যেহেতু অ্যাসপিরিন শুধু পেইনকিলার বা ব্যথানাশক ওষুধ নয়, এটা প্রদাহবিরোধী ওষুধও বটেÑ তাই বলা হয় এটা আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় ভালো কাজ করে। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস ও অস্টিও আর্থ্রাইটিসসহ বিভিন্ন ধরনের আর্থ্রাইটিসের ক্ষেত্রে এনএসএআইডি হলো প্রথম সারির চিকিৎসা, আর এসব ওষুধের মধ্যে অ্যাসপিরিনকেই সচরাচর নির্বাচন করা হয়। অ্যাসপিরিন গ্রহণ করেন এমন আর্থ্রাইটিসের বহু রোগী বলেন, অ্যাসপিরিন সেবনে তাদের অস্থিসন্ধির ব্যথা ও ফোলা কমে গেছে। তা ছাড়া আর্থ্রাইটিসের অন্যান্য ওষুধের তুলনায় অ্যাসপিরিন খুব কমদামি একটি ওষুধ।
কত দিন অ্যাসপিরিন সেবন করবেন
যদিও প্রেসক্রেপশিন ছাড়াই অ্যাসপিরিন পর্যাপ্ত পাওয়া যায়, তবু আপনার উপসর্গ নিয়ন্ত্রণের জন্য কী পরিমাণ অ্যাসপিরিন গ্রহণ করবেন সেটার ব্যাপারে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে নেয়াটা জরুরি। যদি আপনি বেশি পরিমাণ অ্যাসপিরিন গ্রহণ করেন তাহলে অনেক সমস্যায় পড়বেন যেমন- কান ঝিনঝিন করা, শরীরে পানি জমা, এমনকি অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হওয়া। অস্টিও আর্থ্রাইটিসের রোগীদের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে কেবল সামান্য পরিমাণ অ্যাসপিরিনের প্রয়োজন হতে পারে, অথবা তাদের আদৌ এনএসএ আইডির প্রয়োজন নাও হতে পারে।
অন্য দিকে, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের রোগীদের অস্থিসন্ধির প্রদাহের উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে বেশি পরিমাণ অ্যাসপিরিন সেবনের প্রয়োজন হয়। চিকিৎসক রোগীকে দৈনিক তিনটা বা চারটা আদর্শ অ্যাসপিরিন আহারের সাথে এবং রাতে শোয়ার সময় হালকা নাশতার সাথে মোট চারবার গ্রহণ করার পরামর্শ দিতে পারেন। আদর্শ ট্যাবলেটে থাকে ৩২৫ মিলিগ্রাম অ্যাসপিরিন। অতিরিক্ত শক্তির অথবা আর্থ্রাইটিসের জন্য ট্যাবলেটে সাধারণত ৫০০ মিলিগ্রাম অ্যাসপিরিন থাকে। আপনার জন্য কতটুকু মাত্রা প্রযোজ্য সেটা আপনার চিকিৎসক নির্ধারণ করে দেবেন।
কোন ধরনের অ্যাসপিরিন গ্রহণ করা ভালো
অ্যাসপিরিন কয়েক ধরনের পাওয়া যায়। বাফারড ও এনটারিক কোটেডÑ এগুলো গ্রহণের অনেক সুবিধা রয়েছে এবং এসব ধরনের জন্য বড় ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুব কম ঘটে যেমন পাকস্থলীর সমস্যা ও আলসার। যেসব রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের রোগী বেশি মাত্রায় অ্যাসপিরিন গ্রহণ করেন তাদের এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বেশি ঘটে।
বাফারড অ্যাসপিরিনে থাকে অ্যান্টাসিডের মতো উপাদান যা পাকস্থলীর জ্বালাপোড়া ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াকে কমিয়ে দেয়। বিশেষ প্রলেপ যুক্ত (যাকে বলে এন্টারিক কোটেড) অ্যাসপিরিন দ্রবীভূত হয় কেবল সেটা যখন ুদ্রান্ত্রে প্রবেশ করে, তাই বিশেষ প্রলেপ অ্যাসপিরিনির সরাসরি সংস্পর্শ থেকে আপনার পাকস্থলীকে রক্ষা করে। সল্যুবল (অথবা ডিসপারসিবল) অ্যাসপিরিন হলো সাইট্রিক অ্যাসিড ও ক্যালসিয়াম কার্বোনেটসহ (চক) অ্যাসপিরিনের মিশ্রণ। পানিতে সাইট্রিক অ্যাসিড চকের সাথে ক্রিয়া করে ক্যালসিয়ামসাইট্রেট তৈরি করে, এবং এটা অ্যাসপিরিনকে দ্রবীভূত করে বা গলিয়ে দেয়। অ্যাসপিরিনের এসব কোনো ধরনই মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে সম্পূর্ণ সুরক্ষা দেয় না। অ্যাসপিরিনের সব ধরন বাজারে পাওয়া যায়। এন্টারিক কোটেড অ্যাসপিরিনের দাম তুলনামূলক কম। তা ছাড়া এটি পাকস্থলীকে কম উত্তেজিত করে। আর হ্যাঁ, একটি কথা মনে রাখবেনÑ বোতলের অ্যাসপিরিন সর্বদা শুষ্ক ও ঠাণ্ডা স্থানে রাখবেনÑ কখনোই আপনার বাথরুমে রাখবেন না!
পুরনো ফর্মুলার অ্যাসপিরিন পরিহার করবেন। এটি শক্ত, অদ্রবনীয় ট্যাবলেটÑ যা সহজে ভাঙে না। এটি আপনার পাকস্থলীর আবরণকে খুব উত্তেজিত ও ধ্বংস করতে পারে।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, অর্থোপেডিকস ও ট্রমা বিভাগ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। চেম্বার : পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লি., ২, ইংলিশ রোড, ঢাকা। ফোন: ০১৭১৬২৮৮৮৫৫
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা