে তিনি বিজিবি থেকে পালিয়ে যান। পরবর্তীতে তার নেতৃত্বে একটি প্রতারক চক্র সংগঠিত হয়। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে বিজিবিতে চাকরি দেয়ার নামে অনেক লোকজনের কাছ থেকেও বিশাল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন বলেও জানা গেছে। তারই নেতৃত্বে প্রতারক চক্রটি দীর্ঘ দিন ধরে গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আর্থিকভাবে সম্পদশালী লোকদেরকে র্যাবের মিথ্যা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করার নামে এবং মিথ্যা মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে বিশাল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। এ ক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য ভুয়া নোটিশগুলো স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে পৌঁছানো হতো। সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করার জন্য বিজিবির ইউনিফর্ম পরিহিত ছবি ও র্যাব সদস্যের ছবি এডিটিং করে র্যাবের ইউনিফর্ম পরিহিত ভুয়া ছবি তৈরি করে তারা দেখাত। প্রতারক চক্রটি অবস্থা বুঝে কখনো র্যাবের এসআই এবং কখনো ওয়ারেন্ট অফিসার পরিচয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী ও জনপ্রতিনিধিদেরকে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছিল। গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানান র্যাব-১১ অধিনায়ক।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা