তিন বছরে ঝরে গেল সাড়ে ৬ লাখের বেশি শিক্ষার্থী
৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে প্রবেশ বাধ্যতামূলক ; ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সব কোচিং সেন্টার বন্ধ, না মানলে শাস্তি ; প্রশ্নফাঁসের চেষ্টাকারীরা রেহাই পাবে না : শিক্ষামন্ত্রী ; পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ছাড়া কেন্দ্রে প্রবেশ করলে ব্যবস্থা- আমানুর রহমান
- ৩০ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০
পরশু বৃহস্পতিবার থেকে সারা দেশে একযোগে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। শেষ হবে ১৫ নভেম্বর। এবার যেসব শিক্ষার্থী জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে, তারা ২০১৫ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিল। সে বছর ডিসেম্বরে প্রকাশিত ওই দুই পরীক্ষার ফলে মোট ৩০ লাখ ৪৮ হাজার ৫৪৪ জন (প্রাথমিকে ২৭ লাখ ৯৭ হাজার ২৭৪ জন) এবং (ইবতেদায়িতে ২ লাখ ৫১ হাজার ২৭০ জন) উত্তীর্ণ হয়েছিল। তারাই এবারের (২০১৮) জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। শিক্ষা বোর্ডগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, তিন বছর পর এবার নি¤œমাধ্যমিক স্তরের আরেকটি পাবলিক পরীক্ষায় (জেএসসি-জেডিসি) অংশ নিচ্ছে ২৩ লাখ ৮৯ হাজার ৩৬২ জন শিক্ষার্থী। অবশিষ্ট ৬ লাখ ৫৯ হাজার ১৮২ জন শিক্ষার্থী কোথায় এর কোনো তথ্য শিক্ষা বোর্ডগুলো জানাতে পারেনি। এর কোনো ব্যাখ্যাও দেয়া হয়নি। তবে এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে, ঝরে পড়া রোধে সরকারের বিগত বছরগুলোর পদক্ষেপ ও কার্যক্রমের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, গত দশ বছর আগে ঝরে পড়াই ছিল বড় সমস্যা। ৫ম শ্রেণীর আগেই ৪৮ শতাংশ ঝরে পড়ত। এখন সব শিক্ষার্থীর মাঝে বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ, ৫ম-এ সমাপনী ও ৮ম শ্রেণীতে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার পর সনদ প্রদান, সব শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির আওতায় আনা এবং নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা ভবন নির্মাণসহ শিক্ষাকে আকর্ষণীয় করার ফলে ঝরে পড়ার হার কমেছে।
এ দিকে, আগামী ১ নভেম্বর জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা শুরুর আগে গত ২৮ অক্টোবর থেকে সারা দেশে সব কোচিং সেন্টার বন্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ নির্দেশনা বলবৎ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, এসব কোচিং সেন্টার থেকেই প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সব বিভাগ থেকে এ সুপারিশ করা হয়েছে এবং এখন তারাই দেশের সব কোচিং সেন্টারকে নজরদারির আওতায় এনেছে। এ নজরদারি অব্যাহত থাকবে পরীক্ষার শেষ দিন পর্যন্ত। কেউ এ নির্দেশনা অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা ও শাস্তির আওতায় আনা হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শুধু নয়, পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের নিরাপত্তার জন্য শিক্ষাসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ৫টি মন্ত্রণালয় জড়িত। এখন কেউ প্রশ্নফাঁসের চেষ্টা করলে রেহাই পাবে না। অতীতে যারা প্রশ্নফাঁসের অপচেষ্টা করেছে, তাদের প্রায় সবাইকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। অন্যরাও এখন গোয়েন্দা নজরদারিতে। কেউ রেহাই পাচ্ছে না।
গতকাল বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আসন্ন জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা উপলক্ষে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সাংবাদ সম্মেলনে জানান, এবারের পরীক্ষায় ২৬ লাখ ৭০ হাজার ৩৩৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে জেএসসিতে ২২ লাখ ৬৭ হাজার ৩৪৩ জন এবং জেডিসিতে ৪ লাখ ২ হাজার ৯৯০ জন। এর মধ্যে নিয়মিত হচ্ছে ২৩ লাখ ৮৯ হাজার ৩৬২ জন। অনিয়মিত (যারা আগের বছর পাস করেনি) হচ্ছে, ২ লাখ ৮০ হাজার ৫৪৮ জন। এ ছাড়া এবারের পরীক্ষায় উভয় স্তরে (সাধারণ ও মাদরাসায়) ছাত্রের চেয়ে ছাত্রীসংখ্যা ২ লাখ ২২ হাজার ৮৬৯ জন বেশি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে বলা হয়েছে,পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসরোধের অংশ হিসেবে পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। কোনো পরীক্ষার্থী একাধিক দিন বিলম্বে প্রবেশ করলে তার সম্পর্কে শিক্ষা বোর্ডকে অবহিত করতে হবে।
এ দিকে শিক্ষা বোর্ডগুলো সূত্রে জানা গেছে, এবার পরীক্ষা চলাকালে ও এর আগে বা পরে পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট নন এমন কেউ কেন্দ্রে প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রে অননুমোদিত ব্যক্তিবর্গ প্রবেশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কেন্দ্র পরিদর্শনে বিশেষ টিম সক্রিয় থাকবে। কেন্দ্রের ২ শ’ গজের মধ্যে কোনো জটলা করতে দেয়া হবে না। পুলিশকে সে ব্যাপারে নির্দেশনা ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ কেন্দ্রের ২ শ’ গজের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। এ ২ শ’ গজের মধ্যে শিক্ষক-কর্মচারী, ছাত্রছাত্রী বা অভিভাবকদের মোবাইল, মোবাইল ফোনের সুবিধাসহ ঘড়ি-কলম এবং কোনো ধরনের ইলেকট্রনিকস ডিভাইস ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে।
এ ছাড়াও পরীক্ষাকেন্দ্রের প্রবেশমুখে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। রাজধানীর প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে এবং জেলা শহরের বড় স্কুলের কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা সক্রিয় থাকবে। কেন্দ্রের ভেতর থেকে এসব সিসি ক্যামেরা মনিটরিং করা হবে। শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, এবারের জেএসসি-জেডিসিতে পরীক্ষার্থীকে বাংলা দ্বিতীয় পত্র ও ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র ছাড়া সব বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে হবে। তাদের ৭টি বিষয়ে ৬৫০ নম্বরের পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা এবং চারু ও কারুকলা, কৃষি শিক্ষা, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান, সংস্কৃত ও পালি বিষয়গুলো ধারাবাহিক মূল্যায়ন করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে সচিব ও বোর্ড চেয়ারম্যানগণসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা