২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে হামাস ও ইসরাইল

যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে হামাস ও ইসরাইল - সংগৃহীত

প্রায় এক যুগ ধরে দখলদার ইসরাইলের অবরোধের শিকার ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ফের যুদ্ধের আশঙ্কা করেছেন জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। গাজা এখন যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে, এমন হুশিয়ারি উচ্চারণ করে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস এবং ইসরাইলকে ২০১৪ সালের যুদ্ধবিরতি মেনে চলতে তিনি আহ্বান জানিয়েছেন।

গত ৩০ মার্চ থেকে হামাসনিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকায় হারানো ঘরবাড়িতে ফেরার দাবিতে ফিলিস্তিনিরা 'গ্রেট মার্চ অব রিটার্ন' বা ঘরে ফেরার মহান পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু করেছে। এ কর্মসূচি পালনকারীদের ওপর তাজা গুলি ব্যবহার করছে ইসরাইল। এতে এ পর্যন্ত ১৩০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

ইসরাইলের তাজা গুলি ব্যবহারের ঘটনায় জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ইসরাইলের সেনাদের সর্বোচ্চ সংযমের পরিচয় দেয়ার দায়িত্ব রয়েছে। পাশাপাশি হামাসকেও তিনি সংযম দেখানোর আহ্বান জানান।

ফিলিস্তিনিদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে গুলি চালিয়ে নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করছে ইসরাইল। শিশু, নার্স ও সাংবাদিকদেরও তারা রেহাই দিচ্ছে না। এ বিষয়ে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব গুতেরেস বলেন, শিশু হত্যা এবং সুস্পষ্টভাবে চিহ্নিত সাংবাদিক ও নার্স হত্যার ঘটনা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সাংবাদিক ও নার্সদের মৃত্যু অথবা আহত হওয়ার কোনো ভয় ছাড়াই তাদের দায়িত্ব পালন করতে দিতে হবে। এ ছাড়া গাজায় ইসরাইলি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আবারো তদন্তের দাবি জানান জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব। 

নিউইয়র্কে জাতিসঙ্ঘ সদর দফতরে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ফিলিস্তিনে ইসরাইলি হামলার তীব্র সমালোচনা করা হয়। মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রক্রিয়া বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত নিকোলা ম্লাদিনোভ অধিকৃত ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বসতি নির্মাণকে অবৈধ বলে উল্লেখ করেন।

নিকোলা ম্লাদিনোভ, জাতিসঙ্ঘের বিশেষ দূত বলেন, অধিকৃত ফিলিস্তিনে ইসরাইলের বসতি নির্মাণ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। এটা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের ক্ষেত্রেও অন্তরায়। নতুন করে তারা সাড়ে তিন হাজার বসতি নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে কখনোই শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।গেলো কয়েক মাসে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর হামলায় ১৩৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ওই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সব পক্ষকে এখনই কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

এদিকে গাজার ২৫টি সামরিক স্থাপনায় ৪৫টি রকেট ও মর্টারশেল ছুঁড়েছে ইসরাইল। দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে ইসরাইলে রকেট হামলা চালানো হয়েছিল। ওইসব হামলার জবাবেই তারা গাজায় হামলা চালিয়েছে দেশটি। 

ইসরাইলি সেনাবাহিনীকে উদ্ধৃত করে খবরে বলা হয়, মঙ্গলবার থেকে বুধবার পর্যন্ত গাজা থেকে ইসরাইলে ৪৫টি রকেট ও মর্টার শেল ছোড়া হয়েছে। পাল্টা জবাবে বুধবার গাজায় হামাস সংশ্লিষ্ট ২৫টি সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ইসরাইলের হামলায় হামাসের একজন নিরাপত্তাকর্মী আহত হয়েছেন। তবে ইসরাইলের পক্ষ থেকে কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে গাজা ও ইসরাইলের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে গাজার ইসরাইল সংলগ্ন সীমান্তে বিক্ষোভ করে আসছে ফিলিস্তিনিরা। তারা ইসরাইলে তাদের পিতৃপুরুষের ভূমিতে ফিরে যাওয়ার অধিকার চেয়ে বিক্ষোভে নামে। ওই বিক্ষোভে গুলি চালায় ইসরাইলি সেনাবাহিনী।


আরো সংবাদ



premium cement