১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলকদ ১৪৪৫
`


আপিল বিভাগে তিন বিচারপতির শপথ

আদালত
শপথ নিয়েছেন আপিল বিভাগের নতুন তিন বিচারপতি - ফাইল ছবি

শপথ নিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নতুন তিনজন বিচারক। হাইকোর্টের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা বিচারপতি জিনাত আরা, বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী এবং বিচারপতি মো: নূরুজ্জামান এখন থেকে আপিল বিভাগে বিচারিক দায়িত্ব পালন করবেন।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন আজ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে আপিল বিভাগের তিন নতুন সদস্যকে শপথ পড়ান।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাই কোর্ট বিভাগের বিচারকরদের উপস্থিতিতে শপথ অনুষ্ঠানে পরিচালনা করেন রেজিস্ট্রার জেনারেল জাকির হোসেন।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ১১টি বিচারকের পদের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে সাতটি পদ শূন্য ছিল। নতুন তিনজন নিয়োগ করায় বর্তমানে সুপ্রিম কোর্র্টের আপিল বিভাগে বিচারকের সংখ্যা হলো ৭ জন।

জ্যেষ্ঠতা অনুসরণ না করেই হাইকোর্ট থেকে নতুন তিনজন বিচারককে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। হাইকোর্টের জ্যেষ্ঠতার ক্রমে চতুর্থ অবস্থানে থাকা বিচারপতি জিনাত আরা হলেন দ্বিতীয় নারী, যিনি দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বিচারিক দায়িত্ব পেলেন। অপর দু’জন বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো: নূরুজ্জামান সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকদের তালিকায় তারা যথাক্রমে ২৫ ও ২৬তম ক্রমে ছিলেন।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ আপিল বিভাগে চারজন বিচারপতি দীর্ঘ দিন ধরে বিচারকার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। আপিল বিভাগে বিচারক স্বল্পতার কারণে তিনটির মধ্যে দু’টি বেঞ্চ (কোর্ট) দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে একটি বেঞ্চে বিচারকাজ চলছে। শূন্য পদে নতুন কোনো বিচারক নিয়োগ দেয়া হয়নি। এর ফলে আপিল বিভাগে মামলাজটও বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে আপিল বিভাগে ১৬ হাজার ৫৫৬টি মামলা বিচারাধীন আছে বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র উল্লেখ করেছে।

জানা গেছে, ২০০৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ১১ জন বিচারপতি কর্মরত ছিলেন। দু’জন অবসরের পর ২০১৭ সালে এ সংখ্যা নেমে আসে ৯ জনে। আবার একই বছরের ১ জানুয়ারি বিচারপতি বজলুর রহমান ছানার মৃত্যুর পর আপিল বিভাগে এ সংখ্যা নেমে আসে আটজনে। একই বছরের ১৪ মার্চ বিচারপতি মো: নিজামুল হক নাসিম ও ৬ জুলাই বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা অবসরে যাওয়ার পর এ সংখ্যা ছয়জনে নেমে আসে।

একই বছরের শেষ দিকে অর্থাৎ নভেম্বরে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এবং চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি মো: আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা পদত্যাগ করেন। এরপর আপিল বিভাগে বিচারক সঙ্কট চরম আকার ধারণ করে। সে থেকেই চার বিচারপতি একটি বেঞ্চেই বিচারকার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ২০১৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগে তিনজন বিচারক নিয়োগ দেয়া হয়েছিল।

এ দিকে ২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্টের এক বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী দেখা যায়, ১৯৭২ সালে তিনজন, পরের বছর ১৯৭৩ সালে চারজন ও পরে একই বছরে এ সংখ্যা পাঁচজনে উন্নীত হয়। পরে ১৯৭৮ সালে আবার চারজনে নেমে আসে এবং ১৯৯৫ সালে ছিলেন চারজন।

শুধু আপিল বিভাগেই নয়, হাইকোর্ট বিভাগেও বিচারক স্বল্পতা দেখা দেয়ায় গত ৩০ মে হাইকোর্ট বিভাগে ১৮ জন বিচারক নিয়োগ দেয়া হয়। হাইকোর্ট বিভাগে নতুন নিয়োগ পাওয়া ১৮ জনসহ বর্তমানে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৮ জনে।

নিয়োগ পাওয়া নতুন তিন বিচারকের পরিচিতি : হাইকোর্টের জ্যেষ্ঠতার ক্রমে চতুর্থ অবস্থানে থাকা বিচারপতি জিনাত আরা হলেন দ্বিতীয় নারী, যিনি দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বিচারিক দায়িত্ব পেলেন। তার আগে বাংলাদেশের প্রথম নারী বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের জুলাই পর্যন্ত আপিল বিভাগে দায়িত্ব পালন করেন।

বিএসসি ও আইন পাস করে ১৯৭৮ সালে মুন্সেফ হিসেবে বিচার বিভাগে দায়িত্ব পালন শুরু করেন জিনাত আরা। ১৯৯৫ সালে পদোন্নতি পেয়ে জেলা ও দায়রা জজ হন।

২০০৩ সালের ২৭ এপ্রিল হাইকোর্টে অস্থায়ী বিচারক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার দুই বছর পর স্থায়ী হন তিনি। ১৯৫৩ সালের ১৫ মার্চ জন্মগ্রহণ করা বিচারপতি জিনাত আরা অবসরের বয়সসীমা অনুযায়ী আরো দুই বছর সর্বোচ্চ আদালতের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।

বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো: নূরুজ্জামান ২০০৯ সালের ৩০ জুন একই সাথে হাইকোর্টে অস্থায়ী বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান এবং দুই বছরের মাথায় স্থায়ী হন। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকদের তালিকায় তারা যথাক্রমে ২৫ ও ২৬তম ক্রমে ছিলেন। ১৯৫৪ সালের ২৯ জুলাই জন্মগ্রহণ করা আবু বকর সিদ্দিকীর ছোট ভাই হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারক।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনের ডিগ্রি নেয়ার পর ১৯৭৯ সালে কুষ্টিয়া বারে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন আবু বকর সিদ্দিকী। পরের বছর মুন্সেফ হিসেবে বিচার বিভাগের চাকরিতে যোগ দেন এবং ১৯৯৭ সালে জেলা ও দায়রা জজ হন। এর এক যুগ পর তিনি ডাক পান হাইকোর্টে।

বিচারপতি মো: নূরুজ্জামানের জন্ম ১৯৫৬ সালে। একাত্তরে তিনি সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ এলাকায় সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। মাস্টার্স ও এলএলবি ডিগ্রি নেয়ার পর আইন পেশায় যোগ দেন মো: নূরুজ্জামান। ১৯৮৩ সলে জেলা আদালত ও১৯৮৭ সালে হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২০০৯ সালে তিনি বিচারক হিসেবে যোগ দেন হাইকোর্টে।


আরো সংবাদ



premium cement
গাজার রাফাহ সীমান্ত কেন এত গুরুত্বপূর্ণ? মুসলিম নেতা ওয়াইসির টক্কর নিতে হায়দরাবাদে হিন্দুত্বের মাধবীলতা সংস্কৃতিতে আরো বেশি শ্রম-মেধা বিনিয়োগ করতে হবে : তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী পঞ্চগড়ে বিএসএফের গুলিতে নিহত ২ বাংলাদেশীর লাশ হস্তান্তর কালীগঞ্জে আম পাড়তে গিয়ে কিশোরের মৃত্যু ‘নুসুক’ কার্ডধারী ছাড়া অন্য কারো মাশায়েরে মুকাদ্দাসায় প্রবেশ নিষিদ্ধ বোলারদের নৈপুণ্যে কষ্টার্জিত জয় বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে ইসলামের সঠিক দাওয়াত পৌঁছাতে হবে : মোবারক হোসাইন নাঙ্গলকোটে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকা তরুণীর অনশন, পলাতক প্রেমিক চার উইকেট নেই জিম্বাবুয়ের বরিশাল অঞ্চল জামায়াতের উপজেলা আমির সম্মেলন অনুষ্ঠিত

সকল