০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`


নতুন উত্তেজনা : ইরানের ওপর নতুন অবরোধকে অবৈধ বলল রাশিয়া

ট্রাম্প, রুহানি ও পুতিন - ছবি : সংগ্রহ

ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে অবরোধ আরোপের প্রস্তুতি নেয়ার প্রেক্ষাপটে রাশিয়া এই অবরোধ আরোপকে অবৈধ উল্লেখ করে এর নিন্দা করেছে।
সোমবার ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, আমরা এ অবরোধকে অবৈধ বিবেচনা করছি।
ইরান বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের একটি গোয়েন্দা ড্রোন ভূপাতিত করার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প তেহরানে সামরিক হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়ে পরক্ষণেই তার মত বদলান।
এর পরিবর্তে তিনি ইরানের ওপর সোমবার বড় ধরণের অতিরিক্ত অবরোধ আরোপের কথা বলেন।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নেতৃত্বে ইরানের সঙ্গে যে পরমাণু চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র গত বছর একতরফাভাবে এ থেকে থেকে বেরিয়ে আসে এবং এর পরই তেহরানের সঙ্গে দেশটির উত্তেজনাকর সম্পর্ক তৈরি হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার হামলা ভণ্ডুল করে দিয়েছে ইরান!
ইরান সোমবার দাবি করেছে যে দেশটির বিরুদ্ধে কোনো ধরনের সাইবার হামলা কখনোই সফল হয়নি।
গত সপ্তাহে দু’দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনাকর মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র ইরানে সাইবার হামলা চালিয়ে দেশটির ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা অকার্যকর করে দিয়েছে বলে মার্কিন গণমাধ্যমগুলোতে খবর প্রকাশিত হয়।
ইরানের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ আজারারি জাহরোমি এক টুইটার বার্তায় বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র অনেক চেষ্টা করেছিল। কিন্তু, সেই হামলা সফল হয়নি।’

শনিবার মার্কিন গণমাধ্যমে দাবি করা হয় যে, চলতি সপ্তাহে তেহরান একটি মার্কিন ড্রোন বিমান ভূপাতিত করার পর ওয়াশিংটন ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও একটি স্পাই নেটওয়ার্কে সাইবার হামলা চালিয়েছে।

ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, মার্কিন ড্রোনটিকে ভূপাতিত করার পর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউএস সাইবার কমান্ডকে ইরানের বিরুদ্ধে সাইবার হামলার চালানোর অনুমোদন দেন।
সংশ্লিষ্টদের বরাত দিয়ে পোস্ট জানায়, এই সাইবার হামলায় ইরানের যেসব কম্পিউটার রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণ করে সেগুলো বিকল হয়ে গেছে। তবে এতে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
ইয়াহু দুজন সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানায়, যুক্তরাষ্ট্র কৌশলগত হমেুজ প্রণালীতে ইরানের যেসব স্পাইং নেটওয়ার্ক জাহাজগুলোকে ট্র্যাক করছে সেগুলোতে সাইবার হামলা চালিয়েছে।

এদিকে আজারারি স্বীকার করেন, ইরানকে সাইবার সন্ত্রাস মোকাবেলা করতে হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি স্টাক্সনেট ও অবরোধের কথ তুলে ধরেন। ২০০৭ সালের নভেম্বরে স্টাক্সনেট ভাইরাসের মাধ্যমে ইরানের পরমাণু কার্যক্রমে হামলা চালানো হয়।
এই ভাইরাসটি সম্পর্কে জানা যায় ২০১০ সালে। সে সময় ইরানের নাতাঞ্জ শহরে একটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রে হামলার পর ধারণা করা হয় যে এটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের তৈরি করা একটি ভাইরাস।
এছাড়াও, ইরানের নৌবাহিনীর একজন কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল হোসাইন খানজাদি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোনটি গুলি করে ভূপাতিত করা ট্রাম্প প্রশাসনের জন্যে একটি ‘চরম সতর্কবার্তা’।
এদিকে ইরানে সাইবার হামলার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র তার দেশে হামলার চেষ্টা করার জন্যে ইরানকে দায়ী করে যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার হামলা ঠেকাতে তেহরান এর নিজস্ব সাইবার সক্ষমতা বাড়িয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আজহারি ইরানের নতুন সাইবার ও ইন্টারনেট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে বলেন, ‘গত বছর আমরা আমাদের জাতীয় ফায়ারওয়াল দেজফা দিয়ে প্রায় ৩ কোটি ৩০ লাখ সাইবার হামলা ঠেকিয়ে দিয়েছি।’
২০১৫ সালে তেহরানের সাথে করা পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরে আসার পর থেকেই বৈরী দেশদুটির মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়।
সূত্র : এএফপি


আরো সংবাদ



premium cement