২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জিন, ভূত পরীর বাতাসে মানসিক রোগ?

জিন, ভূত পরীর বাতাসে মানসিক রোগ? - ছবি : সংগৃহীত

আমাদের সমাজে আছর বা কুপ্রভাব থেকে মানসিক রোগ হয়েছে, এই অজুহাতে দিনের পর দিন শারীরিক অনেক নির্যাতন করা হতো এবং এখনো হচ্ছে রোগীর ওপর। তাই এ প্রথা পরিবর্তনের জন্য মানুষকে সুশিক্ষিত হতে হবে

জ্বর, কাশি, ঠাণ্ডা লাগা, মাথাব্যথা, বুকব্যথা ইত্যাদি শারীরিক সমস্যা হঠাৎই শুরু হয়। আবার চিকিৎসা নিলে কিছুদিন পর ভালো হয়ে যায়। মানসিক রোগগুলোর ক্ষেত্রেও এ কথা সত্য। এটিও সাময়িক একটি অবস্থা, যা চিকিৎসা নিলে ভালো হয়ে যায়। মূলত মানসিক রোগগুলোর কারণ হিসেবে তার দৈহিক, মনোস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক সমস্যা দায়ী। জিন, ভূত বা পরীর আছর থেকে এই রোগ ঘটে না।

কোনো মানুষের হঠাৎ অস্বাভাবিক আচরণের ব্যাখ্যায় মানুষ নিজের মনগড়া নানা যুক্তি দেখিয়েছেন। আমাদের সমাজে আছর বা কুপ্রভাব থেকে মানসিক রোগ হয়েছে, এই অজুহাতে দিনের পর দিন শারীরিক অনেক নির্যাতন করা হতো এবং এখনো হচ্ছে রোগীর ওপর। তাই এ প্রথা পরিবর্তনের জন্য মানুষকে সুশিক্ষিত হতে হবে। মনে রাখতে হবে, মানসিক রোগ শারীরিক সমস্যার মতোই। এরও চিকিৎসা রয়েছে। তবে কিছু পার্থক্য রয়েছে। যেমন- রক্ত পরীক্ষা বা বায়োপসি করলে ক্যান্সার ধরা পড়ে। ইসিজি বা ইকোকার্ডিওগ্রাম করলে হৃদরোগ ধরা পড়ে। কিন্তু মনোরোগ নির্ণয়ের জন্য এ ধরনের কোনো নির্দিষ্ট পরীক্ষা তেমন নেই। তবে না থাকলেও গুচ্ছ উপসর্গের মাধ্যমে চিকিৎসকেরা এই রোগ ধরতে পারেন। কোনো মনোরোগকেই অবহেলা করবেন না। কারণ এ থেকে রোগী আত্মহত্যার মতো মৃত্যু ঝুঁকিও নিতে পারে।

লেখক : অধ্যাপক, মনোরোগ ও মাদকাসক্তি চিকিৎসক বিশেষজ্ঞ, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট।

কামরাঙ্গা কিডনি বিকল করে
ডা: রুমানা চৌধুরী
কামরাঙ্গা কাঁচা টক অবস্থায় যেমন সুস্বাদু, তেমনি পাকা মিষ্টি অবস্থায়ও অনেক উপাদেয়। প্রাক ঐতিহাসিক যুগ থেকে কামরাঙ্গা বেশ জনপ্রিয় ফল।
কিন্তু অতি সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গেছে, কামরাঙ্গা বা কামরাঙ্গার রস খাওয়ার পর কিডনি বিকল হয়ে পড়ে।

কামরাঙ্গা বা তার রস মানুষ কী কারণে খায়? সাধারণত ফল হিসেবে কাঁচা বা পাকা কামরাঙ্গা বেশ জনপ্রিয়। শুধু বাংলাদেশ নয়, এশিয়ার অনেক দেশে ডায়াবেটিসসহ আরো কিছু রোগের চিকিৎসায় প্রচুর কামরাঙ্গার রস একসাথে অথবা প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে অনেক দিন ধরে পান করে থাকে।
কামরাঙ্গায় রয়েছে নানা পুষ্টিগুণ। এ ছাড়াও রয়েছে দু’টি বিশেষ উপাদান। যেমন-
১. অক্সালিক অ্যাসিড।
২. ক্যারাম্বক্সিন।

অক্সালিক অ্যাসিড, টক অবস্থায় মিষ্টি অবস্থার চেয়ে বেশি থাকে।
কামরাঙ্গা কিভাবে ক্ষতি করে?
সাধারণত যাদের কিডনি ভালো, স্বাভাবিক পরিমাণে কামরাঙ্গা খেলে তাদের কোনো ক্ষতি হয় না। তবে এরা যদি অত্যধিক কামরাঙ্গা বা রস অথবা নির্দিষ্ট পরিমাণে অনেক দিন গ্রহণ করে, তা হলে শরীরে অতিমাত্রায় অক্সালিক অ্যাসিড জমে গিয়ে অক্সালেট নেফ্রোপ্যাথি হয়ে কিডনি বিকল হতে পারে।
তা ছাড়া যাদের কিডনি সমস্যা রয়েছে, তারা যদি অল্প পরিমাণ কামরাঙ্গা বা রস যেমন- একটি বা কয়েক টুকরা কামরাঙ্গা খেলেই কিডনি বিকল হয়ে যায়।

অন্য দিকে যাদের ক্রনিক কিডনি ডিজিজ বা ক্রনিক কিডনি ফেইলিউর রয়েছে, তারা কামরাঙ্গা খেলে অজ্ঞান পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। এ অবস্থায় মানুষের মৃত্যুর হার বেশি। আগে মনে করা হতো, কিডনি ফেইলিউরের মাত্রা বাড়ার কারণে এ অবস্থা হয়। কিন্তু পরবর্তীকালে দেখা গেছে, কামরাঙ্গার ক্যারাম্বক্সিন নামক উপাদানের জন্য এ অবস্থা হয়। তা হলে কামরাঙ্গা কী একদম খাওয়া যাবে না? আসলে তা নয়, যাদের কিডনি ভালো তারা স্বাভাবিক পরিমাণ কামরাঙ্গা খেতে পারবেন। অত্যধিক পরিমাণে কামরাঙ্গা খাওয়া এবং যাদের কিডনি সমস্যা আছে তারা কামরাঙ্গা বা এর রস পান থেকে পুরোপুরি বিরত থাকবেন।
প্রাকৃতিক বা গাছ-গাছড়া থেকে উৎপন্ন এমনও ওষুধ আছে, যার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে কেউ কিছুই জানেন না, তা সেবন আপনার মৃত্যুর কারণও হতে পারে। তাই উদ্ভিদ ওষুধ সবসময় নিরাপদ ভাবার উপায় নেই।

 


আরো সংবাদ



premium cement