২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বাহরাইনের জালে বাংলাদেশের ১০ গোল

বাহরাইনের জালে বাংলাদেশের ১০ গোল। ছবি - নয়া দিগন্ত।

এবারের এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ মহিলা ফুটবল বাছাই পর্বের ফরমেট ভিন্ন। শুধু ছয় গ্রুপের চ্যাম্পিয়নরাই দ্বিতীয় রাউন্ডে যাবে না। এই গ্রুপ গুলোর সেরা দুই রানার্সআপ দলও খেলার সুযোগ পাবে পরের রাউন্ডে। এতে পয়েন্টে সাথে বিবেচনায় আসবে গোল পার্থক্যও। এই গোল আবার ভাগ্য নির্ধারনী হতে পাবে গ্রুপ চ্যাম্পিয়নশিপ নির্ধারনের ক্ষেত্রেও। ‘এফ’ গ্রুপে পাঁচ দলের মধ্যে দুই দল বেশ দুর্বল। ফলে তাদেরকে গোল বন্যায় ভাসিয়ে গ্রুপ সেরার দৌড়ে স্বাগতিক বাংলাদেশ , লেবানন এবং ভিয়েতনাম। কাল বাংলাদেশ তাদের প্রথম ম্যাচেই সেই গোল উৎসব করেছে বাহরাইনের বিপক্ষে। তবে ম্যাচ শেষে মনে হলো ১০ গোল যথেষ্ট হয়নি। এই স্কোর লাইন আরও বেশী হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু গোল মিস এবং বাংলাদেশ দলের চারটি গোল বাতিল হওয়ায় ১০ গোলেই সন্তুষ্ট থাকতে হলো গোলাম রাব্বানী ছোটনের দলকে। আগামী কাল তাদের দ্বিতীয় গোল শক্তিশালী লেবাননের বিপক্ষে। টানা দুই ম্যাচ জিতে এবং দুই খেলায় ১৪ গোল দিয়ে আপাতত গ্রুপের শীর্ষে লেবানন। কাল তারা দিনের প্রথম ম্যাচে ৬-৩ গোলে পরাজিত করে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে।

কমলাপুর স্টেডিয়ামে গতকাল এই আসরের গতবারের চূড়ান্ত পর্বে যাওয়া বাংলাদেশ শুরু থেকে চড়াও হয়ে খেলতে থাকে। অন্য দিকে আরেকটি বড় হার এড়াতে প্রথম থেকে রক্ষন কাজে ব্যস্ত বাহরাইন। তাতেও অবশ্য গোলের জন্য বেশীক্ষন অপেক্ষা করতে হয়নি লাল সবুজ মেয়েদের। যময ছোট বোন আনু চিং মুগিনি ৯ মিনিটে ফাঁকা গোল মিস করলেও ১২ মিনিটে তার দুই মিনিটের বড় বোন আনাই মগিনির গোল বাংলাদেশ দলের লিড। আনাইয়ের ক্রসে পরাস্ত বাহরাইনরে স্থুলকায় কিপার জাহরা নেজার আলী। বল চলে যায় জালে। এরপরই শুরু হয় অনূর্ধ্ব- ১৫ সাফ রানার্সআপদের গোল উৎসব। বিপক্ষ গোল রক্ষকের হাওয়ায় ভাসানো বলের দূবর্লতার সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশ দলও দূর থেকে পোস্টে শট নিতে থাকে। আর এভাবেই বৃদ্ধি পেতে থাকে স্কোর লাইন। ১৬ মিনিটে অধিনায়ক মারিয়া মান্ডার বক্সের বাইরে থেকে নেয়া শটে কাবু বাহরাইনের শেষ প্রহরী। ১৯ মিনিটে অবশ্য স্বাগতিকদের তৃতীয় গোল পরিকল্পিত আক্রমনের ফসল। আনাই মগিনির ক্রসে ছোট শামসুন্নহারের পা ছোঁয়া বলে আনু চিংয়ের শটে গোল। ৩৫মিনিটে ফের গোলের দেখা বাংলাদেশ দলের। এবারও গোল দাতা স্ট্রাইকার আনু চিং। রিতু পূর্না চাকমরা শট হাত ফসকে বের হয়ে যায় বাহরাইনের কিপারের। সামনে থাকা আনু চিং ডান পায়ের প্লেসিং শটে সারেন আনুষ্ঠনিকতা। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে লালসবুজদের স্কোর লাইন ৫-০তে উন্নীত হয়। রাইট উইং ব্যাক আনাই মগিনির ক্রসে ছোট শামসুন্নহারের হেডে খুশী মনে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ দল।

আগের ম্যাচে লেবাননেন কাছে ৮-০তে হারা বাহরাইন বিরতরি পরও ছন্ন ছাড়া ভাব। অবশ্য ৫৮ মিনিটে ১০ জনে পরিণত হওয়ার পর তাদের বিপেক্ষ দু’টির বেশী গোল করতে না পরাটা বাংলাদেশ দলের ব্যর্থতাই। সবাই গোল করার জন্য মরিয়া হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ১০টির বেশী গোল হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধে কোচ ছোটন মাঠ থেকে তুলে নেন আনু চিংকে । ফলে তার হ্যাটট্রিকের সুযোগ নস্ট। তবে তার বদলী সাজেদা ৫৫ মিনিটে বাংলাদেশের গোল সংখ্যা ৬ এ উন্নীত করেন। ডিফেন্ডার আঁখি খাতুনের লব থেকে বল পেয়ে একা কিপারকে পরাস্ত করেন তিনি। এই আঁখি খাতুনের লবেই ৫৬ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোল ছোট শামসুন্নাহারের।

৫৮ মিনিটে বাংলাদেশ দলের পেনাল্টি লাভ এবং ১০ জনে পরিণত হওয়া বাহরাইন দলের। লাল-সবুজদের ছোট শামসুন্নাহারকে বক্সে ফাউল করেন ডানা বাসেম। ফলে উজকেব রেফারী পেনাল্টর নির্দেশ দেন এবং দ্বিতীয় হলুদকার্ড দেখিয়ে বহিস্কার করেন ডানা বামেসকে। এই স্পট কিক থেকে গোল বড় শামসুন্নাহরের। ৭২ মিনিটে মারিয়া মান্ডা নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ডান পায়ের শটে। এর পর ৮৩ মিনিটে গোলের দেখা তহুরা খাতুনের। আর্ন্তজাতিক ম্যাচে এটি তহুরার ৩০ তম গোল।

সারা ম্যাচে বাহরাইনের ফুটবলারা একবারের জন্যও পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি বাংলাদেশ কিপার রূপনা চাকমাকে। বরং তারা গরমের কারনে বারবার ইনজুরিতে পড়তে থাকেন। এজন্য বারবার ডাক্তারকে মাঠে প্রবেশ করতে হয়েছে। ম্যাচে বাংলাদেশের তিনটি গোল অফসাইডের জন্য এবং একটি গোল হ্যান্ডবলের জন্য বাতিল হয়।


আরো সংবাদ



premium cement