২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`
এজাহার বদলের অভিযোগ

পুঠিয়ার ওসির বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ

-

রাজশাহীর পুঠিয়া থানার ওসি শাকিল উদ্দিন আহমেদ বাপ্পির বিরুদ্ধে শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার এজাহার বদলে ফেলার অভিযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রাজশাহীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে ওই অভিযোগ তদন্ত করে আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ওই ওসিকে কেন সাময়িক বরখাস্ত করা হবে না, তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এবং ওসির বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, এ মর্মে রুল জারি করেছেন আদালত। স্বরাষ্ট্র সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি), রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) ও পুঠিয়া থানার ওসি শাকিল উদ্দিন আহম্মেদসহ সাতজনকে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
নিহত নুরুল ইসলামের মেয়ে নিগার সুলতানার করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো: খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ গতকাল সোমবার এ আদেশ দেন।
রিট আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়–য়া ও ব্যারিস্টার আবু বকর সিদ্দিক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত।
আইনজীবী আদালতকে জানান, গত ২৪ এপ্রিল পুঠিয়া সড়ক পরিবহন মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে নুরুল ইসলাম ও আব্দুর রহমান পটল সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন। নির্বাচনে পটলকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এই ফলাফল বাতিল চেয়ে নুরুল ইসলামসহ তিনজন রাজশাহী আদালতে মামলা করেন। এই মামলার বিরোধের জের ধরে গত ১০ জুন নিখোঁজ হন নুরুল ইসলাম। পরদিন সকালে পুঠিয়ার কাঁঠালবাড়িয়া এলাকার ‘এসএস ব্রিক ফিল্ড’ নামক ইটভাটা থেকে নুরুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে নিগার সুলতানা থানায় এজাহার দাখিল করেন। এজাহারে পুঠিয়া সড়ক পরিবহন মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচনের ফল পাল্টে দেয়ার সাথে ওসি শাকিল উদ্দিনের সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করা হয়। এটা দেখার পর নিগার সুলতানার এজাহার গ্রহণ না করে ওসির সম্পৃক্ততার কথা বাদ দিয়ে এজাহার সংশোধন করতে বলা হয়। থানার কথা মতো নিগার সুলতানা ওসির নাম বাদ দিয়ে মূল হত্যাকারী হিসেবে আব্দুর রহমান পটলসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে এজাহার দাখিল করেন। পরে ওই রাতে নিগার সুলতানাকে থানায় ডেকে নিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে দেয়। এরপর কয়েকদিন থানা থেকে কোনো তৎপরতা না দেখে নিহতের স্ত্রী সাজেদা বেগম পুঠিয়া উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নালিশি মামলা করেন। এই মামলাকে এজাহার হিসেবে গণ্য করার নির্দেশনা চাওয়া হয়। এ সময় পুঠিয়া থানা থেকে নিগার সুলতানার স্বাক্সর করা একটি এজাহার হাজির করে থানা পুলিশ। তাতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি দেখানো হয়। এই এজাহারের বিষয়ে তখনই নিগার সুলতানা ও তার মা সাজেদা বেগম আপত্তি জানিয়ে বলেন, এই এজাহার তাদের নয়। পরবর্তীতে নিহত নুরুল ইসলামের পরিবারের পক্ষ থেকে গত ১৮ জুলাই আইজি, রাজশাহী রেঞ্জের পুলিশের ডিআইজি ও রাজশাহীর এসপির কাছে এজাহার বদলে ফেলার অভিযোগ দাখিল করে। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি। এ অবস্থায় হাইকোর্টে রিট করা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement